ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

ভালো কাজে সহযোগিতার গুরুত্ব

ওমর ফারুক ফেরদৌস | প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২৪

নিজে ভালো কাজ করার পাশাপাশি ভালো কাজে সহযোগিতা করা, সমাজে ভালো কাজের বিস্তার ঘটানো মুমিনের কর্তব্য। নিজে অন্যায় মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা যেমন জরুরি, অন্যায় কাজে সহযোগী না হওয়া, সমাজে অন্যায় কাজ হলে সাধ্য অনুযায়ী বাধা দেওয়াও জরুরি। ভালো কাজে সহযোগিতা করা নিজে ভালো কাজ করার মতো, অন্যায় কাজে সহযোগিতা করা নিজে অন্যায় কাজ করার মতেই। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَ تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَ التَّقۡوٰی وَ لَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ اِنَّ اللّٰهَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ
সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আল্লাহকে ভয় কর; নিশ্চয় আল্লাহ আজাব প্রদানে কঠোর। (সুরা মায়েদা: ২)

ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, এ আয়াতে সব মানুষকে সব রকম ভালো কাজে সাহায্য করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ ভালো কাজে পরস্পরের সহযোগী হও, পরস্পরকে উৎসাহ দাও এবং ভালো কাজ করো, খারাপ কাজ থেকে বিরত থাক। এই সহযোগিতা বিভিন্নভাবে হতে পারে। যার সম্পদ আছে সে সম্পদ দিয়ে সাাহয্য করতে পারে, যার শক্তি আছে সে শক্তি দিয়ে সাহায্য করতে পারে। (আল-জামি’ লিআহকামিল কোরআন)

পরামর্শ দিয়ে ভালো কাজে সাহায্য করা

ভালো কাজের পথ দেখানো, পদ্ধতি বা উপায় বলে দেওয়া, ভালো বুদ্ধি বা পরামর্শ দেওয়াও ভালো কাজে সাহায্য করার মধ্যে পড়ে। শুধু এইটুকু সাহায্য করার কারণেও আল্লাহ তাআলা সওয়াব দান করেন। আবু মাসউদ আনসারি (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার সওয়ারি চলতে পারছে না, আপনি আমাকে একটি সওয়ারির ব্যবস্থা করে দিন। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ সময় তো আমার কাছে তোমাকে দেওয়ার মতো কোন সওয়ারি নেই। এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এমন এক লোকের কথা বলতে পারি, যে তার সওয়ারির ব্যবস্থা করে দিতে পারে। এ কথা শুনে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,

مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مثل أجر فَاعله
যে ব্যক্তি কাউকে কোন কল্যাণের দিকে পথপ্রদর্শন করে, সে ওই কাজ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে। (সহিহ মুসলিম: ১৮৯৩)

আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
إِنَّ الدَّالَّ عَلَى الْخَيْرِ كَفَاعِلِهِ
ভালো কাজের পথপ্রদর্শক ওই কাজ সম্পাদনকারীর মতোই। (সুনানে তিরমিজি: ২৬৭০)

মুমিনরা পরস্পরকে ভালো কাজের উপদেশ দেয়
কোরআনে আল্লাহ তাআলা মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন,
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ وَ تَوَاصَوۡا بِالۡمَرۡحَمَۃِ اُولٰٓئِكَ اَصۡحٰبُ الۡمَیۡمَنَۃِ

যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের, আর পরস্পরকে উপদেশ দেয় দয়া-অনুগ্রহের। তারাই সৌভাগ্যবান। (সুরা বালাদ: ১৭, ১৮)

এ আয়াতে ঈমানের পর মুমিনের কর্তব্য হিসেবে অন্য মুসলিম ভাইদের ধৈর্যধারণ ও দয়ার উপদেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ধৈর্য অর্থ নিজেকে মন্দ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখা ও সৎকর্ম করা। দয়া অর্থ অপরের প্রতি দয়াদ্র হওয়া। অপরের কষ্টকে নিজের কষ্ট মনে করে তাকে কষ্ট দেওয়া ও তার ওপর জুলুম করা থেকে বিরত হওয়া। ধৈর্য ও দয়ার গুণ নিজে অর্জন করতে হবে, অন্যদেরও সে উপদেশ দিতে হবে।

সুরা আসরে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَالْعَصْرِ إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
শপথ মহাকালের। নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়। (সুরা আসর: ১-৩)

অর্থাৎ দুনিয়া ও আখেরাতে সফল তারাই যারা ঈমান আনে, নেক কাজ করে এবং মুসলিম সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পরস্পরের কল্যাণকামী হয়। পরস্পরকে ধৈর্য ও সত্যের উপদেশ দেয়। ভালো কাজ করার উপদেশ দেয়, মন্দা কাজ থেকে বিরত থাকার উপদেশ দেয়।

ওএফএফ/জেআইএম

আরও পড়ুন