নবজাতক মেয়েশিশুর কানে কি আজান দিতে হবে?
সন্তান জন্মের পর সন্তানের কানে আজান দেওয়া সুন্নত। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার নাতি হাসানের কানে আজান দিয়েছেন বলে বর্ণিত হয়েছে। আবু রাফে (রা.) বলেন,
رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ أَذّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصّلَاةِ.
আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাসান বিন আলি (রা.) জন্মগ্রহণ করার পর তার কানে নামাজের আজানের মত আজান দিতে দেখেছি। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১০৫)।
বিখ্যাত হাদিস ব্যাখ্যাকার মোল্লা আলি কারি (রহ.) এ হাদিস উল্লেখ করে বলেছেন, এই হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, নবজাতকের কানে আজান দেওয়া সুন্নত। (মিরকাতুল মাফাতিহ: ৮/৮১)
এ ছাড়া কিছু হাদিসে ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই আলেমরা নবজাতকের ডান কানে আজান দেওয়ার পাশাপাশি বাম কানে ইকামত দেওয়াও মুস্তাহাব বলেছেন।
আজান-ইকামতের ক্ষেত্রে ছেলে বা মেয়ে সন্তানের মধ্যে পার্থক্য নেই। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই জন্মের পর কানে আজান-ইকামত দেওয়া সুন্নত। অনেকে ছেলে হলে কানে আজান-ইকামত দেয়, মেয়ে হলে দেয় না বা শুধু আজান দেয় ইকামত দেয় না। এটা ঠিক নয়। ছেলে ও মেয়ে সন্তান উভয়ের ক্ষেত্রেই ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিতে হবে।
নবজাতকের কানে নামাজের আজানের মতোই আজান দিতে হবে। আজানের সব বাক্য উচ্চারণ করতে হবে। হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় নামাজের আজানের মতোই চেহারা ডানে-বামে ঘোরানো উত্তম।
পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও নবজাতক শিশুর কানে আজান দিতে পারেন। এই আজানের মাধ্যমে মানুষকে নামাজের দিকে ডাকা হয় না, তাই অনেক বেশি উচ্চৈস্বরে এ আজান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। নারীরা নিচু স্বরে শিশুর ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ওই নারীর হায়েজ-নেফাস থেকে পবিত্র থাকা জরুরী।
সন্তান জন্মগ্রহণ করার পর মসজিদে আজান হলেও নবজাতকের কানে পৃথকভাবে আজান দেওয়া সুন্নত। কারণ এটি একটি স্বতন্ত্র সুন্নত, মসজিদের আজানের মাধ্যমে এ সুন্নত আদায় হবে না।
ওএফএফ/এমএস