নামাজের মধ্যে টুপি পড়ে গেলে করণীয় কী?
নামাজের মধ্যে মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে যদি এক হাত দিয়ে তা উঠিয়ে পরে নেওয়া সম্ভব হয় তাহলে টুপি উঠিয়ে পরে নেওয়াই উত্তম। আর যদি দুই হাত ব্যবহার করা ছাড়া ওঠানো সম্ভব না হয় তাহলে সেক্ষেত্রে টুপি না ওঠানোই উচিত।
কারণ টুপি ওঠাতে গিয়ে ‘আমলে কাসির’ বা বেশি কাজ হয়ে গেলে নামাজ ভেঙে যেতে পারে। ফুকাহায়ে কেরামের পরিভাষায় ‘আমলে কাসির’ বলা হয়, নামাজে এমন নড়াচড়া বা কাজকে যে নড়াচড়া বা কাজের কারণে তাকে দেখে নামাজরত নয় বলে ধারণা হয়। নামাজে ‘আমলে কাসির’ করলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়।
নামাজরত অবস্থায় মাথা থেকে টুপি পড়ে যাওয়ার পর টুপি ওঠানোর জন্য কেউ যদি আমলে কাসির করে অর্থাৎ সময় নিয়ে দুই হাত এমনভাবে ব্যবহার করে টুপি পরিধান করে যে তাকে দেখে মনে হয় সে নামাজ পড়ছে না, তাহলে তার নামাজ ভেঙে যাবে। তাই টুপি ওঠানোর জন্য যেন আমলে কারিস না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দাঁড়ানো বা রুকু অবস্থায় মাথা থেকে টুপি পড়ে গেলে তা ওঠানোর চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেহেতু এ অবস্থায় আমলে কাসির না করে টুপি ওঠানো অসম্ভব। সিজদা বা বৈঠকের সময় টুপি পরে গেলে এক হাত দিয়ে উঠিয়ে পরে নেবে।
টুপি পরিধান করা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে টুপি পরেছেন। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেইন, তাবে-তাবেইন এবং পরবর্তী সময়ে সব যুগে মুসলমানদের মধ্যে টুপি পরার আমলের ধারাবাহিকতা চলে আসছে।
হাসান বিন মেহরান থেকে বর্ণিত, একজন সাহাবী বলেছেন, আমি আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে তার দস্তরখানে খেয়েছি এবং তার মাথায় সাদা টুপি দেখেছি। (আল ইসাবা: ৪/৩৩৯)
সুলাইমান ইবনে আবি আবদিল্লাহ বলেন, আমি প্রথম সারির মুহাজিরগণকে দেখেছি তারা সুতির পাগড়ি পরিধান করতেন। কালো, সাদা, লাল, সবুজ, হলুদ ইত্যাদি রংয়ের। তারা পাগড়ির কাপড় মাথায় রেখে তার উপর টুপি রাখতেন। অতপর তার উপর পাগড়ি ঘুরিয়ে পরতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১২/৫৪৫)
নামাজ আদায়ের সময়ও টুপি পরিধান করা সুন্নত। তবে এটা ওয়াজিব বা অপরিহার্য নয়। টুপি ছাড়া নামাজ আদায় করলেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে নিছক অলসতার কারণে খালি মাথায় নামাজ আদায় করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়।
ওএফএফ/জেআইএম