বিশ্বনবির সৌভাগ্যময় শুভাগমন ও ঘটনা
বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী, সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত, সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পৃথিবীতে শুভাগমনের বছর, মাস ও তারিখ সম্পর্কে বিভিন্ন অভিমত থাকলেও জন্মবার এবং সময়ের ব্যাপারে কোনো মতপার্থক্য নেই। আর রবিউল আউয়াল মাস সম্পর্কেই বেশি বর্ণনা রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমুল ফিল বা হস্তীবাহিনীর আক্রমণের বছর পবিত্র মক্কা নগরীতে মা আমিনার আলোকিত ঘরে সোমবার রাতের মহাসন্ধিক্ষণে সুবহে সাদিকের সময় জন্মগ্রহণ করেন।
বিশ্বনবির জন্ম সম্পর্কে হজরত ইবনে সাদ হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত আম্মাজান বলেছেন, যখন তাঁর জন্ম হয়েছিল তখন আমার শরীর হতে এক জ্যোতি বের হয়েছিল; যাতে শাস দেশের অট্টালিকাগুলো আলোকিত হয়েছিল। যা ছিল বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের পূর্বাভাস।
এ পৃথিবীতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমনে কিসরা প্রসাদের চৌদ্দটি সৌধচুড়া ভেঙে পড়ে, প্রাচীন পারসীক যাজকমণ্ডলীর উপাসনালয়ে যুগ যুগ ধরে প্রজ্জ্বলিত হয়ে আসা অগ্নিকুণ্ডগুলো নিভে গিয়েছিল।
ইমাম বায়হাকি, তাবারি এবং অন্যান্যদের বর্ণনা মতে, বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমনের ফলে বাহিরা পাদ্রীদের সরগরম গীর্জাগুলোতে লোক সমাগম কমে যায় এবং তাদের প্রভাব ও আধিপত্য নিস্তেজ ও নিষ্প্রভ হয়ে যায়।
সন্তান ভূমিষ্ঠের সুসংবাদ প্রদান
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মের শুভ সংবাদটি বিবি আমিনাহ তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিবের কাছে পাঠান। এ শুভ সংবাদটি শুনা মাত্রই আব্দুল মুত্তালিব আনন্দে উদ্বেল হয়ে সূতিকাগারে প্রবেশ করে নবজাতক বিশ্বনবিকে কোলে তুলে নিয়ে পবিত্র কাবা প্রাঙ্গনে উপস্থিত হন।
শুকরিয়া আদায়
পবিত্র কাবা চত্ত্বরে অপূর্ব সুষমামণ্ডিত এ নবজাতকের মুখমণ্ডলে আনন্দাশ্রু সজল দৃষ্টিতে তাকিয়ে মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। তাঁর সার্বিক কল্যাণের জন্য দোয়া করেন।
নামকরণ
একান্ত আনন্দ মধুর ওই মুহূর্তটিতে তিনি এটাও স্থির করে ফেলেন যে, এ নবজাতকের নাম রাখা হবে মুহাম্মদ। তৎকালীন সময়ে আরব সম্রাজ্যের নামের তালিকায় এ নামটি ছিল অভিনব একটি নাম।
দুগ্ধপান
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে সর্বপ্রথম তাঁর মা দুধ পান করান। অতঃপর সর্বপ্রথম দুধপান করান আবু লাহাবের দাসী সুওয়ায়বা। ওই সময় তাঁর কোলে যে সন্তানটি ছিল, তাঁর নাম ছিল মাসরূহ। বিশ্বনবিকে দুধ পান করানোর পূর্বে এ মহিলা হাযাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব এবং আবু সালামাহ বিন আব্দুল আসাদ মাখযুমিকে দুধ পান করিয়েছিলেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবির আদর্শ বাস্তবায়ন করে তার প্রতিনিধি হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি