ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

পঞ্চম তারাবিহর তিলাওয়াতে আলোচিত বিধিবিধান

ওমর ফারুক ফেরদৌস | প্রকাশিত: ০৮:৫৩ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২৪

আজ (১৫ মার্চ) ৪ রমজান দিবাগত রাতে ইশার পর পঞ্চম দিনের তারাবিহ নামাজে আমাদের দেশের মসজিদগুলোতে কোরআনের পূর্ণ সপ্তম পারা ও অষ্টম পারার প্রথমার্ধ তিলাওয়াত করা হবে। সুরা মায়েদার ৮৩ নং আয়াত থেকে শুরু হয়ে তিলাওয়াত হবে সুরা আনআমের ১৬৫ নং আয়াত পর্যন্ত।

পবিত্র কোরআনের এ অংশে দৈনন্দিন জীবন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ যে বিধিবিধান আলোচিত হয়েছে:

১. আল্লাহর নামে কৃত শপথকে কোনো কল্যাণকর কাজের জন্য প্রতিবন্ধক বানানো উচিত নয়। কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করার পর যদি মনে হয়, শপথের বিপরীত কাজটিই কল্যাণকর, তাহলে তার কর্তব্য শপথ ভেঙে কল্যাণকর কাজটি করা এবং শপথের জন্য কাফফারা দিয়ে দেওয়া। শপথের কাফফারা দেওয়ার ৩টি পদ্ধতি রয়েছে: ১. একজন ক্রীতদাস মুক্ত করা, ২. দশ জন মিসকিনকে খাদ্য বা পোশাক দান করা, ৩. তিনটি রোজা রাখা। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেন,

لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰهُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَلٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ فَکَفَّارَتُهٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَهۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُهُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ

আল্লাহ তোমাদের অর্থহীন কসমের জন্য তোমাদের পাকড়াও করবেননা, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ কসমসমূহের জন্য পাকড়া করবেন যেগুলিকে তোমরা (ভবিষ্যত বিষয়ের প্রতি) দৃঢ় কর, সুতরাং ওর কাফফারা হচ্ছে দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম ধরণের খাদ্য প্রদান করা, যা তোমরা নিজ পরিবারের লোকদেরকে খাইয়ে থাক, কিংবা তাদেরকে পরিধেয় বস্ত্র দান করা (মধ্যম ধরনের), কিংবা একজন দাস কিংবা দাসী মুক্ত করা। আর যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখেনা সে (একাধারে) তিন দিন সিয়াম পালন করবে; এটা তোমাদের কসমসমূহের কাফফারা যখন তোমরা কসম কর অতঃপর ভঙ্গ কর। নিজেদের কসমসমূহকে রক্ষা করবে। এই রূপেই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় বিধানসমূহ বর্ণনা করেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (সুরা মায়েদা: ৮৯)

২. মদ্যপান করা ও জুয়া খেলা মূর্তি পূজার মতোই হারাম ও গর্হিত পাপ। শয়তান মদ ও জুয়ার সাহায্যে মানুষের মধ্যে শত্রুতা ও মনোমালিন্য সৃষ্টি করতে চায়, নামাজ ও আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে রাখতে চায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡخَمۡرُ وَ الۡمَیۡسِرُ وَ الۡاَنۡصَابُ وَ الۡاَزۡلَامُ رِجۡسٌ مِّنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ فَاجۡتَنِبُوۡهُ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ اِنَّمَا یُرِیۡدُ الشَّیۡطٰنُ اَنۡ یُّوۡقِعَ بَیۡنَکُمُ الۡعَدَاوَۃَ وَ الۡبَغۡضَآءَ فِی الۡخَمۡرِ وَ الۡمَیۡسِرِ وَ یَصُدَّکُمۡ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ عَنِ الصَّلٰوۃِ ۚ فَهَلۡ اَنۡتُمۡ مُّنۡتَهُوۡنَ

হে মুমিনগণ, নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ নাপাক, শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। শয়তান মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করতে চায়। আর চায় আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে তোমাদের বাধা দিতে। অতএব, তোমরা কি বিরত হবে না? (সুরা মায়েদা: ৯০, ৯১)

৩. মুহরিম অবস্থায়ও সমুদ্রের মাছ ও প্রাণী শিকার করা ও খাওয়া হালাল। আল্লাহ তাআলা বলেন,

اُحِلَّ لَکُمۡ صَیۡدُ الۡبَحۡرِ وَطَعَامُهٗ مَتَاعًا لَّکُمۡ وَ لِلسَّیَّارَۃِ وَ حُرِّمَ عَلَیۡکُمۡ صَیۡدُ الۡبَرِّ مَا دُمۡتُمۡ حُرُمًا وَ اتَّقُوا اللّٰهَ الَّذِیۡۤ اِلَیۡهِ تُحۡشَرُوۡنَ

সমুদ্রের শিকার ও তা ভক্ষণ তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে, তোমাদের আর সফরকারীদের ভোগের জন্য। ইহরাম অবস্থায় থাকা পর্যন্ত স্থলের শিকার তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে। আল্লাহকে ভয় কর যার কাছে তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে। (সুরা মায়েদা: ৯৬)

৪. মৃত প্রাণী, প্রবাহমান রক্ত, শূকরের মাংস ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে জবাইকৃত পশুর খাওয়া হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন,

قُلۡ لَّاۤ اَجِدُ فِیۡ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیَّ مُحَرَّمًا عَلٰی طَاعِمٍ یَّطۡعَمُهٗۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّکُوۡنَ مَیۡتَۃً اَوۡ دَمًا مَّسۡفُوۡحًا اَوۡ لَحۡمَ خِنۡزِیۡرٍ فَاِنَّهٗ رِجۡسٌ اَوۡ فِسۡقًا اُهِلَّ لِغَیۡرِ اللّٰهِ بِهٖ ۚ فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ رَبَّکَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ

তুমি বল ওহির মাধ্যমে আমার কাছে যে বিধান পাঠানো হয়েছে তাতে কোন আহারকারীর জন্য কোন বস্তু হারাম করা হয়েছে এমন কিছু আমি পাইনি; তবে মৃত জন্তু, প্রবাহিত রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহর নামে জবাই করা হয়নি তা হারাম করা হয়েছে। কেননা ওটা নাপাক ও শারিয়ত বিগর্হিত বস্তু। কিন্তু যদি কোন লোক স্বাদ আস্বাদন ও সীমা লংঘনের উদ্দেশ্য ব্যতীত নিরূপায় হয়ে পড়ে (তার জন্য ওটা খাওয়া বৈধ)। কেননা আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহশীল। (সুরা আনআম: ১৪৫)

ওএফএফ/এএসএম

আরও পড়ুন