রিযিক বণ্টনে আল্লাহর ফয়সালা
আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে মুসলিম জাতির জন্য ইমাম নির্ধারণ করেন। বাইতুল্লাহকে সমগ্র মুসলমানের নিরাপদ ও স্থায়ী সম্মিলনস্থল হিসেবে ঘোষণা করেন। অতপর হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এ নিরাপদ নগরীতে বসবাসকারী এবং আগমনকারীদের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা ও উত্তম আহার্যের দোয়া করেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে মুমিন ও কাফির তথা সব মানুষের রিযিক বণ্টনের ফয়সালার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেন। আল্লাহ বলেন-
এবং স্মরণ কর যে, ইবরাহিম দোয়া করেছিল, হে আমার প্রভু! এই শহরকে শান্তি ও নিরাপত্তার শহর বানিয়ে দাও। আর এর অধিবাসীদের মধ্য থেকে যারা আল্লাহ ও পরকালকে মানবে তাদেরকে সব রকমের ফলের আহার্য দান কর। জবাবে তাঁর রব বলেন, আর যে (আল্লাহকে) মানবে না, দুনিয়ার গুটি কয়েক দিনের জীবন-ধারনের সামগ্রী আমি তাকেও দান করবো। কিন্তু সব শেষে তাকে জাহান্নামের আজাবের মধ্যে নিক্ষেপ করবো এবং সেটি নিকৃষ্টতম আবাস। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১২৬)
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়ার প্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা মানুষের রিযিকের ফয়সালায় সুস্পষ্ট ঘোষণা দেন। এবং হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে জানিয়ে দেন যে, আমি শুধু মুমিন বান্দাকেই আহার্য দান করবো না বরং যারা অবিশ্বাসী, নাফরমান তাদেরকেও দুনিয়ার জীবনে রিযিক দান করবো।
কারণ সত্যনিষ্ঠ, সৎকর্মশীল ও সত্যের নেতৃত্ব এক কথা আর রিযিক ও আহার্য দান করা অন্য কথা। আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে রিযিক দান করে থাকেন। দুনিয়াতে সত্যনিষ্ঠ ও সৎকর্মশীল মুমিনরাই একমাত্র সত্যনিষ্ঠ নেতৃত্বের অধিকারী এ কথা সুস্পষ্ট কিন্তু রিযিক ও আহার্য মুমিন ও কাফের নির্বিশেষে সবাইকে দেয়া হবে। যাতে বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সকল বান্দা আল্লাহর অনুগ্রহের কথা বুঝতে পারে; তাঁর অসীম করুণা ও দয়া অনুধাবন করতে পারে।
এ আয়াত থেকে একথা স্বতস্ফূর্তভাবে প্রতিয়মান হয় যে, কারোর অর্থ-সম্পদের প্রাচুর্য দেখে কেউ যেন এ ধারণা না করে বসেন যে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট আছেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সে-ই নেতৃত্ব ও যোগ্যতার অধিকারী। না তা কখনোই নয়। দুনিয়াতে রিযিকের এ বণ্টন আল্লাহর তাআলার এক অপূর্ব হিকমাত।
সুতরাং আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি। তাঁর বিধিবিধান যথাযথ পালনে স্বচেষ্ট থাকি। তাঁর অবাধ্যতা থেকে ফিরে এসে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের বিধান বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস