মসজিদে ঢোকার সময় শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
মসজিদে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা সুন্নত। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মসজিদে প্রবেশ করার সময় বলতেন,
أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
উচ্চারণ: আউজু বিল্লাহিল আজিমি ওয়া বিওয়াজহিহিল কারিমি ওয়া সুলতানিহিল কাদিমি মিনাশ শাইতানির রাজিম
অর্থ: আমি মহান আল্লাহর কাছে তাঁর করুণাময় সত্ত্বা ও চির পরাক্রমাশালী শক্তির মাধ্যমে অনিষ্টকারী শয়তান থেকে আত্মরক্ষার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করছি।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ এ দোয়া পাঠ করলে শয়তান বলে, আমার কাছ থেকে সে সারা দিনের জন্য রক্ষা পেয়ে গেল। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৬৬)
মসজিদে ঢোকার সময় এই দোয়াটি পড়াও সুন্নত
بِسْمِ الله وَالصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلى رَسُوْلِ الله اَللّهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِك
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ, ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসূলিল্লাহ্, আল্লাহুম্মা-ফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক।
অর্থ: আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করছি, সালাম ও দরুদ বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসুলের ওপর। হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাগুলো খুলে দিন
আবু উসাইদ সাঈদী (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন আপনারা কেউ মসজিদে প্রবেশ করেন তখন নবির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওপর সালাম পাঠাবেন এবং বলবেন, আল্লাহুম্মা-ফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাগুলো খুলে দিন। আর যখন মসজিদ থেকে বের হবেন তখন বলবেন, আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিক অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করি। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৬৫)
মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মহিমান্বিত স্থান। কোরআনে আল্লাহ তাআলা মসজিদকে নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন এবং মসজিদ আবাদকারীদের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ বলেন, একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, ওরা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুরা বাকারা: ১৮)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা মসজিদকে মর্যাদায় সমুন্নত করার ও মসজিদে তার নাম স্মরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং মসজিদে ইবাদতকারীদের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, যেসব গৃহকে মর্যাদায় সমুন্নত করতে এবং তাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এমন ব্যক্তিরা যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখেনা, তারা ভয় করে সেই দিনকে যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। (সুরা নুর: ৩৬, ৩৭)
মসজিদ শুধু আল্লাহর জন্য উল্লেখ করে মসজিদে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করতে নিষেধ করে আরেকটি আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় মসজিদগুলো শুধু আল্লাহর জন্য, কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না। (সুরা জিন: ১৮)
তাই মসজিদে আল্লাহর জিকির ও ইবাদতের নিয়তে যাওয়া উচিত এবং মসজিদে প্রবেশ করার পর দুনিয়াবি কাজকর্ম, কথাবার্তা থেকে বিরত থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত।
ওএফএফ/এমএস