কুরআনে আল্লাহকে স্মরণ করার উপমা প্রদান
মানুষের মধ্যে তারাই সৌভাগ্যবান; যারা আল্লাহ তাআলার করুণায় হজ সম্পাদনে সক্ষম হয়। এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের অর্থ-সম্পদ ও শারীরিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও হজ আদায় করার সৌভাগ্য হয় না। এ কারণে হজ আদায় করার সৌভাগ্য অর্জন মহান আল্লাহ তাআলার অপার রহমত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজ সম্পাদনের পর তাঁকে স্মরণ করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। কিভাবে তাঁকে স্মরণ করতে হবে কুরআনে সে উপমা উপস্থাপন করেছেন। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা হজ সম্পাদনের পর হাজিদের করণীয় বর্ণনা করেছেন। মানুষের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা শুধুমাত্র দুনিয়ার কল্যাণ কামনা করে; এ সব লোকদের জন্য পরকালে কোনো কল্যাণ নেই। হজ সম্পাদনের পর প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত মহান রাব্বুল আলামীনকে স্মরণ করা।
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা হজ আদায়কারী বান্দাদের নির্দেশ প্রদান করে বলেন, তোমরা হজ সম্পাদনের পর খুব বেশি বেশি আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ কর। আল্লাহ তাআলা স্মরণ করার উপমা প্রদান করে তিনি বলেন, ‘শিশু যেমন তাঁর পিতা-মাতাকে স্মরণ করে তোমরাও আল্লাহ তাআলাকে সেরূপে স্মরণ কর।
হজ সম্পাদনের পর অনেকেই নিজেকে বিভিন্নভাবে সমাজে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে। বংশ গৌরব প্রকাশে লিপ্ত হয়। যেমনি ভাবে জাহেলিয়াতের সময় যারা বংশ গৌরব নিয়ে অহংকার করতো। নিজেদেরকে বড় মনে করতো। পিতৃপুরুষদের দানশীলতা, আতিথেয়তা ও বীরত্বে অদ্বিতীয় ইত্যাদি কথা প্রচার করে বেড়াতো। এ সব বিষয় থেকে বিরত থাকতেই আল্লাহ তাআলা এ আয়ান নাজিল করেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা নিজেদের বংশ মর্যাদা ও লোক দেখানো সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে শুধুমাত্র আমারই শ্রেষ্ঠত্ব সম্মান ও মর্যাদার কথা বর্ণনা করো এবং আমার প্রশংসা করো। এটাই বান্দার জন্য দোয়া কবুলের উত্তম সময়।
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু’র বর্ণনায় রয়েছে যে, কতগুলো পল্লীবাসী এ প্রার্থনায় লিপ্ত থাকতো- ‘হে আল্লাহ! এ বছর ভালোভাবে বৃষ্টি বর্ষণ করুণ যাতে ফসল ভালো জন্মে এবং বহু সন্তান দান করুন ইত্যাদি।’ কিন্তু মুমিনদের প্রার্থনা হতো উভয় জাহানের মঙ্গলের জন্যই। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা আরো জানিয়েছেন যে, যারা শুধুমাত্র দুনিয়ার কল্যাণ চায়; তারা শুধু দুনিয়ার কল্যাণই লাভ করবে। পরকালের তাদের জন্য কোনো কল্যাণ অবশিষ্ট থাকবে না।
পড়ুন- সুরা বাকারার ১৯৮-৯৯ নং আয়াত
পরিষেশে...
মুসলিম উম্মাহর উচিত আল্লাহ তাআলাকে একজন শিশুর মতো স্মরণ করা। যেমনিভাবে একজন শিশু তাঁর বাবা-মাকে স্মরণ করে বা ডাকতে থাকে। শুধুমাত্র দুনিয়ার কল্যাণ লাভের প্রার্থনা করে উভয় জাহানের কল্যাণ লাভের প্রাথনা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের সময় থেকে শুরু করে হজ পরবর্তী সময়ে তাঁকে বেশি বেশি স্মরণ করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ কামনায় নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। কুরআনের বিধান যথাযথ পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর