যে স্বপ্নদোষে গোসল ফরজ হয়
প্রপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারীদের মাঝে মাঝে স্বপ্নদোষ হওয়া বা স্বপ্নে যৌন কর্মকাণ্ড করতে দেখা, স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাগমোচন ও বীর্যপাত হওয়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি বয়ঃসন্ধি বা উঠতি তারুণ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে, তবে বয়ঃসন্ধিকাল পার হবার অনেক পরেও এটি ঘটতে পারে। এতে কোনো গুনাহ নেই। কারণ ঘুমন্ত অবস্থায় যা ঘটে তার ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, তিন ধরণের লোকের ওপর থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে নিদ্রিত ব্যক্তি, যতক্ষণ না জাগ্রত হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, যতক্ষণ না আরোগ্য লাভ করে এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক, যতদিন না সে বালেগ হয়। (সুনানে আবু দাউদ)
স্বপ্নে যৌন কর্মকাণ্ড করতে দেখলে ঘুম থেকে ওঠার পর যদি বীর্যপাত হয়, শরীর বা পোশাকে সিক্ততা বা নাপাকির দাগ দেখা যায়, তাহলে গোসল ফরজ হয়। স্বপ্নে যৌন কর্মকাণ্ড করতে দেখা সত্ত্বেও যদি বীর্যপাত না হয়, শরীর বা কাপড়ে সিক্ততা বা নাপাকির চিহ্ন না দেখা যায়, তাহলে গোসল ফরজ হয় না। অর্থাৎ শুধু এ ধরনের স্বপ্ন দেখাই গোসল ফরজ হওয়ার কারণ নয়।
পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য। পুরুষের মতো নারীদেরও যদি স্বপ্নদোষ হয় এবং ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর বা পোশাকে যদি নাপাকির চিহ্ন দেখা যায়, তাহলে তাদের গোসল ফরজ হয়। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, আবু তালহার (রা.) স্ত্রী উম্মে সুলাইম (রা.) আল্লাহর রাসুল (স.)-এর নিকট এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা সত্যের বিষয়ে সংকোচ করেন না। কোনো নারীর স্বপ্নদোষ হলে কি তার উপর গোসল ফরজ হয়? উত্তরে আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ, যদি সে পানি বা সিক্ততা দেখতে পায়। (সহিহ বুখারি)
আরও যেসব কারণে গোসল ফরজ হয়
১. পুরুষ অথবা নারী ঘুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায় যে কোনো কারণে উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলে গোসল ফরজ হয়ে যায়।
২. স্বামী স্ত্রী শারীরিকভাবে মিলিত হলে গোসল ফরজ হয়ে যায়। মিলন প্রাথমিক অবস্থায় থাকলেও বা বীর্যপাত না হলেও গোসল ফরজ হয়ে যায়।
৩. নারীদের মাসিক বা হায়েজ শেষ হলে গোসল করে পবিত্র হতে হয়।
৪. নারীদের নেফাস বা সন্তান জন্মদান পরবর্তী রক্তপাত বন্ধ হওয়ার পর গোসল করে পবিত্র হতে হয়।
ওএফএফ/এএসএম