খাবার গ্রহণে বিশ্বনবির আদর্শ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় এক ধরনের খাদ্য গ্রহণ করতেন না। তাছাড়া এক ধরনের খাদ্য গ্রহণ করা তাঁর পবিত্র সুন্নাতের অন্তর্ভুক্তও ছিল না। কেননা সর্বদা একই খাদ্য গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যদিও তা সর্বোত্তম খাদ্য হয়। তাই তাঁর পবিত্র অভ্যাস ছিল এই যে, তিনি যে দেশে অবস্থান করতেন, সেখানকার অধিবাসীদের সব খাদ্যই গ্রহণ করতেন। সংক্ষেপে বিশ্বনবির পানাহার গ্রহণের কিছু আদর্শ তুলে ধরা হলো-
হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনই কোনো খাবারের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করতেন না। খাবার পছন্দ ও রুচি হলে তিনি তা খেতেন। আর পছন্দ ও রুচি না হলে তা বর্জন করতেন।’
আর রুচি না হলে কোনো খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয় এবং জোর করে পেটের ভিতরে কোনো কিছু প্রবেশ করানো ঠিক নয়। কেননা যখন কোনো লোক অরুচিকর খাদ্য খায়, তখন উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়। তাই খাদ্যাভ্যাস সুস্বাস্থ্য রক্ষায় অন্যতম একটি মূলনীতিও বটে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গোশত খেতে পছন্দ করতেন। গোশত থেকে তিনি উরু’র গোশত বেশি পছন্দ করতেন। তিনি ছাগলের সামনের অংশের গোশত বেশি পছন্দ করতেন। কারণ এই অংশের গোশত হালকা এবং তা দ্রুত হজম হয়।
এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিষ্টি ও মধুও পছন্দ করতেন। সুস্বাস্থ্যের জন্য এই তিনটি খাদ্য তথা গোশত, মিষ্টি ও মধু অন্যতম উপকারী খাদ্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মধুর সঙ্গে ঠান্ড পানি মিশিয়ে পান করতেন।
ফল খাওয়াও সুস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো দেশে বা অঞ্চলে যেতেন; তখন সেই দেশের বা অঞ্চলের ফল খেতেন এবং তা পরিহার করতেন না।
আল্লাহ তাআলা স্বীয় অনুগ্রহে প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষের জন্য এমন ফল তৈরি করেছেন, যা তাদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য খুবই উপযোগী ও উপকারী। তাইতো যে ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ভয়ে দেশি কোনো ফল খাওয়া বর্জন করে, সে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
খাবার গ্রহণের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেলান দিয়ে বসতেন না, আবার দাঁড়িয়েও খাবার গ্রহণ করতেন না। তিনি বলেছেন, ‘আমি টেক লাগিয়ে (হেলান দিয়ে) খাই না। (বুখারি) তিনি আরো বলেন, ‘আমি ক্রীতদাসের মতই বসি এবং খাবার গ্রহণ করি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিন আঙ্গুল দিয়ে খাবার গ্রহণ করতেন। এভাবে খাবার গ্রহণ সর্বাধিক উপকারী।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে খাবার গ্রহণের সময় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুযায়ী খাবার ও পাণীয় গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস