কোরআনের শিক্ষা ও নির্দেশনা
ইমান ও পবিত্রতা মুসলমানদের বৈশিষ্ট্য
সুরা মুদ্দাসসির কোরআনের ৭৪ তম সুরা। মক্কায় ইসলামের প্রাথমিক যুগে অবতীর্ণ এ সুরাটির আয়াত সংখ্যা ৫৬, রুকু সংখ্যা ২। ‘মুদ্দাসসির’ অর্থ বস্ত্রাবৃত। এ সুরার প্রথম আয়াতে নবিজিকে (সা.) ‘মুদ্দাসসির’ বা ‘বস্ত্রাবৃত’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
হাদিসে এসেছে, হেরা গুহায় প্রথম অহি অবতীর্ণ হওয়ার সময় নবিজি (সা.) বেশ ভয় পেয়েছিলেন। এরপর কিছুদিন ওহি আসা বন্ধ ছিল। একদিন পথ চলার সময় নবিজি (সা.) আওয়াজ শুনে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেন, হেরা গুহায় দেখা সেই ফেরেশতা অর্থাৎ জিবরাইল (আ.) আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে একটি ঝুলন্ত চেয়ারে বসে আছেন। তাকে দেখে নবিজি (সা.) ভয় পেয়ে যান এবং ঘরে ফিরে বলেন, আমাকে বস্ত্ৰাবৃত করে দাও। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নবিজিকে ‘বস্ত্রাবৃত’ বলে সম্বোধন করা হয়।
সুরা মুদ্দাসসিরের ১-৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন,
(১)
یٰۤاَیُّہَا الۡمُدَّثِّرُ
ইয়া আইয়ুহাল মুদ্দাসসির।
হে বস্ত্রাবৃত!
(২)
قُمۡ فَاَنۡذِرۡ
কুম ফাআনযির।
উঠুন, মানুষকে সতর্ক করুন,
(৩)
وَرَبَّکَ فَکَبِّرۡ
ওয়া রাব্বাকা ফাকাব্বির।
আপনার রবের মাহাত্ম্য ঘোষনা করুন,
(৪)
وَثِیَابَکَ فَطَہِّرۡ
ওয়া সিয়াবাকা ফাতাহহির।
আপনার পোশাক পবিত্র করুন
(৫)
وَالرُّجۡزَ فَاہۡجُرۡ
ওয়ার-রুজঝা ফাহজুর।
এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন।
(৬)
وَلَا تَمۡنُنۡ تَسۡتَکۡثِرُ
ওয়ালা তামনুন তাছতাকছির।
অধিক পাওয়ার আশায় দান করবেন না।
(৭)
وَلِرَبِّکَ فَاصۡبِرۡ
ওয়া লিরাব্বিকা ফাসবির।
এবং আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ করুন।
এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই
১. একজন মুসলমানের উচিত নেক ও অর্থবহ কাজে তৎপর থাকা। অলসতা, অকর্মণ্যতা বা অহেতুক হাসি-তামাশা ও খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকা মুসলমানের স্বভাব হতে পারে না।
২. আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা করা, তার সব নিদর্শনকে সম্মান করা মুসলমাদের কর্তব্য।
৩. নামাজের সময় শরীর ও পোশাক পবিত্র রাখা ফরজ। নামাজের জায়গাও পবিত্র হওয়া জরুরি। এ ছাড়া সর্বাবস্থায় পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা মুসলমানদের বৈশিষ্ট্য।
৪. দান করা উচিত আল্লাহর পক্ষ থেকে সওয়াবের আশায়। দুনিয়াবি প্রাপ্তির প্রত্যাশায় দান করা হলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না।
৫. আল্লাহর নির্ধারিত ফরজ আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করা, নিষেধকৃত সব গুনাহ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে অবিচল থাকা ফরজ।
ওএফএফ/এএসএম