ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

রমজানে রোজাদারের করণীয় কী?

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ৩১ মার্চ ২০২৩

ক্ষমা ও নাজাতের মাস রমজান অতিবাহিত করছে মুসলিম উম্মাহ। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের বসন্তকাল হিসেবে পরিচিত। এ মাসের ইবাদাত বন্দেগির সাওয়াব ও ফজিলত অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। রমজানের রোজা পালনকারীর মর্যাদা আলাদা করতেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতের রাইয়্যান নামক আলাদা দরজার ঘোষণা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত সাহল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে রাইয়্যান নামক একটি দরজা রয়েছে। কেয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতিত এ দরজা দিয়ে অন্য কাউকে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। ঘোষণা দেয়া হবে- রোজাদাররা কোথায়তখন তারা (সব রোজাদার) দাঁড়াবে। তাদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। রোজাদাদের প্রবেশের পরপরই (রাইয়্যান নামক) দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করনে না পারে।’ (বুখারি)

এ বিশেষ মর্যাদা লাভে রোজাদারকে রমজানের যথাযথ হক আদায় করতে হবে। প্রথম দশকে রোজার হকগুলো আদায় করতে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকও ব্যর্থতায় পরিণত হবে। তাই প্রথম দশক থেকেই রমজানের যথাযথ হক আদায় করে আল্লাহর ভয় অর্জন করা জরুরি। তবেই রোজাদার পাবে হাদিসে ঘোষিত সব মর্যাদা ও ফজিলত।

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত রমজানের রোজা পালন এবং তার হক আদায় করা। সে আলোকে রোজাদারের জন্য বিশেষ কিছু করণীয় তুলে ধরা হলো-

> দিনের বেলায় পানাহার ও স্ত্রী-সম্ভোগ ত্যাগের নামই রোজা নয়, বরং প্রতিদিন অন্যায় কাজ, মিথ্যা, গিবত, হারাম উপার্জনসহ আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা। রোজা রেখে এ কাজগুলো করলে সারাদিন উপবাস থাকার কোনো ফায়েদা নেই। সুতরাং রোজা পালন করে সব অন্যায় থেকে বিরত থাকা জরুরি।

> রমজান মাসের আমল-ইবাদাতে কোরআনের বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা এ মাসেই নাজিল হয়ে মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। ঈমানের দাবি হচ্ছে- ‘বান্দার প্রতিটি আমল হবে কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক।

> রোজা মানুষকে কষ্ট সহিষ্ণু শিক্ষা দেয়। অভুক্ত মানুষের অবস্থা মূল্যয়ন করতে শেখায়। সারাদিন উপবাস করে নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। তাই সাহরি ও ইফতারে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা। রমজানের অতিরিক্তি খাবার বর্জন করা জরুরি।

> অযথা গল্প-গুজবে সময় ব্যয় না করে ইফতার পরবর্তী সময়ে ইশা এবং তারাবিহ নামাজ আদায়ের ব্যাপারে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা। আবার তারাবিহ পরবর্তী সময়ে শেষ রাতে নফল নামাজ, জিকির-আজকারসহ দোয়া-ইসতেগফার করা। রাতের শেষ সময়ে কল্যাণকর কাজ সাহরি গ্রহণ করা যায়, সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া।

> রমজানে সব অশ্লীল ও বেহায়াপনা কাজ থেকে বিরত থাকা রোজা অন্যতম শিক্ষা। রোজা পালন করে অশ্লীল-বেপর্দার কাজ করা, অযথা সময় নষ্ট করে সিনেমা-টেলিভিশন দেখা, বেহায়াপনা সমৃদ্ধ মাধ্যমগুলোতে বিচরণ করা রমজানের রোজার আদর্শের পরিপন্থী কাজ। সুতরাং সব খারাপ মাধ্যমগুলোও পরিত্যাগ করা রোজার অন্যতম দাবি।

> রমজানের ইবাদাতের সবচেয়ে বড় বাধা হলো ভোগ-বিলাসী জীবন-যাপন। রমজানের প্রথম সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় ঘুরাঘুরি ও কেনা-কাটা। যদিও এবার মহামারি করোনার কারণে এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবুও যাতে অযথা সময় নষ্ট না হয়।

সর্বোপরি রমজান মাস অন্যান্য মাসের চেয়ে নীতি-নৈতিকতার শিক্ষার অন্যতম মাস। এ মাসেই মানুষ নৈতিক ও দ্বীনি শিক্ষায় নিজেদেরকে আত্ম-নিয়োগ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাই যারা এ মাসের যথাযথ হক আদায় করে রোজা পালন করতে পারবে তাদের জন্য রমজানের নির্ধারিত ও বিশ্বনবির দেয়া সুসবাংবদ বিশেষ জান্নাত রাইয়্যান।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উপরোল্লিখিত গ্রহণীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো যথাযথ আদায়ের মাধ্যমে রমজানের রহমত মাগফিরাত ও নাজাত লাভে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। রোজাদারের জন্য নির্ধারিত বিশেষ জান্নাত রাইয়্যান লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস

আরও পড়ুন