ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

কিবলা পরিবর্তন আনুগত্যের অনন্য নিদর্শন

প্রকাশিত: ০৭:৩২ এএম, ২৩ মে ২০১৬

কিবলা আরবি শব্দ। নামাজ আদায়ের দিক-নির্দেশক শব্দই হচ্ছে ‘কিবলা’। আর কিবলাতাইন বলে দুটি কিবলাকে বুঝানো হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর নির্দেশে হিজরি দ্বিতীয় বর্ষের শাবান মাসের ১৫ তারিখ জোহরের নামাজে কিবলা পরিবর্তন করেন। যে মসজিদে এ কিবলা পরিবর্তন হয়েছে, সে মসজিদটি আজও মসজিদে কিবলাতইন বা দুই কিবলার মসজিদ নামে পরিচিত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর। মদিনায় আগমনের পর কারণবশত বাইতুল মুকাদ্দাসকে কিবলা করে নামাজ আদায় করতেন। কিন্তু মনে মনে বাইতুল্লাহকে কিবলা হিসেবে কামনা করত বার বার আকাশের দিকে তাকাতেন।

অতপর সেই আকাঙ্ক্ষিত বরকতময় মূহূর্তটি ছিল হিজরি দ্বিতীয় সনের শাবান মাস। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদেরকে নিয়ে জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন । তখনো মসজিদুল আকসা মুসলিমদের কিবলা। নামাজরত অবস্থায়ই আল্লাহ তাআলা ওহি নাজিল করলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কিবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে, যা তারা করে। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৪৪)
 
ওহি নাজিলের সঙ্গে সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরো জামায়াত নিয়েই বাইতুল মুকাদ্দাসের দিক থেকে বাইতুল্লাহ (কা`বা) মুখী হয়ে নামাজের বাকি অংশ আদায় করেন। কিবলা পরিবর্তনের সাক্ষী হয়ে মদীনার একাংশেই দাঁড়িয়ে আছে মসজিদে কিবলাতাইন বা দুই কিবলার মসজিদ।

কিবলা পরিবর্তনের দিন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন ওয়াক্তের নামাজ আদায় করছিলেন তা নিয়ে মতভেদ থাকলেও মসজিদে কিবলাতাইন নিয়ে কারো কোনো মতভেদ নেই।

পৃথিবীর প্রাচীনতম মসজিদগুলোর অন্যতম এ মসজিদ আল কিবলাতাইন। দীর্ঘদিন ধরে এই মসজিদে দু’টি মিহরাব বা ইমামের দাঁড়ানোর স্থান বিদ্যমান ছিল। একটি ছিল বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে। আর অন্যটি ছিল বাইতুল্লাহর দিকে। পরবর্তীতে মসজিদের সংস্কারের প্রয়োজনে বাইতুল্লাহ মুখী মিহরাবটি রেখে অন্য মিহরাবটি ভেঙ্গে ফেলা হয়।

এ মসজিদে নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট দোয়া করলে মানুষের দোয়া আল্লাহ তাআলা কুবল করে থাকেন। যে কারণে একদিকে দুই কিবলার মসজিদ অন্য দিকে এ স্থানে দোয়া কবুল হয়, তাই বছরজুড়ে দেশ-বিদেশের মুসলমানদের আগমনে মুখরিত থাকে মসজিদ আল কিবলাতাইন।

এ মসজিদের নামাজরত অবস্থায় আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে আলাদা স্বাতন্ত্র ও অনন্য মর্যাদা দান করেন। আর সাহাবায়ে কিরাম নামাজরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহর কিবলা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিবলা পরিবর্তন করে পৃথিবীতে আনুগত্যের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।

তাইতো মুসলিম উম্মাহ মদিনা যিয়ারতে আসলে এ মসজিদে নামাজ আদায় করে আলাদা প্রশান্তি লাভ করেন। যা মুসলিম হৃদয়ে অনুসরণীয় আনুগত্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে অম্লান-অমলিন। আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে মদিনা যিয়ারতসহ মসজিদে কিবলাতাইন পরিদর্শন ও তথায় নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

আরও পড়ুন