৫৩৮ বছরের প্রাচীন মুসলিম নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ছোট সোনা মসজিদ ও কোতয়ালী দরজার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ওমরপুরে দারাসবাড়ি মসজিদ। এ মসজিদটি বাংলার প্রথম যুগের মুসলিম স্থাপত্য কীর্তির একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। স্থানীয় জনসাধারণ এই স্থানকে দারসবাড়ি বলে থাকেন।
মসজিদটির অবস্থান ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। সোনা মসজিদ স্থল বন্দর থেকে মহানন্দা নদীর পাড় ঘেঁষে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ রাইফেলস-এর সীমান্ত তল্লাশী ঘাঁটি। ঘাঁটি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঘোষপুর মৌজায় প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের সুন্দর নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ।
বর্তমানে জনশূন্য দারাসবাড়ি মসজিদটি ১৪৭৯ খ্রিস্টাব্দে সুলতান শামস উদ্দীন ইউসুফ শাহের আমলে নির্মিত হয়। মসজিদের অভ্যন্তর দুই অংশে বিভক্ত। এর আয়তন ৯৯ ফুট ৫ ইঞ্চি দৈর্য্ঘ ও ৩৪ ফুট ৯ ইঞ্চি প্রস্থ। মসজিদের উপরে ৯টি গম্বুজের চিহ্ন দেখা যায়।
মসজিদের পূর্ব পার্শ্বে একটি বারান্দা; যার আয়াতন ১০ ফুট ৭ ইঞ্চি। বারান্দার খিলানে ৭টি পাথরের স্তম্ভের ওপরের ৬টি ক্ষুদ্রাকৃতি গম্বুজ এবং মধ্যবর্তীটি গম্বুজটি অপেক্ষাকৃত বড়। উত্তর দক্ষিণে ছিল ৩টি করে জানালা।
পশ্চিমের দেয়ালে পাশাপাশি ৩টি করে ৯টি কারুকার্য খচিত মেহরাব এখনও লক্ষণীয়। মসজিদটির চার পার্শ্বে দেয়াল ও কয়েকটি প্রস্তর স্তম্ভের মূলদেশ ব্যতীত এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এক সময় এখানে অবস্থিত তোগরা অক্ষরে উৎকীর্ণ ইউসুফি শাহী লিপিটি এখন কলকাতা জাদুঘরে রক্ষিত আছে বলে জানা যায়।
দারাসবাড়ি মসজিদের বাহির এবং অভ্যন্তর দেয়ালে টেরাকোটা খচিত আকর্ষণীয় কারুকাজ দেখা যায়। ওই এলাকায় যত প্রাচীন স্থাপনা ও মসজিদ রয়েছে, সে সব সুন্দর স্থাপত্য শিল্পগুলোর চেয়ে এ মসজিদটি অনেক সুন্দর।
প্রথম দিকে এ মসজিদের নাম দারাসবাড়ি ছিল না। আগে এ মসজিদের নাম ছিল ফিরোজপুর মসজিদ। ১৫০২ সালে সুলতান হোসেন শাহ কর্তৃক দারাসবাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ফিরোজপুর জামে মসজিদটি দারাসবাড়ি মসজিদ হিসেবে পরিচিত লাভ করে।
এমএমএস/পিআর