জবানের হিফাজতের গুরুত্ব
জিহ্বা বা জবানের গুরুত্ব অপরীসিম। মানুষ দুনিয়াতে যেমন জবানের হিফাজতের মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরে মর্যাদা লাভ করে; তেমনি পরকালে মুক্তি লাভের জন্য দুনিয়াতে জবানের হিফাজত করা অত্যন্ত জরুরি। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেই প্রকৃত মুসলমান যার মুখ(জিহ্বা)ও হাত থেকে অপর মুলসমান নিরাপদ থাকে।’
হজরত হিশাম বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো গোলামকে থাপ্পড় মারে, তার এ কর্মের কাফফারা হলো গোলামটিকে মুক্ত করে দেয়া। যে (শরিয়ত পরিপন্থী কথাবার্তা হতে) নিজের জিহ্বাকে হিফাজত করবে, তাকে আজাব হতে মুক্তি দেয়া হবে। যে আল্লাহর কাছে নিজের ওজর পেশ করবে, তা কবুল করা হবে। মুমিনের উচিত হলো- সে যেন প্রতিবেশী এবং মেহমানকে সম্মান করে। কথা বললে ভাল কথা বলে; অন্যথায় চুপ থাকে।
চুপ থাকা মুমিনের গুণ। হাদিসে মুমিনের চারটি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘চারটি গুণ শুধু মুমিনের মধ্যে পাওয়া যায়-
>> চুপ থাকা;
>> বিনয়ী হওয়া;
>> আল্লাহর জিকির করা;
>> অনিষ্টতার স্বল্পতা তথা অন্যের ক্ষতি করা থেকে বেঁচে থাকা;
জবানের (জিহ্বার) সঠিক ব্যবহারের ফলেই আল্লাহ তাআলা হজরত লোকমান হাকিমকে অনেক উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন। হজরত লোকমান হাকিমকে তাঁর উচ্চ মর্যাদা লাভের কারণ জিজ্ঞাসা করতেই তিনি তিনটি কাজের কথা বর্ণনা করেন-
>> সততার দ্বারা;
>> আমানতদারীর দ্বারা;
>> অনর্থক কথাবার্তা বর্জন করার দ্বারা তিনি আল্লাহর নিকট উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছিলেন।
সর্বোপরি কথা হলো- অযথা জবানের (জিহ্বার) ব্যবহার না করা। কথাবার্তায় সতর্কতা অবলম্বন করা। এ জবান (জিহ্বা দ্বারা) আল্লাহ তাআলার জিকির করা। সুতরাং আল্লাহর নৈকট্য লাভে অন্যায় ও অশ্লীল কথাবার্তা থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুমিনের জন্য আবশ্যক।
পরিশেষে...
হাদিসে জবানের (জিহ্বার) হিফাজতকারী ব্যক্তির জান্নাতের জামিনদার স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ থেকেই বুঝা যায় যে, জিহ্বার হিফাজতের গুরুত্ব মুসলিম উম্মাহর জীবনে
অনেক বেশী।
সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবি ঘোষিত জান্নাত লাভে কথাবার্তায় জবানের (জিহ্বার) হিফাজত করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর দেয়া জবানকে তাঁর কাজে ব্যবহার করার তাওফিক দান করুন। প্রত্যেককে উল্লেখিত গুণগুলো অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস