জুমার প্রথম খুতবা : আল্লাহর রহমতের বিশালতা
আজ শুক্রবার। জুমার দিন। ১১ নভেম্বর ২০২২ ইংরেজি, ২৬ কার্তিক ১৪২৯ বাংলা, ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৪ হিজরি। আজ রবিউস সানি মাসের তৃতীয় জুমা। আজকের জুমার আলোচ্য বিষয়- আল্লাহর রহমতের বিশালতা। এ বিষয়টি কোরআন সুন্নাহর বর্ণনায় বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
আলহামদুলিল্লাহ! সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি একক, তার কোনো অংশীদার নেই। যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। যার পরে আর কোনো নবি নেই। এরপর আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টিকুলকে উদ্দেশ্য করে কত চমৎকার ঘোষণাই না দিলেন-
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
‘ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করছো, তারা আল্লাহর করুণা থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৫৩)
আশা ও ভরসার স্থল শুধুই আল্লাহ। আর ভরসা তো তাকেই করা যায়, যিনি ক্ষমাশীল। এ কারণেই নবি পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রহমত কামনা করতেন, তার কাছেই কত চমৎকার উপস্থাপনায় ক্ষমা প্রার্থনা করতেন-
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাঅফু আন্নি’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করাকে ভালোবাসেন; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
তাহলে আল্লাহর রহমত কী? আল্লাহর রহমতের বিশালতা কত? এ সম্পর্কে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনাই বা কী?
‘হে বান্দাহ! আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না’। কত চমৎকার, ভরসা ও নির্ভরতার কথা! এ কথা শুধু আল্লাহ তাআলাই তার বান্দার উদ্দেশ্যে বলতে পারেন। আর আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে কাউকেই তার রহমত থেকে বঞ্চিত করেন না। হোক সে তার ইবাদতকারী কিংবা অবাধ্য! কিন্তু কেন?
রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো এভাবেই দোয়া করতেন-
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাঅফু আন্নি’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করাকে ভালোবাসেন; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
নির্ভয়ে এ কথা কার কাছে বলা যায়? তিনি কে? তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন- মহান আল্লাহ। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। কোরআনুল কারিমের অনেক স্থানে ভরসার এ কথা তিনিই সবাইকে শুনিয়েছেন। দিয়েছেন নির্ভয়। থাকতে বলেছেন হতাশামুক্তভাবে। যেমন তিনি বলেন-
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
‘ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করছো, তারা আল্লাহর করুণা থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব পাপ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয়ই তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৫৩)
প্রিয় মুসল্লিগণ! আল্লাহ তাআলা উল্লেখিত আয়াতে কারিমায় তাঁর বিশাল ক্ষমা ও রহমতের কথা বর্ণনা করেছেন। পাপ বা গুনাহ যত বেশিই হোক না কেন। মানুষ যাতে আল্লাহর সীমাহীন রহমত থেকে নিরাশ না হয়।
ঈমান গ্রহণের আগে অথবা গুনাহ করার পর তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুভূতি সৃষ্টি হওয়ার আগে মানুষ যেন এ ধারণা পোষণ না করে যে, আমিতো অনেক বড় অপরাধী বা গুনাহগার। আমাকে আল্লাহ কিভাবে ক্ষমা করবেন?
অথচ কোরআনের ঘোষণা হলো কোনো ব্যক্তি যদি সত্য হৃদয়ে ঈমান গ্রহণ করে বা নিষ্ঠার সঙ্গে গুনাহমুক্ত থাকার তাওবা করে; তবে মহান আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির সব গুনাহ বা পাপ ক্ষমা করে দিবেন। তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’
আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে নিরাশ না হতে সতর্ক করতে গিয়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে কুদসিতে চমৎকার একটি উদাহরণের মাধ্যমে আল্লাহর ক্ষমা ও দয়ার বিশালতা তুলে ধরেছেন এভাবে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, বনি ইসরাইলদের মধ্যে ২ সহধর্মী ছিল। যাদের একজন ছিল ইবাদতকারী। ইবাদতকারী ব্যক্তি গুনাহকারী ব্যক্তিকে সব সময় পাপ কাজ করতে দেখতো এবং তাকে পাপ কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য উপদেশ দিত- ‘তুমি পাপ কাজ ছেড়ে দাও।’ তখন গুনাহকারী ব্যক্তি বলল, ‘আমাকে আমার প্রভুর সঙ্গে বুঝাপড়া করতে দাও; তোমাকে কি আমার পাহারাদার হিসেবে পাঠানো হয়েছে নাকি! তখন ইবাদতকারী ব্যক্তি বলল, ‘আল্লাহর শপথ করে বলছি! আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করবেন না অথবা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না।’
তারা উভয়ে যখন মারা গেল, তখন তাদেরকে বিশ্বপ্রভুর সামনে হাজির করা হলো। আল্লাহ তাআলা ইবাদতকারী বান্দাকে বললেন, ‘তুমি কি আমার সম্বন্ধে জানতে? নাকি আমার ক্ষমতা তোমার হাতে ছিল? তারপর পাপী ব্যক্তিকে বললেন, ‘যাও, আমার রহমতের গুণে জান্নাতে প্রবেশ কর। আর অপর জনের (ইবাদতকারী) উদ্দেশ্যে (ফেরেশতাদেরকে) বললেন, একে জাহান্নামে নিয়ে যাও।’ (আবু দাউদ)
হাদিসটি বর্ণনা করার পর হজরত আবু হুরায়রা (শপথ করে) বলেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার জীবন তার শপথ করে বলছি ঐ কথাটিই ইবাদতকারী ব্যক্তির দুনিয়া ও পরকালকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
প্রিয় ভাইসব! মনে রাখতে হবে
আল্লাহ তাআলার রহমত পাওয়ার আশা করার অর্থ এই নয় যে, রহমতের আশায় ধারাবাহিকভাবে জীবনভর পাপ কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। তাঁর যাবতীয় ফরজ বিধি-বিধান ও কার্যাদির ব্যাপারে কোনোই পরোয়া না করা এবং আল্লাহর তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত সীমা ও নিয়ম-নীতি নিষ্ঠুরতার সঙ্গে অমান্য করে যাওয়া।
একইভাবে আল্লাহ তাআলার ক্রোধ ও প্রতিশোধকে আহ্বান জানিয়ে তাঁর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার আশা করা একেবারেই বোকামি আর খামখেয়ালী ছাড়া কিছুই নয়। তাহলো বিষয়টি হবে- নিম ফলের বীজ লাগিয়ে আঙ্গুর ফল আহরণের আশা পোষণ করার মতো।
মানুষের স্মরণ রাখা উচিত- আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য যেমন ‘গাফুরুর রাহিম’; আবার তিনি অবাধ্যদের জন্য ‘আযিযুন জুংতিক্বাম’। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে স্মরণ করে দেওয়ার জন্য অন্য আয়াতে ঘোষণা করেছেন-
نَبِّیٴۡ عِبَادِیۡۤ اَنِّیۡۤ اَنَا الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ وَ اَنَّ عَذَابِیۡ هُوَ الۡعَذَابُ الۡاَلِیۡمُ
‘আমার বান্দাদেরকে বলে দাও, নিশ্চয়ই আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু এবং আমার শাস্তিই হলো অতি মর্মন্তুদ শাস্তি।’ (সুরা হিজর : আয়াত ৪৯-৫০)
প্রিয় মুসল্লিরা! আল্লাহ রহমতের বিশালতা অনেক বেশি। যা মানুষের স্বাভাবিক জ্ঞানে বুঝে আসার কথা নয়। তাই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়াই মুসলিম উম্মাহর ঈমানের একান্ত দাবি। তাই তাঁর বিধান বাস্তবায়ন ও তা লংঘনের শাস্তি সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে।
মানুষের সব দরজা বন্ধ হয়ে গেলেও আল্লাহর রহমতের এবং কল্যাণের দরজা কখনোই বন্ধ হয় না। দুনিয়ার জীবনে চলার পথে কোনো একটি দিকের দরজা বন্ধ হয়ে গেলেও তার জন্য অন্যান্য দিক থেকে রহমতের অনেকগুলো দরজা যিনি খুলে দেন; তিনিই আল্লাহ। তিনিই রহমান। তিনি দয়াশীল এবং তিনি ক্ষমা প্রার্থনাকারীর জন্য অত্যন্ত ক্ষমাশীল।
আমাদের জন্য আফসোস!
যখনই ছোট কিংবা বড় কোনো বিপদাপদ আসে, তখনই মানুষ অস্থির হয়ে যায়। না বুঝে প্রথমেই সমাধানের জন্যে দিকবিদিক ঘুরে ফিরে। কিন্তু একটি বারের জন্যও আল্লাহর কাছে এবং সঠিক পথে সমাধান চায় না। যখনই কোনো কূল কিনারা পায় না; তখন ফিরে আসে আল্লাহর কাছে। অথচ এ কাজটি প্রথমেই করা উচিত ছিল।
প্রিয় মুসল্লিরা! এমনটি যেন না হয়, সবার থেকে বিমুখ হয়ে সবার শেষে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। বরং এ কথা স্মরণ রাখা জরুরি যে, তিনি সব কিছুর সমাধান দিতে পারেন। তিনি আল্লাহ। তার কাছেই আছে সবকিছুর সমাধান। আর তিনি এ কথা বলতেন পারেন, ‘আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না’। আল্লাহ তাআলা একাধিক আয়াতে বান্দাকে আশ্বস্থ করেন-
১. وَ عَسٰۤی اَنۡ تَکۡرَهُوۡا شَیۡئًا وَّ هُوَ خَیۡرٌ لَّکُمۡ ۚ وَ عَسٰۤی اَنۡ تُحِبُّوۡا شَیۡئًا وَّ هُوَ شَرٌّ لَّکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ
‘এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২১৬)
২. مَا یَفۡتَحِ اللّٰهُ لِلنَّاسِ مِنۡ رَّحۡمَۃٍ فَلَا مُمۡسِکَ لَهَا ۚ وَ مَا یُمۡسِکۡ ۙ فَلَا مُرۡسِلَ لَهٗ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ
আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো করুণা করলে কেউ তার নিবারণকারী নেই এবং তিনি যা নিবারণ করেন তারপর কেউ তার প্রেরণকারী নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা ফাতির : আয়াত ২)
আল্লাহর রহমত পেতে মুসলিম উম্মাহর প্রতিবন্ধকতা কোথায়?
আল্লাহর অনুগ্রহে বাধা দেয়ার কেউ নেই। আল্লাহ তাআলার রহমত বা অনুগ্রহের দরজা যে মানুষের জন্য সব সময় খোলা তা সুরা ফাতিরের এ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মানুষের যে কোনো চাওয়া-পাওয়ার আবেদন সরাসরি আল্লাহর কাছে করতে দেরি, তা কবুল বা নাজিল হতে দেরি হয় না।
তাই আল্লাহর কাছে সব সময় তার রহমত কামনা করা। যেভাবে রহমত কামনা করতে শিখিয়েছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-
اَللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَ لَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنكَ الْجَدِّ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লা মানিআ লিমা আত্বাইতা, ওয়া লা মুত্বিয়া লিমা মানাতা, ওয়া লা ইয়াংফায়ু জাল ঝাদ্দি মিনকাল ঝাদ্দি। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি যা দানের ইচ্ছা কর, তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না এবং তুমি যাতে বাধা দাও, তাও কেউ প্রদান করতে পারে না এবং কোনো সম্পদশালীর সম্পদ তোমার কাছে তাকে রক্ষা করতে পারে না।’
আল্লাহ তাআলা যেখানে কোরআনুল কারিমে আয়াত নাজিল করে বান্দাকে অভয় দিচ্ছেন যে, তিনি যাকে দান করেন, তার দানে কেউ বাধা দিতে পারে না। তাহলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা, অনুগ্রহ কামনা করায় প্রতিবন্ধকতা কোথায়?
আর তাঁর কাছে রহমত কামনায়ও প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বান্দাকে শিখিয়েছেন গুণগানসহ দোয়া। যা আল্লাহর রহমত পেতে বান্দার জন্য যথাযথ কার্যকরী আমল। মুমিন মুসলমান এ দোয়াটি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে তাওহিদের ঘোষণার পর পড়ে থাকেন। হাদিসের নির্দেশনাও এমন।
আল্লাহর উপর আস্থা রাখার সমাধান
এ কারণেই রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো বিষয়ে সমস্যা পড়তেন বা চিন্তাগ্রস্ত হতেন তখনই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)
তাঁর এ নামাজে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল, আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করা। আল্লাহর রহমত কামনা করা। এটি উম্মতের জন্য মহান শিক্ষা।
সুতরাং হে মানুষ! তোমরা যদি শুধু আল্লাহকেই নিজের জন্য যথেষ্ট মনে করে থাকো; তাহলে তোমার পেরেশানি আল্লাহকে জানিয়ে দাও; আল্লাহকে জানিয়ে দেওয়ার পর তোমার কোনো চিন্তা থাকার কথা নয়…। বাকী সবই মহান আল্লাহ দেখবেন। কারণ তিনি বলেছেন-
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
দুঃখকষ্ট জীবনে আসবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে নিরাশ হয়ে এদিক-সেদিক ঘুরলেই কি সমাধান হবে? কখনো নয়। তাই হতাশা না হয়ে, মনক্ষুন্নতায় না ভুগে, সুন্নাহভিত্তিক আমলে মনোযোগী হওয়াই মুমিন মুসলমানের কাজ।
আল্লাহ তাআলা সবাইকে বেশি বেশি তাঁর রহমত কামনা করার তাওফিক দান করুন। তার রহমতের ছায়াতলে সবাইকে আশ্রয় দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস