চাঁদের সৃষ্টি প্রসঙ্গে আল্লাহর ঘোষণা
চাঁদের সঙ্গে মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের কাজ-কর্ম বিশেষভাবে জড়িত। মানুষের ইবাদাত বন্দেগির মধ্যে রোজা, ইফতার, হজ, কুরবানি, ঈদ মহিলাদের ইদ্দত পালন, ব্যবসা-বাণিজ্যের চুক্তিপত্রের সময়কাল ইত্যাদি জানা যায়।
আবার চাঁদ কেন ছোট-বড় তথা বড়ে কমে ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্বনবি প্রশ্নের সম্মুখীন হন; পাশাপাশি হজের সময় কোনো ব্যক্তি যদি বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন হত তখন তারা ঘরের সদর দরজা ব্যবহার না করে পেছনে দরজা ব্যবহার করতো। মুসলিম উম্মাহকে এ সকল বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে জানাতেই আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৮৯নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা জাহেলি যুগের কিছু বিষয়ে বিশ্বনবি জানিয়ে দেন, যা উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়া ওই সময় চাঁদ সম্পর্কিত প্রশ্নে মানুষের প্রশ্নের জবাবের বিষয়টিও আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে তুলে ধরেছেন।
সাহাবি হজরত মাআ’জ ইবনে জাবাল আনসারি এবং সা’লাবা ইবনে গনম আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহুমা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি কারণে চাঁদ প্রথম সূক্ষ্ম এবং পরে ধীরে ধীরে তা পূর্ণ হয়। এরপর আবার ধীরে ধীরে সে পূর্বের ন্যায় সূক্ষ্ম হয়ে যায়। তখন এ আয়াত নাজিল হয়।
বিশেষ করে পূর্বে আয়াতে আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। ইসলামে মাসের হিসাব চাঁদের হিসাবে রাখা হয়। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে ইফতার কর। রমজানের রোজা রাখা না রাখা নতুন চাঁদ উঠার ওপর নির্ভরশীল।
ঠিক হজের সঙ্গেও এ চাঁদেরই সম্পর্ক। জাহেলিয়াতের যুগেও হজ বিশেষ ইবাদাত হিসেবে পরিগণিত ছিল। সে সময় হজের কিছু কুসংস্কার ছিল; যা এ আয়াত দ্বারা খণ্ডন করা হয়েছে। তন্মধ্যে একটি কুসংস্কার ছিল-
যদি কোনো ব্যক্তি হজের জন্য ইহরাম বাঁধার পর কোনো প্রয়োজনে আবার বাড়ি ফিরে আসতে হতো; তখণ তারা বাড়ির সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করাকে দোষণীয় মনে করতো। তাদের ধারণা ছিল; এভাবে বাড়ি ফিরলে হজের ব্যাপারে ব্যর্থ হয়ে প্রত্যাবর্তন করা হয়।
এ জন্য তারা ঘরের পেছনের দিকের পথ ব্যবহার করতো। অথবা বাড়ির পেছনের দিক থেকে দেয়াল টপকে বাড়ি প্রবেশ করতো। অথবা ঘরের ছাঁদের ওপর থেকে ফাঁক করে ঘরে প্রবেশ করতো। তখন এ রীতি চালু ছিল।
অন্ধকার যুগের এ কুপ্রথা এবং কুসংস্কারের মধ্যে কোনো কল্যাণ বা নেকি নেই বলে আল্লাহ তাআলার ঘোষণা তাদের সকল কুপ্রথার অবসান ঘটিয়ে দেয়।
পড়ুন- সুরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াত
পরিষেশে...
সর্বোপরি কথা হলো- জীবনের সব অবস্থায় আল্লাহ তাআলাকে ভয় করাই হলো মূলত নেকি বা কল্যাণের কাজ। সুতরাং জীবনের সকল কাজে আল্লাহ তাআলাকেই ভয় করতে হবে। দুনিয়া এবং আখিরাতের সফলতা লাভের একমাত্র মাধ্যই হলো আল্লাহ তাআলার ভয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব বিষয়ে তাঁকে ভয় করার মাধ্যমে সকল পূণ্যের কাজে সম্পৃক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস