মৃত্যুর স্মরণই পরকালে সফলতা লাভের উপায়
দুনিয়া আখেরাতের শষ্যক্ষেত্র। দুনিয়ার প্রতিটি কাজেরই হিসাব দিতে হবে পরকালে। তাই দুনিয়া যাতে মানুষকে পরকাল সম্পর্কে গাফেল করে না ফেলে, সে জন্য বেশি বেশি মৃত্যুর স্মরণ করতে হবে।
কুরআন এবং হাদিসে পরকালের সফলতা ও ব্যর্থতা সম্পর্কে অনেক সতর্কতা ও সফলতার কথা বর্ণিত রয়েছে। এ সতর্কতা হলো- মৃত্যুর কথা স্মরণই মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিধিকে সীমিত করে ফেলে। যার ফলে মানুষ পরকালে সফলতা লাভ করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি ব্যক্তিকেই শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন প্রত্যেকেই নিজ নিজ কর্মফল পুরোপুরি লাভ করবে। তবে সফল হবে সে সব ব্যক্তি, যারা জাহান্নামের আগুণ থেকে মুক্তি পাবে এবং যাদেরকে জান্নাত দাখিল করা হবে। প্রকৃতপক্ষে এ দুনিয়া প্রতারণাময় একটি বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)
সুতরাং দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবনকে প্রাধান্য দেয়া যাবে না। পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সফলতা লাভে সব সময় মৃত্যুর স্মরণকেই অন্তরে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তবেই পরকালীন জীবন হবে সফল।
দুনিয়ার জীবনের বসবাস ও মৃত্যুর স্মরণ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার বাহুমূল আকড়ে ধরে বললেন, ‘দুনিয়ায় (জীবন) এমনভাবে কাটাও, যেন তুমি একজন পথিক বা মুসাফির।
ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রায়ই বলতেন, ‘তুমি যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও, তখন সকালের জন্য অপেক্ষা করো না। আর যখন সকাল হয়ে যায়, তখন সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগ-ব্যাধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো। আর জীবিত থাকাকালে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।’ (বুখারি)
পরিশেষে...
কুরআনের কথা তুলে ধরতে চাই, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ধন-মাল ও তোমাদের সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল করে না দেয়। যারা এ রকম করবে (পরিণামে) তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তোমাদের কারো মৃত্যুর সময় এসে উপনীত হওয়ার আগেই আমি তোমাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করো।’ (সুরা মুনাফেকুন : আয়াত ৯-১০)
সর্বোপরি মৃত্যুর স্মরণই মানুষকে পরকালে সফলতা দানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতে মুহাম্মাদিকে বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরণ করার কথা বলেছেন, ‘তোমরা (পৃথিবীর) স্বাদ-গন্ধকে বিলুপ্তকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।’ (তিরমিজি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবিত থাকাকালেই মৃত্যুর প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। মুত্যুর স্মরণের মাধ্যমে পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সফলতা ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি