ইস্তেখারার দোয়া দেখে পড়া যাবে কি?
ইস্তেখারা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো, কোন জিনিসের ক্ষেত্রে কল্যাণ বা সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রার্থনা করা। শরিয়তের পরিভাষায় দীনি বা দুনিয়াবি যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সঠিক সিদ্ধন্তের জন্য বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করাকে ইস্তেখারা বলা হয়।
নবিজির (সা.) শেখানো পদ্ধতিতে ইস্তেখারার দোয়া যেহেতু নামাজের পরে পড়তে হয়, নামাজের ভেতরে নয়, তাই মুখস্ত না থাকলে ইস্তেখারার দোয়া দেখেও পড়া যেতে পারে।
ইস্তেখারার পদ্ধতি ও দোয়া
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে আল্লাহর কাছে ইস্তেখারা করার নিয়ম ও দোয়া এভাবে শেখাতেন যেভাবে আমাদেরকে তিনি কোরআনের সুরা শেখাতেন। তিনি বলতেন, আপনাদের কেউ কোন কাজ করার সংকল্প করলে তিনি যেন ফরজ নামাজ ছাড়া দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন তারপর এ দোয়া পড়েন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ فَإِنَّك تَقْدِرُ وَلَا أقدر وَتعلم وَلَا أعلم وَأَنت علام الغيوب اللَّهُمَّ إِنَّ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقَدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আস্তাখীরুকা বিইলমিকা ওয়া আস্তাক্বদিরুকা বিকুদরাতিকা ওয়া আস্আলুকা মিন ফাযলিকাল আযীমি ফাইন্নাকা তাক্বদিরু ওয়ালা আক্বদিরু ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব, আল্লহুম্মা ইন্ কুনতা তা’লামু আন্না হাযাল আমরা খয়রুল লী ফী দীনী ওয়ামাআশী ওয়া আক্বিবাতি আমরী ফাক্বদুরহু লী ওয়া ইয়াসসিরহু লী সুম্মা বারিক লী ফীহি ওয়া ইন কুনতা তালামু আন্না হাযাল আমরা শাররুল লী ফী দীনী ওয়ামাআশী ওয়া আক্বিবাতি আমরী ফাসরিফহু আন্নী ওয়াসরিফনী আনহু ওয়াক্বদুরলিয়াল খয়রা হায়সু কানা সুম্মা আরযিনী বিহী
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্য প্রার্থনা করছি, আপনার শক্তির সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। আপনিই শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী, আমার কোনো ক্ষমতা নেই। আপনি সব কিছুই জানেন, আমি কিছুই জানি না। সব গোপন কথা আপনার জানা। হে আল্লাহ! যদি আপনি জানেন এ কাজটি আমার জন্যে আমার দীনে, দুনিয়ায়, আমার জীবনে, আমার আখেরাতে ভাল হবে, তাহলে তা আমার জন্যে ব্যবস্থা করে দিন, আমার জন্য তা সহজ করে দিন। আমার জন্য তাতে বরকত দান করুন। আর আপনি যদি এ কাজকে আমার জন্য আমার দীন, আমার জীবন, আমার আখেরাতে ক্ষতিকর মনে করেন, তাহলে আমাকে তার থেকে আর তাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন আর আমার জন্যে যা কল্যাণকর তা নির্ধারণ করুন এবং সে ব্যাপারে আমাকে সন্তুষ্ট করুন। (সহিহ বুখারি: ১১৬২)
সহিহ বুখারিতে সংকলিত এ হাদিসটি থেকে আমরা ইস্তেখারা করার পদ্ধতি এবং ইস্তেখারার দোয়াও জানতে পারি। ইস্তেখারার নিয়তে দুই রাকাত নামাজের পর হাদিসে উল্লিখিত দোয়াটি পড়তে হয়। দোয়ায় দুইবার ‘হাযাল আমরা’ বা ‘এ কাজটি’ বলার সময় ওই বিষয়টির কথা মনে করতে হয় যে বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা হচ্ছে।
ওএফএফ/এমএস