ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

স্ত্রীর অসুস্থতায় সেবা করার ফজিলত

ওমর ফারুক ফেরদৌস | প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

সুখী পরিবার গঠন করতে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। স্বামীর যেমন স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব আছে, স্বামীর প্রতিও স্ত্রীর দায়িত্ব আছে। দুজনেরই কর্তব্য পরস্পরের অধিকার রক্ষা করা, পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব পালন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ لَهُنَّ مِثۡلُ الَّذِیۡ عَلَیۡهِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ

স্ত্রীদের রয়েছে বিধি মোতাবেক অধিকার যেমন আছে তাদের উপর (স্বামীদের) অধিকার। (সুরা বাকারা: ২২৮)

ইসলাম স্ত্রীকে নিজের চরিত্র হেফাজত করার নির্দেশ দেয়, স্বামীর আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়। স্বামীকে নির্দেশ দেয় স্ত্রীর আবাসন ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতে, স্ত্রীর সাথে উত্তম ও ন্যায় আচরণ করতে, সহনশীল হতে। স্ত্রীর প্রতি সর্বক্ষেত্রে ন্যায় উত্তম আচরণ করা স্বামীর ওপর ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ عَاشِرُوۡهُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ فَاِنۡ كَرِهۡتُمُوۡهُنَّ فَعَسٰۤی اَنۡ تَكۡرَهُوۡا شَیۡئًا وَّ یَجۡعَلَ اللّٰهُ فِیۡهِ خَیۡرًا كَثِیۡرًا
তাদের সাথে দয়া ও সততার সঙ্গে জীবন যাপন কর, যদি তাদেরকে না-পছন্দ কর, তবে হতে পারে যে তোমরা যাকে না-পছন্দ করছ, তারই মধ্যে আল্লাহ বহু কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন। (সুরা নিসা: ১৯)

স্বামী অসুস্থ হলে স্ত্রীর যেমন দায়িত্ব তার পাশে থাকা, দেখাশোনা করা, সেবা করা, স্ত্রী অসুস্থ হলে স্বামীরও দায়িত্ব তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, তার দেখাশোনা করা, সেবা করা। স্ত্রী যেমন স্বামীর সেবা করলে সওয়াব পাবেন, স্ত্রীর সেবা করলে স্বামীও সওয়াব লাভ করবেন।

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ওসমান (রা.) বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ, তার স্ত্রী আল্লাহর রাসুলের (সা.) মেয়ে অসুস্থ ছিলেন। তখন নবিজি (সা.) তাকে বলেন, বদর যুদ্ধে যোগদানকারীর সমপরিমাণ সওয়াব ও (গনিমতের) অংশ তুমি পাবে। (সহিহ বুখারি)

অসুস্থতা ছাড়া অন্যান্য সময়ও স্ত্রীর সেবা করলে স্বামী সওয়াব পাবেন। ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতে শুনেছি, পুরুষ তার স্ত্রীকে পানি পান করালে সেজন্য সওয়াব লাভ করে। তিনি বলেন, এ কথা শুনে আমি আমার স্ত্রীর কাছে গেলাম, তাকে পানি পান করালাম তারপর তাকে বললাম আমি নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে কী শুনেছি। (মু’জামুল কাবির লিত-তাবরানী)

এ ছাড়া বিভিন্ন হাদিসে স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণের গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুমিনদের মাঝে ঈমানে সেই পরিপূর্ণ, তাদের মাঝে যার চরিত্র সুন্দরতম। তোমাদের মধ্যে উত্তম হলো তারা, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। (সুনানে তিরমিজি)

আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন তাদেরকে আপনারা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছেন, আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তাদের সাথে সহবাস বৈধ করেছেন। (তাবারি ফিত-তাফসীর)

নারীদের আবেগ বেশি। তাই তারা অনেক ক্ষেত্রে বেশি অভিমান করতে পারে, অবুঝের মতো আচরণ করতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে স্বামীর কর্তব্য সহনশীল থাকা। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, নারীদের প্রতি কল্যাণের (ও সদাচরণের) উপদেশ অঙ্গীকার গ্রহণ করুন। পাজরের হাঁড়ের সবচেয়ে বেশি বাঁকা হল এর ওপরের অংশ। আপনি তাকে সোজা করতে গেলে ভেঙ্গে ফেলবেন। আর তাকে যথাবস্থায় রাখলে তা সদা বাঁকাই থেকে যাবে। নারীদের প্রতি কল্যাণের উপদেশ গ্রহণ করুন। (সহিহ ‍বুখারি)

ওএফএফ/জেআইএম

আরও পড়ুন