কুরআনে জাহান্নামের পরিচয়
জাহান্নাম হলো আজাব তথা শাস্তির নিবাস। ইহা আল্লাহ তাআলা কাফের ও পাপিষ্ঠদের জন্য আখেরাতের প্রতিদান হিসাবে তৈরি করে রেখেছেন। কুরআনে আল্লাহ তাআলা জাহান্নামের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর বিধি-বিধান পালন করা মুসলিম উম্মাহর জন্য আবশ্যক।
যারা আল্লাহ তাআলার বিধি-বিধান পালনে ব্যর্থ হবে। তাঁর বিধি-নিষেধ ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করবে। তাদেরকে তাদের কর্ম অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করবেন। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তাআলা জাহান্নামের বর্ণনা দিয়েছেন। সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হলো-
১. ‘নার’ তথা আগুন
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে কেউ আল্লাহ ও রাসুলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিম করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৪)
২. ‘জাহান্নাম’ তথা দোজখ
এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ জাহান্নামে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৪০)
৩. ‘জাহিম’ তথা প্রচণ্ড উত্তপ্ত আগুন।
এ সম্পর্কে কুরআনে এসেছে, ‘যারা অবিশ্বাস করে এবং আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তারা জাহিমবাসী।’ (সুরা মায়িদা : আয়াত ১০)
৪. ‘সাঈর’ তথা প্রজ্জ্বলিত (অগ্নি) শিখা
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফেরদের প্রতি অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে সাঈর তথা প্রজ্জ্বলিত (অগ্নি) শিখা তৈরি করে রেখেছেন।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ৬৪)
৫. ‘সাকার’ তথা ঝলসানো আগুন
এ সম্পর্কে আল্লাহর বাণী হলো- ‘যেদিন তাদের মখু হেঁচড়ে টেনে নেয়া হবে সাকারে (ঝলসানীয় আগুনে), বলা হবে- অগ্নির খাদ্য আস্বাদন কর।’ (সুরা কামার : আয়াত ৪৮)
৬. ‘হুত্বামাহ’ তথা পিষ্টকারী
হুত্বামাহ সম্পর্কে আল্লাহর বাণী- ‘কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে। আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি? এটা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি।’ (সুরা হুমাযাহ : আয়াত ৪-৬)
৭. ‘লাযা’ তথা লেলিহান অগ্নি শিখা
লাযা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কখনই নয়। নিশ্চয় এটা লেলিহান অগ্নি, যা চামড়া তুলে দিবে। সে (লেলিহান অগ্নি) সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছিল ও বিমখু হয়েছিল।’ (সুরা মাআ’রিজ : আয়াত ১৫-১৭)
৮. ‘দারুল বাওয়ার’ তথা ধ্বংসের ঘর
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা আল্লাহর নিয়ামতকে কুফরিতে পরিণত করেছে এবং স্বজাতিকে সম্মুখীন করেছে ধ্বংসের আলয়ে-দোযখের? তারা তাতে প্রবেশ করবে, সেটা কতই না মন্দ আবাস।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ২৮-২৯)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জাহান্নামের ভয়াবহতা থেকে হিফাজত করে জান্নাত লাভে আল্লাহ তাআলা বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এবিএস