ঈদ আনন্দে গরিব দুখীর পাশে দাঁড়াই
চলছে রমজানের শেষ দশক। আর মাত্র ১ দিন পরই রমজানের ঈদ। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য; আপন জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে জন্য মুখিয়ে আছে সবাই। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ হয়তবা ৭ জুলাই বৃহস্পতিবার হতে পারে।
প্রশ্ন হলো- আমরা ঈদের আনন্দ কার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেব? শুধুই কি পরিবারের লোকজনের সঙ্গে? নিশ্চয়ই না। আমরা ঈদের আনন্দ-উৎসব সবই উপভোগ করব আপনজনসহ আমাদের চারপাশের প্রতিবেশিদের নিয়ে।
ঈদের পূর্ব মুহূর্তে আমাদের প্রতিবেশিদের নিয়ে আমাদের ভাবনা কি? যে সব প্রতিবেশি আমাদের চারপাশে অসহায়, দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত। তাদের কথা বলছি- যারা দুবেলা পেটপুরে খেতে পায় না। সেমাই-চিনি, নতুন জামা-কাপড় বাদিই দিলাম; যারা নিত্য দিনের ব্যবহারের জন্য সামগ্রী, খাবার ও জামা-কাপড়ই যোগাড় করতে পারে না।
আমরা দেশজুড়ে তাকালেই দেখি অগনিত অসংখ্য বনি আদমের অসহায় চেহারা। যাদের জীবনে আসে না কোনো ঈদের আনন্দ। যাদের চিত্তে আগুন জ্বলে সর্বক্ষণ। যে জ্বালায় চোখে ঘুম আসে না। তাদের আবার ঈদের খুশি!
আসুন তাদের দিকে সাম্যের হাত বাড়িয়ে দিই। খোঁজ নিই আমার, আপনার, সবার পাড়া প্রতিবেশির। কেউ শিশু; কেউ কিশোর; কেউ বা আছে যুবক যারা আবার সঠিক পথ নির্দেশনা না পেয়ে সংসারে গ্লানি টানতে টানতে নিজের পরনের লুঙ্গিই কিনতে পারেনি। তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই। যারা বয়স্ক, বয়সের ভাড়ে নুজ্য; তাদের দিকে ভালবাসার দৃষ্টিতে তাকাই। এদের কারো প্রতি কোনো করুণা নয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এগিয়ে যাই। নিজেদের ঈদের কেনাকাটার কিছু অংশ তাদেরকেও দিই।
সমাজের অনেক সম্পদশালী আছেন যারা নিজেদের ঈদের আনন্দ উদযাপনে অনেক অর্থ খরচ করে। তাদের প্রতি আবেদন- তারা যেন ভুলে না যান দিকভ্রান্ত পথহারা শিশু-কিশোর ছেলে মেয়েদের। ভুলে না যান পাড়া প্রতিবেশি গরিব-দুঃখী অভাবি লোকদের কথা। যাদের পোশাকতো দূরের কথা খাবার কিনার সামর্থ্য নেই।
সমাজপতিরা যদি সাধ্যমতো সব অভাবীর কথা ভাবে; এগিয়ে আসে তাদের সহযোগিতায়, তবে অসহায় মানুষও উপভোগ করতে পারবে ঈদের আনন্দ। কারণ এ গরিব-দুঃখী অভাবি মানুষগুলো এ সমাজ ও রাষ্ট্রেরই অংশ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না; আল্লাহর তার প্রতি দয়া করে না।’ অর্থাৎ যারা গরিব দুঃখীর প্রতি সদয় হয় না; আল্লাহ তাআলাও সে মানুষের প্রতি সদয় হবে না। তা হতে পারে দুনিয়াও আখিরাতে।
পরিশেষে…
মানুষ স্রষ্টার সৃষ্টির অতুলনীয় সেরা জীব। সমাজের সম্পদশালীদের দিকে পুরোপুরি নির্ভরশীল না হয়ে কম-বেশি সবাই অসহায় মানুষের দিকে সুদৃষ্টি দিলে, তাদের জীবনমান ও ঈদ আনন্দে আসবে পরিবর্তন। দারিদ্র্যের মলিন মুখে ফুটবে অমলিন হাসি। ভুলে যাবে দুঃখ বেদনা। তারও ভোগ করবে ঈদের আনন্দ।
তাইতো কবির ভাষায় বলতে চাই-
“ঈদ এলো মানুষের জন্য; ঈদ এলো জীবনের জন্য।
একা একা হয় না তো ঈদ; হয় না তো ঈদের খুশী।
একা একা ঈদ করে সেই; যেই জন মূলত দোষী।
ঈদের আনন্দ যে ভাগ করে নেয়; সেই জন আসলেই ধন্য।”
সুতরাং মুসলিম উম্মাহ একে অপরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে প্রত্যেকেই ধন্য হতে চাই। তাই আল্লাহ তাআলা গরিব-দুঃখী-অসহায়কে ঈদের আনন্দ দিতে সম্পদশালীদের এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর