জুমার প্রথম খুতবা : দাজ্জালের ভয়াবহ ফেতনা
আজ শুক্রবার। জুমার দিন। ১৪ অক্টোবর ২০২২ ইংরেজি, ২৯ আশ্বিন ১৪২৯ বাংলা, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরি। আজ রবিউল আউয়ালের তৃতীয় জুমা। আজকের জুমার আলোচ্য বিষয়- দাজ্জালের ভয়াবহ ফেতনা। এ প্রসঙ্গে ইসলামের দিকনির্দেশনা কী?
সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি একক, তার কোনো অংশীদার নেই। যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। যার পরে আর কোনো নবি নেই। আজ রবিউল আউয়াল মাসের তৃতীয় জুমা। কেয়ামত আগে অবশ্যই দাজ্জাল আসবে। আরও কিছু ঘটনা ঘটবে, সে সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-
হরজত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقَاتِلَ الْمُسْلِمُونَ الْيَهُودَ فَيَقْتُلُهُمُ الْمُسْلِمُونَ حَتَّى يَخْتَبِئَ الْيَهُودِيُّ مِنْ وَرَاءِ الْحَجَرِ وَالشَّجَرِ فَيَقُولُ الْحَجَرُ أَوِ الشَّجَرُ يَا مُسْلِمُ يَا عَبْدَ اللَّهِ هَذَا يَهُودِيٌّ خَلْفِي فَتَعَالَ فَاقْتُلْهُ إِلَّا الْغَرْقَدَ فَإِنَّهُ مِنْ شَجَرِ الْيَهُودِ
‘ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত হবেনা যতক্ষণ না মুসলমানেরা ইহুদিদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে। এরপর মুসলমানগণ ইহুদিদের হত্যা করবে। ইহুদিরা গাছ ও পাথরের আড়ালে পালাতে চেষ্টা করবে। কিন্তু কেউ তাদেরকে আশ্রয় দেবে না। গাছ বা পাথর বলবে, হে মুসলমান! হে আল্লাহর বান্দা! আমার পেছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে। আসো এবং তাকে হত্যা করো। তবে ‘গারকাদ’ নামক গাছের পিছনে লুকালে গারকাদ গাছ কোন কথা বলবেনা। এটি ইহুদিদের গাছ বলে পরিচিত। (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)
প্রিয় মুসল্লিগণ, দাজ্জাল কে? কী তার পরিচয়? তার আগমনের পর ভয়াবহ ফেতনাগুলো কী? তাঁর থেকে বাঁচার উপায়ই বা কী?
আখেরি জামানায় কেয়ামতের কাছাকাছি সময়ে মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। দাজ্জালের আগমণ কেয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে বড় আলামত। মানব জাতির জন্যে দাজ্জালের চেয়ে অধিক বড় বিপদ আর নেই। বিশেষ করে সে সময় যেসব মুমিন জীবিত থাকবে তাদের জন্য ঈমান নিয়ে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। সব নবিই আপন উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। আমাদের নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও দাজ্জালের ফেতনা থেকে সতর্ক করেছেন এবং তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার উপায়ও বলে দিয়েছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, ‘একদিন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। এরপর দাজ্জালের আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, আমি তোমাদের তার ফেতনা থেকে সাবধান করছি। সব নবিই তাদের উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি তোমাদের কাছে দাজ্জালের একটি পরিচয়ের কথা বলবো যা কোনো নবিই তাঁর উম্মাতকে বলেননি। তা হলো দাজ্জাল অন্ধ হবে। আর আমাদের মহান আল্লাহ অন্ধ নন।
হজরত নাওয়াস বিন সামআন রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকাল বেলা আমাদের কাছে দাজ্জালের বর্ণনা করলেন। তিনি তার ফেতনাকে খুব বড় করে তুলে ধরলেন। বর্ণনা শুনে আমরা মনে করলাম নিকটস্থ খেজুরের বাগানের পাশেই সে হয়ত অবস্থান করছে। আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর আমরা আবার তাঁর কাছে গেলাম। এবার তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমাদের কি হলো? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি যেভাবে দাজ্জালের আলোচনা করেছেন তা শুনে আমরা ভাবলাম হতে পারে সে খেজুরের বাগানের ভিতরেই রয়েছে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, দাজ্জাল ছাড়া তোমাদের উপর আমার আরো ভয় রয়েছে। আমি তোমাদের মাঝে জীবিত থাকতেই যদি দাজ্জাল আগমণ করে তাহলে তোমাদের ছাড়া আমি একাই তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করবো। আর আমি চলে যাওয়ার পর যদি সে আগমণ করে তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজেকে হেফাজত করবে। আর আমি চলে গেলে আল্লাহই প্রতিটি মুসলিমকে হেফাজতকারী হিসেবে যথেষ্ট।’ (তিরমিজি, কিতাবুল ফিতান)
দাজ্জালের পরিচয়
মানব জাতিরই একজন দাজ্জাল। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পরিচয় বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। মুমিন বান্দাগণ তাকে দেখে সহজেই চিনতে পারবে এবং তার ফেতনা থেকে নিরাপদে থাকবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার যেসব পরিচয় উল্লেখ করেছেন মুমিনগণ তা পূর্ণ অবগত থাকবে। দাজ্জাল অন্যান্য মানুষের তুলনায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের অধিকারী হবে। জাহেল-মূর্খ ও হতভাগ্য ছাড়া কেউ দাজ্জালের ধোকায় পড়বেনা।
দাজ্জালের শারীরিক বর্ণনা
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাজ্জালকে স্বপ্নে দেখে তার শারীরিক গঠনের বর্ণনাও প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দাজ্জাল হবে বৃহদাকার একজন যুবক পুরুষ, শরীরের রং হবে লাল, বেঁটে, মাথার চুল হবে কোঁকড়া, কপাল হবে উঁচু, বুক হবে প্রশস্ত, চোখ হবে টেরা এবং আঙ্গুর ফলের মত উঁচু।(বুখারি, কিতাবুল ফিতান) দাজ্জাল নির্বংশ হবে। তার কোনো সন্তান থাকবে না। (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)
দাজ্জালের চোখের বর্ণনা
বিভিন্ন হাদিসে দাজ্জালের অন্ধ হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। কোনো কোনো হাদিসে বলা হয়েছে দাজ্জাল অন্ধ হবে। কোন হাদিসে আছে তার ডান চোখ অন্ধ হবে। আবার কোনো হাদিসে আছে তার বাম চোখ হবে অন্ধ। মোটকথা তার একটি চোখ দোষিত হবে। তবে ডান চোখ অন্ধ হওয়ার হাদিসগুলো বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে। (বুখারি, কিতাবুল ফিতান)
দাজ্জালের চেহারায় কাফের লেখা
দাজ্জালকে চেনার সবচেয়ে বড় আলামত হলো তার কপালে কাফের (كافر) লেখা থাকবে।’ (বুখারি, কিতাবুল ফিতান) অপর বর্ণনায় আছে তার কপালে (ك ف ر) এই তিনটি বর্ণ লেখা থাকবে। প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তিই তা পড়তে পারবে। (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান) অপর বর্ণনায় আছে শিক্ষিত-অশিক্ষত সকল মুসলিম ব্যক্তিই তা পড়তে পারবে।’ (মুসলিম)
মোটকথা আল্লাহ মুমিনের জন্য অন্তদৃষ্টি খুলে দেবেন। ফলে সে দাজ্জালকে দেখে সহজেই চিনতে পারবে। যদিও ইতিপূর্বে সে ছিল অশিক্ষিত। কাফের ও মুনাফেক লোক তা দেখেও পড়তে পারবেনা। যদিও সে ছিল শিক্ষিত ও পড়ালেখা জানা লোক। কারণ কাফের ও মুনাফেক আল্লাহর অসংখ্য সুস্পষ্ট প্রমাণ দেখেও ঈমান আনেনি।’ (ফতহুল বারি)
দাজ্জালের ফেতনাসমূহ
আদম আলাইহিস সালামের সৃষ্টি থেকে কেয়ামত পর্যন্ত মানব জাতির জন্য সবচেয়ে বড় ফেতনা দাজ্জাল। সে এমন অলৌকিক বিষয় দেখাবে যা দেখে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়বে। দাজ্জাল নিজেকে প্রভু ও আল্লাহ হিসেবে দাবি করবে। তার দাবির পক্ষে এমন কিছু প্রমাণও উপস্থাপন করবে যে সম্পর্কে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগেই সতর্ক করেছেন। মুমিন বান্দাগণ এগুলো দেখে মিথ্যুক দাজ্জালকে সহজেই চিনতে পারবে এবং আল্লাহর প্রতি তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু দুর্বল ঈমানদার লোকেরা বিভ্রান্তিতে পড়ে ঈমান হারা হয়ে যাবে।
দাজ্জাল নিজেকে রব বা প্রভু হিসেবেও দাবি করবে। ঈমানদারের কাছে এ দাবিটি সুস্পষ্ট দিবালোকের মত মিথ্যা বলে প্রকাশিত হবে। দাজ্জাল তার দাবির পক্ষে যত বড় অলৌকিক ঘটনাই পেশ করুক না কেন মুমিন ব্যক্তির কাছে এটি সুস্পষ্ট হবে যে সে একজন অক্ষম মানুষ, পানাহার করে, নিদ্রা যায়, পেশাব-পায়খান করে। সর্বোপরি সে হবে অন্ধ। যার ভিতরে মানবীয় সব দোষ-গুণ বিদ্যমান সে কিভাবে রব ও আল্লাহ হতে পারে! একজন সত্যিকার মুমিনের বিশ্বাস হলো- মহান আল্লাহ সর্বপ্রকার মানবীয় দোষ-ত্রুটি হতে সম্পূর্ণমুক্ত। কোনো সৃষ্টজীবই তার মত নয়। আল্লাহকে দুনিয়ার জগতে কোন মানুষের পক্ষে দেখাও সম্ভব নয়।
দাজ্জালের ক্ষমতায় মানুষ বিভ্রান্ত
১. একস্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত পরিভ্রমণ। হজরত নাওয়াস বিন সামআন রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দাজ্জালের চলার গতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দ্রুতগামী বাতাস বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয় দাজ্জালের চলার গতিও সে রকম হবে।’ (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)
২. দাজ্জালের সঙ্গে থাকবে জান্নাত-জাহান্নাম। প্রকৃত অবস্থা হবে সম্পূর্ণ বিপরীত। দাজ্জালের জাহান্নামের আগুন প্রকৃতপক্ষে সুমিষ্ট পানি এবং জান্নাত হবে জাহান্নামের আগুন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘দাজ্জালের সঙ্গে যা থাকবে তা আমি অবগত আছি। তার সঙ্গে দুটি নদী প্রবাহিত থাকবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর পরিস্কার পানি দেখা যাবে। অন্যটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যাবে। যার সঙ্গে দাজ্জালের সাক্ষাৎ হবে সে যেন দাজ্জালের আগুনে ঝাপ দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পান করে। কারণ উহা সুমিষ্ট পানি। তার চোখের উপরে মোটা আবরণ থাকবে। কপালে কাফের লেখা থাকবে। মূর্খ ও শিক্ষিত সব ঈমানদার লোকই তা পড়তে সক্ষম হবে।’ (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)
৩. দাজ্জাল মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করবে। দাজ্জাল তার কর্মকান্ডে শয়তানের সহযোগীতা নেবে। শয়তান কেবল মিথ্যা ও গোমরাহী এবং কুফরি কাজেই সাহায্য করে থাকে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দাজ্জাল মানুষের কাছে গিয়ে বলবে, আমি যদি তোমার মৃত পিতা-মাতাকে জীবিত করে দেখাই তাহলে কি তুমি আমাকে প্রভু হিসেবে মানবে? সে বলবে অবশ্যই মানব। এ সুযোগে শয়তান তার পিতা-মাতার আকৃতি ধরে সন্তানকে বলবেঃ হে সন্তান! তুমি তার অনুসরণ কর। সে তোমার প্রতিপালক মুমিন।’ (জামে) হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে দাজ্জালের ফেতনা থেকে আশ্রয় চাই।
৪. জড় পদার্থ ও পশুরাও দাজ্জালের ডাকে সাড়া দেবে। দাজ্জালের ফেতনার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে পরীক্ষা করবেন। দাজ্জাল আকাশকে আদেশ দেবে বৃষ্টি বর্ষণ করার জন্যে। আকাশ তার আদেশে বৃষ্টি বর্ষণ করবে। জমিনকে ফসল উৎপন্ন করতে বলবে। জমিন ফসল উৎপন্ন করবে। চতুষ্পদ জন্তুকে ডাক দিলে তারা দাজ্জালের ডাকে সাড়া দেবে। ধ্বংস প্রাপ্ত ঘরবাড়িকে তার নিচে লুকায়িত গুপ্তধন বের করতে বলবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘দাজ্জাল এক জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনয়নের আহবান জানাবে। এতে তারা ঈমান আনবে। দাজ্জাল তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করার জন্য আকাশকে আদেশ দিবে। আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে, জমিন ফসল উৎপন্ন করবে এবং তাদের পশুপাল ও চতুষ্পদ জন্তুগুলো অধিক মোটা-তাজা হবে এবং পূর্বের তুলনায় বেশী দুধ প্রদান করবে। এরপর অন্য একটি জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনয়নের আহবান জানাবে। লোকেরা তার কথা প্রত্যাখ্যান করবে। দাজ্জাল তাদের কাছ থেকে ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসবে। এতে তারা চরম অভাবে পড়বে। তাদের ক্ষেত-খামারে চরম ফসলহানি দেখা দেবে। দাজ্জাল পরিত্যক্ত ভূমিকে তার নিচে লুকায়িত গুপ্তধন বের করতে বলবে। গুপ্তধনগুলো বের হয়ে মৌমাছির দলের ন্যায় তার পিছে পিছে চলতে থাকবে।’ (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)
৫. দাজ্জাল একজন মুমিন যুবককে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দাজ্জাল বের হয়ে মদীনার দিকে অগ্রসর হবে। যেহেতু মদীনায় দাজ্জালের প্রবেশ নিষেধ তাই সে মদীনার কাছাকাছি একটি স্থানে অবস্থান করবে। তার কাছে একজন মুমিন লোক গমণ করবেন। তিনি হবেন ঐ জামানার সর্বোত্তম মুমিন। দাজ্জালকে দেখে তিনি বলবেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি সেই দাজ্জাল যার সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সাবধান করেছেন। তখন দাজ্জাল উপস্থিত মানুষকে লক্ষ্য করে বলবেন, ‘আমি যদি একে হত্যা করে জীবিত করতে পারি তাহলে কি তোমরা আমার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ পোষণ করবে? লোকেরা বলবে না। এরপর সে উক্ত মুমিনকে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে। এক পর্যায়ে যুবকটি বলবে, আল্লাহর শপথ! তুমি যে মিথ্যুক দাজ্জাল- এ সম্পর্কে আমার বিশ্বাস আগের তুলনায় আরো মজবুত হলো। দাজ্জাল তাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করার চেষ্টা করবে। কিন্তু তাঁকে হত্যা করতে সক্ষম হবেনা।’ (বুখারি, কিতাবুল ফিতান)
আল্লাহ তাআলা বিশ্ব মানবতার সব ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাইকে দাজ্জালে ফেতনা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিকনির্দেশনার ওপর আমল করার মাধ্যমে দাজ্জাল থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস