হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামের সৃষ্টি এবং বিবাহ

পৃথিবীর আদি মানব হজরত আদম আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার সূচনা সৃষ্টিতে অনন্য মর্যাদা লাভ করেছেন। আল্লাহ তাআলা সব ফেরেশতাকে তাঁর সম্মানে সিজদা করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। যা মানব জাতীর জন্য অনন্য মর্যাদা ও সম্মানের বহিঃপ্রকাশ।

হজরত আদম আলাইহিস সালামকে ফেরেশতাদের সিজদার পর আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রশান্তি লাভের জন্য সঙ্গী হিসেবে আদি মাতা হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন। হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টির পর স্বামী-স্ত্রী উভয়কে জান্নাত বসবাসের স্থান করে দিয়েছেন। শুধু বসবাস করার অধিকারই দেননি বরং সব জিনিসের ওপর অধিকারও দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত আদম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা মাটি দ্বারা তৈরি করে রূহ ফুঁকে জীবন দান করেন। কিন্তু আদি মাতা হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনি তাঁকে রূহ ফুঁকে দিয়ে জীবন দান করেননি বরং তাঁর
সৃষ্টি সম্পর্কে হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। যা তুলে ধরা হলো-

>> মুহাম্মদ বিন ইসহাক বলেন যে, আহলে কিতাবদের আলেমগণ থেকে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনা অনুসারে বর্ণিত আছে যে, ইবলিসকে ধমক ও ভীতি প্রদর্শনের পর আদম আলাইহিস সালামের জ্ঞান প্রকাশ করতঃ তাঁর উপর তন্দ্রা চাপিয়ে দেন। অতপর তার বাঁম পাঁজর হতে হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেন। চোখ খোলামাত্র তিনি তাঁকে দেখতে পান এবং রক্ত ও গোস্তের কারণে অন্তরে তার প্রতি প্রেম ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। অতপর আল্লাহ উভয়কে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন এবং বেহেশতে বসবাস করার নির্দেশ দেন।

>> হজরত ইবনে আব্বাস ও হজরত ইবনে মাসউদসহ কতিপয় সাহাবি থেকে বর্ণিত আছে যে, ইবলিসকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়ার পর হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সেখানে জায়গা করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে সময় তিনি একাকী ছিলেন। সুতরাং তাঁর ঘুমের অবস্থায় হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে তাঁর পাঁজর হতে সৃষ্টি করা হয়। জেগে ওঠে তাঁকে সামনে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাস করেন, তুমি কে? তুমি কেনইবা সৃষ্টি হলে? হজরত হাওয়া উত্তরে বলেন, ‘আমি একজন নারী, আপনার শান্তির কারণ রূপে আমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।

পরিশেষে...
সব প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য যিনি মানুষকে যথাযথ মর্যাদা এবং সম্মান দান করেছেন। মানুষের প্রতি তাঁর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত বর্ষণ করেছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে প্রথমত মানুষ অতঃপর মুসলমান হিসেবে সৃষ্টি করার জন্য তাঁর আলীশান দরবারে অবনত মস্তকে সিজদা আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর