হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের অবতরণ
হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার সম্মানিত পয়গাম্বর। আল্লাহ তাআলা তাঁকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়েছেন। কিয়ামতের পূর্ববর্তী সময়ে অভিশপ্ত দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা এবং আক্রমণ থেকে মুসলিম উম্মাহকে সাহায্য করতে বাদশাহ হিসেবে তাঁকে পৃথিবীতে প্রেরণ করবেন। দাজ্জালকে প্রতিহত করতে হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের অবতরণকালীন সময়ের বর্ণনা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-
কিয়ামতের পূর্ববর্তী সময়ে অভিশপ্ত দাজ্জাল মানুষের ঈমান হরণ এবং ত্রাস ও মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করবে। সে সময় আল্লাহ তাআলা হজরত ঈসা ইবনে মারইয়ামকে দুনিয়াতে প্রেরণ করবেন।
দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করতে তিনি দুজন ফেরেশতার ডানায় ভর করে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের পূর্ব দিকে সাদা মিনারার নিকটে অবতরণ করবেন।
অতঃপর অভিশপ্ত দাজ্জালকে সেখানে হত্যা করবেন। ঐ সময় তিনি পৃথিবীতে ইসলামের বিধান জারি করবেন, তিনি দুনিয়াতে ৭ বছর অবস্থান করবেন এবং মানুষের কল্যাণে অনেক বিধি-নিষেধ জারি করবেন। তখন কারো মাঝে হিংসা-বিদ্বেষ এবং অভাব থাকবে না। অতঃপর তিনি মারা গেলে মুসলিম উম্মাহ তাঁর জানাযা আদায় করবেন।
হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের মৃত্যুর পর আল্লাহ তাআলা সিরিয়ার দিক থেকে সুগন্ধিময় ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত করবেন। এ সুগন্ধিময় বাতাসের ফলে যাদের অন্তরে অনু পরিমাণ ঈমান থাকবে তাঁরা মারা যাবে।
অবশিষ্ট থাকবে শুধুমাত্র দুষ্ট প্রকৃতির মানুষগুলো। তাদের মেজাজ হবে পাখীর মতো হালকা এবং তারা হিংস্র জন্তুর মতো জালেম হবে।
এ সকল দুষ্ট প্রকৃতির লোকগুলো গাধার মত মাতলামী-পাগলামী করবে। অতঃপর শয়তান তাদেরকে মূর্তির পূজা করার নির্দেশ করবে। তাদের ওপরই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ঐ সত্ত্বার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন। তোমাদের মধ্যে ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ হয়ে (হজরত ঈসা) ইবনে মারইয়ামের অবতরণের সময় অতি সন্নিকটে।
তিনি ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন; শূকর হত্যা করবেন; খাজনা বা কর বন্ধ করে দিবেন; সম্পদের প্রাচুর্য এত অধিক হবে যে কেউ তা গ্রহণ করার থাকবে না। আর তখন একটি সিজদা দুনিয়া এবং দুনিয়ায় যা আছে তার চেয়েও অতি উত্তম হবে।
অতঃপর আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যদি চাও তাহলে পড়; আল্লাহর বাণী (সুরা নিসা : আয়াত ১৫৯) ‘আর আহলে- কিতাবের প্রত্যেকে তার মৃত্যুর পূর্বে ঈসা (আলাইহিস সালামের)-এর ওপর ঈমান আনবে। আর কিয়ামতের দিন তিনি তাদের (ঈমান আনয়নকারীদের) উপর সাক্ষী হবেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কিয়ামত পূর্ববর্তী সময়ের সকল ভয়াবহ ফিতনা থেকে হিফাজত করুন। পরিপূর্ণ ঈমানদার হিসেবে দুনিয়া পরকালের কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এবিএস