নামাজে সুরা ফাতেহার কোনো আয়াত ছুটে গেলে করণীয়
একা নামাজ আদায়কারী বা মুনফারিদ এবং ইমামের জন্য ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে এবং সুন্নত-নফলের প্রতি রাকাতে কোরআন তিলাওয়াত করা ফরজ। পূর্ণ সুরা ফাতেহা তিলাওয়াত করা ওয়াজিব। নবিজি (সা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন,
لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
যে ব্যক্তি সুরা ফাতিহা পাঠ করে না তার নামাজ হয় না। (সহিহ বুখারি)
আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,
مَنْ صَلَّى صَلاَةً لَمْ يَقْرَأْ فِيهَا بِأُمِّ الْقُرْآنِ فَهْىَ خِدَاجٌ ثَلاَثًا غَيْرُ تَمَامٍ
যে ব্যক্তি কোন নামাজ আদায় করল অথচ সূরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার নামাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। এ কথাটি তিনি তিনবার বলেন। (সহিহ মুসলিম)
তাই ইমাম ইমাম বা একা নামাজ আদায়কারী যদি ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে এবং সুন্নত নফল নামাজের কোনো রাকাতে সুরা ফাতেহা না পড়ে বা সুরা ফাতেহার কোনো আয়াত ছুটে যায়, তাহলে সাহু সিজদা দেওয়া ওয়াজিব। সুরা ফাতেহার একটি আয়াত ছুটে যাওয়ার পরও কেউ যদি ভুল করে বা ইচ্ছকৃত সাহু সিজদা না করে, তাহলে ওই নামাজটি পুনরায় পড়ে নেওয়া আবশ্যক।
মুক্তাদি কি সুরা ফাতেহা পড়বে?
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও তার অনুসরণকারী আলেমদের মতে নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ অপরিহার্য হওয়া সম্পর্কে বর্ণিত হাদিসগুলো একা নামাজ আদায়কারী ও ইমামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, মুক্তাদির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
মুক্তাদি ইমামের পেছনে সুরা ফাতেহা বা অন্য কোনো কিরাত পড়বে না, বরং চুপ থাকবে। ইমামের কেরাত শোনা গেলে ইমামের কেরাত শুনবে, না শোনা গেলেও চুপ থাকবে। যেহেতু জামাতে নামাজের ক্ষেত্রে ইমামের কেরাতই মুক্তাদিদের কেরাত গণ্য হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন,
مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ، فَقِرَاءَةُ الْإِمَامِ لَهُ قِرَاءَةٌ
যে ইমামের পেছনে নামাজ পড়ছে, ইমামের কেরাতই তার কেরাত। (সুনানে ইবনে মাজা)
ইমাম যখন কোরআন তিলাওয়াত করেন, তখন ইমামের তিলাওয়াত শোনাও মুক্তাদিদের ওপর ফরজ হয়ে যায়। কারণ আল্লাহ বলেছেন,
وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
যখন কোরআত পড়া হয়, তখন চুপ থেকে মনোযোগ দিয়ে শোনো, হয়তো তোমাদের দয়া করা হবে। (সুরা আরাফ: ২০৪)
ওএফএফ/জিকেএস