মাহফিলে অহেতুক কথা পরিহার আবশ্যক
রাফি বিন মনির
বর্তমানে ওয়াজ মাহফিলে বক্তাকে কুরআন-সুন্নাহের বাইরে অহেতুক কথা-বার্তা বলে বিশাল একটা সময় নষ্ট করতে দেখা যায়। আমরা যারা মাহফিলে ইসলামি বক্তব্য দিই, আমাদের উচিত সমস্ত অহেতুক কথা-কাজ পরিহার করা। বক্তব্যের ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহ অনুসরণ করলেই এটা পরিহার করা সম্ভব।
আল্লাহ তাআলা সুরা মুমিনুনের ৩ নাম্বার আয়াতে জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিকারী মুমিনের গুণাবলি উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, 'আর যারা অহেতুক কথা-কাজ থেকে বিমুখ'। একজন বক্তা অহেতুক কথা বলে কোরআনের বিপরীত অবস্থান নিয়ে কীভাবে তিনি নিজে এবং শ্রোতাদের জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার আহ্বান করতে পারেন!
যে তার জবানকে অহেতুক কথা থেকে সুরক্ষিত রাখবে, প্রিয়নবি (সা.) তার জান্নাতের জামিনদার হবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার কাছে তার দুই চোয়ালের মাঝখান (জবান) এবং দুই পায়ের মাঝখানের (লজ্জাস্থান) জামিনদার হবে, আমি নবি তার জান্নাতের জামিনদার হবো। (বুখারি, হাদিস-৬৪৭৪)
দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তি পেতে হলে অহেতুক কথা-কাজ পরিহার করতেই হবে। হজরত উকবাহ ইবনে আমের (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! মুক্তি কিসে নিহীত? নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তুমি তোমার জবানকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। (তিরমিজি, হাদিস-২৫৮৬)
একজন মুমিন অহেতুক কথা-বার্তায় লিপ্ত হয়ে নিজের সময়কে ধ্বংস করতে পারেন না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী; সে যেন ভালো কথা বলে বা অন্তত মন্দ কথা থেকে বিরত থাকে। তোমরা ভালো কথা বলো, লাভবান হবে। মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকো, নিরাপদ থাকবে। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস-৭৭৭৪)
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার। অগণিত রহমত বর্ষিত হোক মুহাম্মাদের (সা.) ওপর। আল্লাহ তাআলা আমাদের দেশের ও দেশের মানুষের জন্য দ্বীনি কথা বলার এবং শোনার জন্য ওয়াজ মাহফিলকে একটি নিয়ামত হিসেবে দান করেছেন। পৃথিবীর অন্য কোথাও এত জাকজমকভাবে এ আয়োজন খুব কমই হয়। কোরআন-সুন্নাহ থেকে এটাই প্রমাণিত যে, লাভবান হতে হলে, নিরাপদ থাকতে হলে, মুক্তিপ্রাপ্ত হতে হলে এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিকারী হতে হলে অহেতুক কথা-কাজ পরিহার আবশ্যক।
লেখক: ইসলামি আলোচক।
এসইউ/জিকেএস