বিশ্বনবিকে প্রেরণে ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়া
বাইতুল্লাহ নির্মাণের সময় হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম পুত্র ইসমাইল আলাইহিস সালামকে সঙ্গে নিয়ে আল্লাহ তাআলার নিকট তিনটি আবেদন করেছিলেন। তন্মধ্যে তৃতীয় আবেদনটি ছিল সর্বশেষ এবং শ্রেষ্ঠ রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশ্বমানবতার মুক্তির লক্ষ্যে তাঁর নিজের বংশধরদের মধ্য থেকে প্রেরণ করার জন্য। আল্লাহ তাআলা তাঁদের দোয়া কবুল করেন। ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সেই আবেদন কুরআনে উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন-
‘হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের মধ্য হতে এমন একজন রাসুল প্রেরণ করুন, যিনি তাদের নিকট আপনার আয়াতসমূহ পাঠ করবে এবং তাদেরকে কিতাব (কুরআন) ও হিকমাত (হাদিসের জ্ঞান-প্রজ্ঞা) শেখাবে এবং তাদেরকে (শিরক-বিদাআত থেকে) পরিশুদ্ধ করবে; নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী মহাজ্ঞানী।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১২৯)
এ আয়াতটি হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের শেষ দোয়া। তাঁর এ দোয়াও আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইসমাইল আলাইহিস সালামের বংশধরদের মধ্যে প্রেরণ করেন।
এ জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি হলাম আমার পিতা ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়া, ঈসা আলাইহিস সালামের এর সুসংবাদ এবং আমার (মা) জননীর স্বপ্ন। (ফতহুর রাব্বানি)
এ আয়াতে কিতাব বলতে কুরআন এবং হিকমাত দ্বারা হাদিসকে বুঝিয়েছেন। কুরআনের আয়াতসমূহ তিলাওয়াতের পর কুরআন-হাদিস শিক্ষা দেয়ার কথা বলা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত সাওয়াব বা নেকি লাভেরও মাধ্যম। তবে তাঁর অর্থ, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য যদি বুঝা যায়, তাহলে তা হবে সোনায় সোহাগা।
কুরআনের অর্থ না বুঝে পড়ে লাভ নেই ভেবে তিলাওয়াতে উদাসীন হওয়া উচিত নয়। কারণ কুরআনের তিলাওয়াত করাও নেকি কাজ।
এ আয়াত অনুযায়ী রাসুল আগমনের উদ্দেশ্য হলো- কুরআনের তিলাওয়াত, কিতাব (ধর্মগ্রন্থ) এবং হিকমাত (হাদিসের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা) শিক্ষার পর মুসলিম উম্মাহকে শিরক এবং বিদাআত হতে মুক্ত করে পরিশুদ্ধ আত্মার অধিকারী করে তোলা। এবং কর্মের মাধ্যমে চরিত্রকে সম্পূর্ণ পবিত্র করে তোলা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ আয়াতের শিক্ষা, কুরআন তিলাওয়াত করে নেকি অর্জন, শিরক ও বিদাআত থেকে মুক্ত থেকে কর্মের মাধ্যমে পরিপূর্ণ পরিশুদ্ধতা এবং পবিত্রতা অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এবিএস