আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাস রমজান
রোজা ও রমজান দুনিয়াতে বান্দার জন্য আল্লাহর এক মহাঅনুগ্রহ। যারা রমজানের হক আদায় করতে পারবে তারাই সফলকাম হবে। আর রোজা হলো মানুষের পুরোপুরি আত্মিক ইবাদত, যা দেখানোর কোনো বিষয় নয়।
এজন্য রোজার প্রতিদান দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রোজা আমার জন্য রাখা হয়; আমিই এর প্রতিদান দেব।’ তাই পবিত্র মাসজুড়ে রোজা পালন এবং ইবাদাত-বন্দেগির ফজিলত অত্যধিক। পবিত্র রমজান মাসের রোজা ও ইবাদত যথাযথভাবে পালন করতে সংক্ষেপে কিছু ফজিলত তুলে ধরা হলো-
>> রমজান মাসের একটি নফল ইবাদত অন্য মাসের একটি ফরজের সমান;
>> আর রমজানের একটি ফরজ আদায় অন্য মাসের ৭০টি ফরজ আদায়ের সমান;
>> এ মাসের বিশেষ মর্যাদা হলো-
রোজা পালনের মাধ্যমে ইহকালীন সফলতা ও পরকালে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রমজানের রোজা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঢালস্বরূপ
জান্নাতে যাওয়ার জন্য সর্বোত্তম উপায়; বিশেষ করে রমজানের রোজা পালনকারীদের ‘রাইয়ান’ নামক দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুবর্ণ সুযোগ প্রদান করা হবে।
>> রোজা মানুষের গোনাহ মোচনের অন্যতম মাধ্যম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি চেতনাযুক্ত ঈমান সহকারে রোজা রাখবে; আল্লাহ তাআলা তার জীবনের পেছনের সমস্ত গোনাহ (ছোট) মাফ করে দেবেন।’
>> রমজানের রোজা কেয়ামতের দিন তার পালনকারীর জন্য সুপারিশকারী হবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রোজা এবং কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘হে আমার রব! আমি তাকে দিনের বেলা পানাহার এবং স্ত্রী-সহবাস থেকে বিরত রেখেছি। তাঁর সম্পর্কে আমার সুপারিশ কবুল করুন।
কুরআন বলবে, ‘আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। তাঁর সম্পর্কে আমার সুপারিশ কবুল করুন। তখন রোজা ও কুরআনের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’
>> বান্দার রমজান মাসের রোজা পালনের পুরস্কার আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে প্রদান করবেন। এটা আল্লাহ তাআলার ঘোষণা। রমজান মাসের রহমতপূর্ণ পরিবেশ ও রোজার মাধ্যমে মানুষের আচার-আচরণ, চারিত্রিক গুণাবলি সুন্দর ও উত্তম হয়।
হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজা পালনকারীর ব্যাপারে বলেন, ‘রোজা আমার জন্য রাখা হয়; আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।’
পরিশেষে...
পবিত্র রমজান মাস এবং রোজা পালন মানুষকে আখেরাতমুখী করে গড়ে তোলে। এ মাসেই আল্লাহর সঙ্গে বান্দার নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়। রমজানের রহমতি পরিবেশ ও রোজার ফলে মানুষের পাশবিক চরিত্র অবদমিত হয়ে ঈমানি ও রূহানি শক্তি বৃদ্ধি পায়। আল্লাহর ভালোবাসায় ধন্য হয়ে মানুষ স্বভাবগতভাবে বিনয় ও নম্র হয়।
সর্বোপরি পবিত্র রমজান মাসের রোজা পালন এবং ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর ভয়, ভালোবাসা এবং নৈকট্য অর্জন করে জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত লাভই মানুষের একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব উপলব্ধি করে রোজা পালন এবং ইবাদত বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস