ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

প্রবল ঘূর্ণিঝড় হলে আজান দেয় কেন?

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ০৩ মে ২০২৩

প্রবল ঘূর্ণিঝড়, তুফান কিংবা প্রচণ্ড বজ্রপাতের গর্জন ও বিজলী চমক মহান আল্লাহ তাআলার অসীম শক্তির বহিঃপ্রকাশ। প্রচণ্ড গতিতে বাতাসের তাণ্ডবসহ ঘূর্ণিঝড়, তুফান, অতিবৃষ্টি, বজ্রপাতের গর্জন ও এসব আলোর ঝলকানি মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ সতর্কবাণী। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতার সময় মানুষের ঘরে ঘরে আজান দেয়ার প্রচলন দেখা যায়। কিন্তু এসব সময় কেন আজান দেওয়া হয়?

আসলেই কি ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে আজান দিলে ঘূর্ণিঝড় থেকে যাবে কি?

কোরআনের একটি আয়াতের উপর নির্ভর করেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সময় আজান দেওয়া হয়। কেননা মেঘের প্রচণ্ড গর্জন, বজ্রপাত ও প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে ফেরেশতারা আল্লাহ তাআলার ভয়ে তাসবিহ পড়তে থাকে। এ বিশ্বাস থেকেই মানুষ এসব দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় আজান দিয়ে থাকেন। এতে আজান দিলে কোনো অসুবিধাও নেই।

ফেরেশতারা দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে আল্লাহ তাআলার ভয়ে তাসবিহ পড়তে থাকে বলে কুরআনে ঘোষণা করেন। আবার মেঘের গর্জনও মহান আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَ یُسَبِّحُ الرَّعۡدُ بِحَمۡدِهٖ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ مِنۡ خِیۡفَتِهٖ ۚ وَ یُرۡسِلُ الصَّوَاعِقَ فَیُصِیۡبُ بِهَا مَنۡ یَّشَآءُ وَ هُمۡ یُجَادِلُوۡنَ فِی اللّٰهِ ۚ وَ هُوَ شَدِیۡدُ الۡمِحَالِ

‘মেঘের গর্জন তাঁর প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করে এবং ফেরেশতারা তাঁর ভয়ে প্রকম্পিত হয়ে তাসবিহ পাঠ করে; তিনি বজ্রপাত করেন এবং (অনেক সময়) তাকে যার ওপর চান, ঠিক সে যখন আল্লাহ সম্পর্কে বিতণ্ডায় লিপ্ত তখনই নিক্ষেপ করেন। অথচ আল্লাহ তাআলার শক্তি কৌশল ও শক্তি বড়ই জবরদস্ত।’ (সুরা রাদ: আয়াত ১৩)

ইসলামিক স্কলারদের মতে, সব ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে আজান দেওয়া তথা আল্লাহর তাসবিহ ঘোষণা মোস্তাহাব আমল। তাই সমাজের লোকজন প্রচণ্ড প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে আজান দিয়ে থাকেন। এটি ইসলামি শরিয়ত নিষিদ্ধ নয়। এ সময় আজান দিলে তাতে কোনো সমস্যাও নেই।

তাছাড়া এসব দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্ত থেকে বেঁচে থাকতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক নসিহত পেশ করেছেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও আশ্রয় পাওয়ার দোয়া করতে বলেছেন।আল্লাহ তাআলা চাইলে এসব দুর্যোগের মাধ্যমে তাঁর অবাধ্য সীমালঙ্ঘনকারী বান্দাদেরকে শাস্তি প্রদান করতে পারেন। যদিও আল্লাহ তাআলা সব সময় তাঁর বান্দাদের প্রতি শাস্তিদানের মতো কঠোর আচরণ করেন না। কেননা আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য রাহমান, রাহিম; গাফুর ও গাফ্ফার।

প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা। যেভাবে দোয়া করতে বলেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। তবে যদি তোমরা একে তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেখতে পাও, তবে এ দোয়া করবে-

اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ الرِّيْحِ وَ خَيْرِ مَا فَيْهَا وَ خَيْرِمَا أُمِرَتْ بِهِ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ الرِّيْحِ وَ شَرِّ مَا فَيْهَا وَ شَرِّ مَا أُمِرَتْ بِهِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরি মা ফিহা ওয়া খাইরি মা উমিরাত বিহি, ওয়া নাউজুবিকা মিন শাররি হাজিহির রিহি ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উমিরাত বিহি’ (তিরমিজি, মিশকাত)

অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট এ বাতাসের ভালো দিক, এতে যে কল্যাণ রয়েছে তা এবং যে উদ্দেশ্যে তা নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার উত্তম দিকটি প্রার্থনা করছি। এবং তোমার নিকট এর খারাপ দিক হতে, এতে যে অকল্যাণ রয়েছে তা হতে এবং এটা যে উদ্দেশ্যে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার মন্দ দিক হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার যাবতীয় দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে তার একান্ত রহমতের চাদরে ঢেকে দিন। সবাইকে সব বিপদ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস

আরও পড়ুন