ফরজের অপূর্ণতা নফল দিয়ে পূরণ হয়
ইসলামে নফল আমল বলা হয় এমন আমলসমূহকে যেগুলো ফরজ বা ওয়াজিবের মতো বাধ্যতামূলক নয়, তবে সেগুলো করলে সাওয়াব লাভ হয়। যেমন প্রতিদিন পাঁচওয়াক্তের নির্ধারিত ফরজ নামাজগুলো আদায় করা ফরজ, বেতর আদায় করা ওয়াজিব। এর অতিরিক্ত নামাজগুলো সুন্নত ও নফল। সম্পদশালী মুসলমানদের ওপর প্রতি বছর তার বর্ধনশীল সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ দান করে দেওয়া ফরজ, সদকায়ে ফেতর ওয়াজিব। এগুলোর বাইরে অন্যান্য সাধারণ দানগুলো নফল সদকা গণ্য হয়।
হাদিসে এসেছে, কেয়ামতের দিন হিসাবের সময় নফল আমল ফরজ আমলের পরিপুরক হবে। কারো যদি ফরজ আমলে অপূর্ণতা থাকে, কিন্তু কিছু নফল আমল থাকে, তাহলে তার ফরজ আমলের অপূর্ণতা পূরণ করা হবে নফল আমলের মাধ্যমে।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম তার ফরজ নামাজের হিসাব নেবেন। যদি ফরজ নামাজ পরিপূর্ণ ও ঠিক থাকে তাহলে সে সফলকাম হবে এবং মুক্তি পাবে। যদি ফরজ নামাজে ঘাটতি দেখা যায়, তখন ফেরেশতাদের বলা হবে, দেখো তো আমার বান্দার কোনো নফল নামাজ আছে কিনা? তার যদি নফল নামাজ থেকে থাকে, তাহলে তা দিয়ে ফরজের এ ঘাটতি পূরণ করো। অন্যান্য আমলগুলোর হিসাবও এভাবে গ্রহণ করা হবে। (সুনানে আবু দাউদ)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ তার দীনের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজ ফরজ করেছেন। সর্বশেষেও নামাজই ফরজ থেকে যায়। আমলসমূহের মধ্যে নামাজের হিসাবই প্রথম হবে। আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দার নামাজ দেখো, যদি সেটা পরিপূর্ণ হয়, তাহলে পরিপূর্ণ লেখা হবে। যদি সেটা অপূর্ণ হয়, তাহলে তিনি বলবেন, দেখো তার কোনো নফল নামাজ আছে কি না। যদি তার নফল নামাজ পাওয়া যায়, তাহলে নফল থেকে তার ফরজ পূর্ণ করা হবে। তারপর তিনি বলবেন, দেখো তার জাকাত পরিপূর্ণ কি না। যদি তার জাকাত পরিপূর্ণ হয়, তাহলে পরিপূর্ণ লেখা হবে। যদি অপূর্ণ হয়, তাহলে তিনি বলবেন, দেখো তার নফল সদকা আছে কি না। যদি তার নফল সদকা থাকে, তাহলে নফল সদকার মাধ্যমে জাকাত পূর্ণ করা হবে। (আবু ইয়ালা)
ওএফএফ/এএসএম