সেহরি খাওয়ার উপকারিতা
রোজা রাখার উদ্দেশ্যে ভোর রাতে খাবার খাওয়াই সেহরি। সেহরি খাওয়া সুন্নত। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণায় সেহরিতে রয়েছে বরকত ও কল্যাণ। অমুসলিমরাও উপবাস পালন করে, তারা ভোর রাতে সেহরি খায় না। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজাদারের জন্য সেহরি খেতে বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। সেহরি খাওয়ায় রয়েছে অনেক উপকারিতা। সেসব উপকারিতাগুলো কী?
সেহরি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সেহরি খাও। কেননা, সেহরিতে বরকত রয়েছে।’ (মুসলিম)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেহরি খাওয়া বরকতময় কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিত্যাগ করো না। এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সেহরি কর। কারণ যারা সেহরি খায় আল্লাহ তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (মুসনাদে আহমদ, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, ইবনে হিব্বান)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের রোজা এবং আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া। (অর্থাৎ মুসলিমরা সেহরি খায় আর ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সেহরি খায় না)।’ (মুসলিম, নাসাঈ)
সেহরি খাওয়ার উপকারিতা
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সেহরি খাওয়ার অভ্যাস গঠন কর। কারণ সেহরি বরকতময় খাদ্য।’ (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ) যেহেতু সেহরি বরকতময়। তাই সেহরিতে বরকত থাকার অর্থই হলো-
১. সেহরি গ্রহণে রোজাদার সারাদিন সুস্থ ও সবল থাকবে।
২. ইবাদত-বন্দেগিতে আগ্রহের কমতি থাকে না।
৩. রোজার কষ্ট হালকা হয়।
৪. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ পালন করা হয়। এবং
৫. ইহুদি-খ্রিস্টানসহ অমুসলিমদের অনুসরণ থেকে মুক্ত থাকা যায়।
ক্ষুধা না থাকলেও সেহরি খাওয়া
সেহরি খাওয়া বরকতের, তাই বলে সেহরি খাওয়া নিয়ে বাড়াবাড়ি একদমই ঠিক নয়। বিশাল আয়োজনে পেট ভরে সেহরি গ্রহণের কোনো দিক-নির্দেশনাও নেই। বরং অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে ইবাদত-বন্দেগিতে অলসতা চলে আসে। অতি ভোজনে রমজানের কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে বঞ্চিত হয় মুমিন মুসলমান।
তাই অল্প-বিস্তর যে কোনো খাবার গ্রহণ করলেই সেহরির বিধান আদায় হয়ে যাবে। কেউ যদি খেজুর কিংবা এক ঢোক পানি বা দুধ পান করে অথবা ২/১টি বিস্কুট বা এ পরিমাণ সামান্য খাবারও খায়; তাতেও সেহরি খাওয়ার বরকত অর্জিত হয়ে যাবে।
১. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেহরি খাওয়ায় বরকত আসে। সুতরাং তোমরা তা (সেহরি) খেতে ছেড়ো না; যদিও তোমরা তাতে এক ঢোক পানিও খাও। কেননা যারা সেহরি খায়, তাদের জন্য আল্লাহ রহমত নাজিল করেন এবং ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)
২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় এসেছে, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিনের শ্রেষ্ঠ সেহরি হলো খেজুর।’
এমন যেন না হয়-
সেহরিতে বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। যার ফলে দিনের শুরুতে ফজর নামাজ আদায়ে কষ্ট হয়ে যায়। ফজর পরবর্তী সময়ে আল্লাহর জিকিরে বসার আগ্রহ ও মনোযোগ হারিয়ে যায়।
আল্লাহ তাআলা সব রোজাদারকে প্রতিদিন সেহরি খাওয়ার তাওফিক দান করুন। সেহরির বরকত লাভের তাওফিক দান করুন। ফেরেশতাদের মাগফেরাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস