টাঙ্গাইলের ঐতিহাসিক নান্দনিক আতিয়া মসজিদ
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লৌহজং নদির পূর্ব পাড়ে আতিয়া গ্রামে প্রায় সোয়া ৪০০ বছরের প্রাচীন ইসলামি স্থাপনা আতিয়া মসজিদ। বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন এ মসজিদটি। ১৬০৮ থেকে ১৬১১ সালের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে এ মসজিদটি সাঈদ খান পন্নী নির্মাণ করেন।
টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদটি অতি সুপ্রাচীন নান্দনিক ইসলামি স্থাপনা। বিশিষ্ট সুফি সাধক শাহ কাশ্মীরীর পরামর্শে মোগল বাদশাহ জাহাঙ্গীর তাঁর প্রিয় ভক্ত সাঈদ খান পন্নীকে আতিয়া পরগনার শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। এ সাঈদ খান পন্নীই করটিয়ার বিখ্যাত জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। আর তিনিই আতিয়া মসজিদ নির্মাণ করেন।
সুলতানি ও মোগল আমলের স্থাপত্য শিল্পরীতিতে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনায় ছিলেন প্রখ্যাত স্থপতি মুহাম্মদ খাঁ। মসজিদটি নির্মাণের পর ১৮৩৭ সালে রওশন খাতুন চৌধুরানী এবং ১৯০৯ সালে আবুল আহমেদ খান গজনবি এ মসজিদ সংস্কার করেন।
এক গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকৃতির মসজিদটির সামনের দিকে বারান্দার ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। বারান্দাসহ মসজিদটি আয়তন হলো ১৭.৭০ মিটার এবং ১২ মিটার। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব হলো ২.২২ মিটার। মসজিদের চারকোনে অষ্টকোনী ৪টি মিনার রয়েছে। মিনারগুলো ছাদের অনেক ওপরে ওঠে ছোট গম্বুজে শেষ হয়েছে। পশ্চিম পাশের দেয়ালের অর্থাৎ কিবলা দেয়ালের মধ্যে তিনটি অলংকৃত মেহরাব আছে।
পূর্ব দিকে খিলানবিশিষ্ট তিনটি প্রবেশ পথ। বারান্দা থেকে তিনটি প্রবেশ পথের মাধ্যমে মূল মসিজদে প্রবেশ করা যায়। মসজিদের সম্মুখে অংশসহ পুরো মসজিদেই পোড়ামাটির টেরাকোটা নকশায় অলংকৃত। যে নকশা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়া এবং যথাযথ পরিচর্যার অভাবে অনেকটাই বিলুপ্তি পথে।
বাংলাদেশে সুলতানি ও মোগল আমলের যে সব প্রাচীন মুসলিম স্থাপনা রয়েছে, তন্মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপক পরিচিত স্থাপনা। এক সময় বাংলাদেশের ১০ টাকার নোটে এ মসজিদের ছবি স্থান পেয়েছিল। বর্তমান সময়ে এ মসজিদের মতো ইসলামি স্থাপনা দেশে বিরল।
এমএমএস/জেআইএম