রোজা রেখে মুখের ভেতরে স্প্রে-ইনহেলার নেওয়া যাবে কি?
অনেকে রোজা রেখে ইনহেলার বা স্প্রে ব্যবহার করে থাকেন। তাদের অনেকের ধারণা ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভাঙব না। রোজা রেখে মুখের ভেতরে স্প্রে করলে বা ইনহেলার ব্যবহার করলে কি রোজা ভাঙবে?
‘হ্যাঁ’, সালবিউটামল জাতীয় ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে। এটি শ্বাসকষ্ট দূর করার জন্য মুখের ভেতর ভাগে স্প্রে করতে হয়। এতে যে জায়গায় শ্বাসরুদ্ধ হয়, সেই জায়গাটি প্রশস্ত হয়ে যায়। ফলে শ্বাস চলাচলে আর কষ্ট থাকে না। উল্লেখ্য, ওষুধটি যদিও স্প্রে করার সময় গ্যাসের মতো দেখা যায়, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা তরল ওষুধ। অতএব, মুখের অভ্যন্তরে স্প্রে করার দ্বারা রোজা ভেঙ্গে যাবে।
তবে হ্যাঁ, মুখে স্প্রে করার পর না গিলে যদি থুতু দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে রোজা ভাঙবে না। এভাবে কাজ চললে বিষয়টি অতি সহজ হয়ে যাবে। এতে শ্বাসকষ্ট থেকে রেহাই পাওয়ার পাশাপাশি রোজাও ভঙ্গ হবে না। (ইবনে আবিদিন ২/৩৯৫)
একান্ত প্রয়োজনে ব্যবহার করলেও রোজা ভেঙে যাবে
অনেককে বলতে শোনা যায়, একান্ত প্রয়োজনে ইনহেলার বা স্প্রে ব্যবহার করলে তাতে রোজা ভঙ্গ হবে না। তাদের এ উক্তিটি একেবারে হাস্যকর। কেননা, কেউ যদি ক্ষুধার তাড়নায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়ে অতি প্রয়োজনে কিছু খেয়ে ফেলে, তাহলে তার রোজা কি ভঙ্গ হবে না?
অবশ্যই ভেঙে যাবে। সুতরাং ইনহেলার অতি প্রয়োজনে ব্যবহার করলেও তা দ্বারা রোজা ভেঙে যাবে এবং পরে তা কাজা করতে হবে। (ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত ৫/৪৫৯)।
ইনহেলার ব্যবহারে চিকিৎসকের পরামর্শ
কোনো কোনো চিকিৎসক বলেন, ‘সেহরিতে এক ডোজ ইনহেলার নেওয়ার পর সাধারণত ইফতার পর্যন্ত আর ইনহেলার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। তাই এভাবে ইনহেলার ব্যবহার করে রোজা রাখা চাই।
ব্যতিক্রম উপায়
তবে হ্যাঁ, কারও যদি বক্ষব্যাধি জনিত এমন কোনো রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে যে, ইনহেলার নেওয়া ছাড়া ইফতার পর্যন্ত অপেক্ষা করা দায় হয়ে পড়ে, তাহলে তাদের ক্ষেত্রে এই সুযোগ রয়েছে যে, তারা প্রয়োজনভেদে ইনহেলার ব্যবহার করবে ও পরবর্তী সময় রোজা কাজা করে নেবে। আর কাজা করা সম্ভব না হলে ফিদইয়া আদায় করবে। আর যদি ইনহেলারের বিকল্প কোনো ইনজেকশন থাকে, তাহলে তখন ইনজেকশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করবে। কেননা, রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙবে না। (ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান ৩২৪)
এমএমএস/জেআইএম