যে নামাজ আদায়কারী কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ রুকন। দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মানুষের জন্য ফরজ ইবাদত। হাদিসে এসেছে, ‘পরকালে আল্লাহ তাআলা সর্ব প্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করবেন।’
আর যারা দুনিয়াতে নিয়মিত নামাজ আদায় করবেন; তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয় নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ সর্বোপরি মানুষের কল্যাণেই আল্লাহ তাআলা নামাজের বিধান প্রবর্তন করেছেন।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিন ও রাতের সন্ধিক্ষণের নামাজের ব্যাপারে তাগিদ প্রদান করেছেন। যে সময়ে মানুষ নামাজের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। আর তা হলো- ফজর ও আসরের নামাজের সময়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর এবং আসরের নামাজের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, ‘যারা এ দুই ওয়াক্ত নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করবে তারা কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। হাদিসে এসেছে-
হজরত ওমারা ইবনে রুওয়াইবা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, এমন ব্যক্তি কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যে সূর্যোদয়ের পূর্বের এবং সুর্যাস্তের পূর্বের নামাজ পড়বে অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামাজ। (মুসলিম)
ফজর ও আসর নামাজের গুরুত্বের কারণ
>> ফজরের সময়ের ঘুম মানুষের জন্য অত্যন্ত আরামদায়ক। আর আসরের সময় ব্যবসা-বাণিজ্য, খেলা-ধুলা এবং চিত্তবিনোদনে মানুষের ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সব কারণে মানুষ বেখেয়াল ও অলসতা করে ফজর এবং আসরের নামাজ আদায় করা থেকে উদাসীন থাকে।
অথবা যথা সময়ে উভয় ওয়াক্তের নামাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। সে কারণে যে ব্যক্তি এ দুই ওয়াক্ত নামাজ যথা সময়ে আদায় করবে তাঁদের জন্য দিনের অন্যান্য ওয়াক্তের নামাজগুলো আদায় করা সহজ হয়ে যায়।
>> ফজর ও আসরের সময় দিন ও রাতের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতারা উম্মতের আমল নিয়ে আল্লাহ তাআলার দরবারে হাজির হয়। ওই সময় যে বান্দাকে ফেরেশতারা নামাজরত অবস্থায় দেখবে, তারা আল্লাহ তাআলার দরবারে তাদেরকে নামাজি হিসেবে সাক্ষ্য প্রদান করবে। কাজেই এটা অসম্ভব নয় যে আল্লাহ তাআলা এ বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।
>> পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্বে আসর এবং ফজরের নামাজ মানুষের জন্য আগে থেকেই ফরজ ছিল। তাই এ দু ওয়াক্ত নামাজের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
>> তাছাড়া দিনের শুরু (ফজর) হলো রিঝিক বণ্টনের সময় আর দিনের শেষ (আসর) হলো বান্দার আমল নামা পৌছানোর সময় তাই হাদিসে এ দুই ওয়াক্ত নামাজরে ফজিলত ও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
পরিশেষে…
সর্বোপরি নামাজ যেহেতু মানুষকে সঠিক পথ দেখায়, অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। তাই নামাজের প্রতি মানুষের মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য দিন ও রাতের সন্ধিক্ষণ আসর এবং ফজরের নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি বিশেষ করে ফজর ও আসরের নামাজের প্রতি অত্যাধিক গুরুত্বারোপ করার তাওফিক দান করুন। চিরস্থায়ী জান্নাত লাভে জাহান্নামের ভয় অন্তরে ধারণ করার তাওফিক দান করুন। সব সময় কুরআন সুন্নাহর বিধি-বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস