তামাত্তু হজের ফরজ ওয়াজিব ও সুন্নত
জিলকদ মাস চলছে। আর কদিন পরেই শুরু হবে হজের নির্ধারিত মাস জিলহজ। অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ। তিনধরনের হজের একটি হলো তামাত্তু হজ। এ হজের রয়েছে ফরজ ওয়াজিব ও সুন্নত। হজ পালনকারীদের জন্য তামাত্তু হজের ফরজ ওয়াজিব ও সুন্নত কাজগুলো তুলে ধরা হলো-
তামাত্তু হজ কী?
তামাত্তু হজ পালনকারীরা হজের মাসগুলোতে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) হজের সফরে প্রথমেই ওমরা পালন করবে। এরপর ওমরার ইহরাম থেকে মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হালাল হয়ে যাবে। এরপর হজের নির্ধারিত সময় আসার আগ পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবন-যাপন করবে; স্বাভাবিক পোশাকে চলাফেরা করবে। এরপর হজের নির্ধারিত সময় ৭ থেকে ৯ জিলহজের মধ্যে হজের জন্য পুনরায় ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদন করাই হলো তামাত্তু হজ।
তামাত্তু হজের ফরজ
১. ইহরাম বাঁধা; হজের নিয়ত করা।
২. আরাফায় অবস্থান করা; এটি উকুফে আরাফা।
৩. তাওয়াফুল ইফাদাহ বা যিয়ারাহ করা; হজের ফরয তাওয়াফ করা।
৪. সাফা-মারওয়া সায়ি করা; হজের ফরয সায়ি করা।
এ ফরজ কাজগুলো ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নির্দিষ্ট স্থানে ও নির্দিষ্ট সময়ে পালন করতে হবে। এ ফরজ রোকনের কোনো একটি বাদ গেলে (ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত) হজ সম্পন্ন হবে না। কোনো ক্ষতিপূরণ বা দম দিয়েও কাজ হবে না। হজ বাতিল হয়ে যাবে। পরবর্তীতে পুনরায় নতুন করে হজ করতে হবে।
তামাত্তু হজের ওয়াজিব
১. মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।
২. সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা।
৩. মুজদালিফায় অবস্থান করা; মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করা।
৪. রামি করা; জামরাতসমূহে কংকর নিক্ষেপ করা।
৫. হাদির পশু জবাই করা।
৬. কসর বা হলক করা; চুল ছেঁটে ফেলা অথবা মাথা মুণ্ডন করা।
৭. আইয়ামে তাশরিকের রাতগুলোতে মিনায় রাতযাপন করা।
৮. তাওয়াফে বিদা করা; হজ শেষে মক্কা ত্যাগের আগে বিদায়ী তাওয়াফ করা।
উল্লেখ্য, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে হজের কোনো একটি ওয়াজিব যদি বাদ পড়ে তাহলে হজ বাতিল হবে না। তবে এজন্য হারাম এলাকার মধ্যে একটি পশু (দম দিয়ে) জবাই করে সম্পূর্ণ মাংস বিতরণ করা কাফফারা হিসাবে অত্যাবশ্যকীয় হয়ে যাবে। তবে বিনা ওজরে হজের কোনো একটি ওয়াজিব বাদ দেওয়া গুনাহের কাজ। দম দিয়ে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর তাআলার কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থণা করা বাঞ্চণীয়।
তামাত্তু হজের সুন্নত
হজের অন্যতম উল্লেখযোগ্য সুন্নাতগুলো হল-
১. ইহরাম বাঁধার আগে গোসল করা।
২. পুরুষের ক্ষেত্রে দুই খণ্ড সাদা ইহরামের কাপড় পরা।
৩. উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা।
৪. জিলহজ মাসের ৮ তারিখ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করা।
৫. মধ্যম ও ছোট জামরায় কংকর নিক্ষেপের পর দোয়া পাঠ করা।
উল্লেখ্য, হজের কোনো একটি সুন্নাত ওজরবশত বাদ গেলে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে বাদ পড়লে অসুবিধা নেই। দম দেওয়াও জরুরি নয়। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে সুন্নাত বাদ দেওয়া মন্দ কাজ।
এমএমএস/এমএস