ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

জুমার প্রথম খুতবা : নবিজি (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০২২

আজ শুক্রবার। জুমার দিন। ০৭ অক্টোবর ২০২২ ইংরেজি, ২২ আশ্বিন ১৪২৯ বাংলা, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরি। রবিউল আউয়ালের দ্বিতীয় জুমা আজ। আগামী রোববার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি। আজকের জুমার আলোচ্য বিষয়- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ্ববাসীর জন্য রহমত । এ প্রসঙ্গে ইসলামের দিকনির্দেশনা কী?

সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি একক, তার কোনো অংশীদার নেই। যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক। যার পরে আর কোনো নবি নেই। আজ রবিউল আউয়াল মাসের দ্বিতীয় জুমা। আগামী রোববার পালিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি। এ মাসেই নবিজি রহমত নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করেছেন। আল্লাহ তাআলা তার আগমন সম্পর্কে কোরআনুল কারিমে ঘোষণা করেছেন-

وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ

আর আমি তো আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ১০৭)

العالمين শব্দটি عالم শব্দের বহুবচন। মানব, জিন, জীবজন্তু, উদ্ভিদ, জড় পদার্থসমূহ সবই এর অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবার জন্যেই রহমতস্বরূপ ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন মানব জাতির জন্য আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি তো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রহমত।’ (তাবরানি, মুস্তাদরাকে হাকেম)

প্রিয় মুসল্লিগণ, যদি আখেরাতই সঠিক জীবন হয় তাহলে আখেরাতের আহবানকে প্রতিষ্ঠিত করতে কুফর ও শিরককে নিশ্চিহ্ন করার জন্যে কাফেরদের হীনবল করা এবং তাদের মোকাবেলায় জেহাদ করাও সাক্ষাত রহমত। এর ফলে আশা করা যায় যে, অবাধ্যদের জ্ঞান ফিরে আসবে এবং তারা ঈমান ও সৎকর্মের অনুসারী হয়ে যাবে। যারা রাসুলের উপর ঈমান আনবে ও তার কথায় বিশ্বাস করবে তারা অবশ্যই সৌভাগ্যবান হবে, আর যারা ঈমান আনবে না তারা দুনিয়াতে আগের উন্মতদের মত ভূমিধ্বস বা ডুবে মরা থেকে অন্তত নিরাপদ থাকবে। সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বাবস্থায় রহমত। (কুরতুবি)

আয়াতের অর্থ হচ্ছে, আমরা আপনাকে সবার জন্যই রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি। কিন্তু এটা তাদের জন্যই যারা ঈমান আনবে এবং আপনাকে মেনে নিবে। কিন্তু যারা আপনার কথা মানবে না, তারা দুনিয়া ও আখেরাত সর্বত্রই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেমন আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন-

اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ بَدَّلُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰهِ کُفۡرًا وَّ اَحَلُّوۡا قَوۡمَهُمۡ دَارَ الۡبَوَارِ  جَهَنَّمَ ۚ یَصۡلَوۡنَهَا ؕ وَ بِئۡسَ الۡقَرَارُ

আপনি কি তাদেরকে লক্ষ্য করেন না যারা আল্লাহর অনুগ্রহকে কুফরি দ্বারা পরিবর্তন করে নিয়েছে এবং তারা তাদের সম্প্রদায়কে নামিয়ে আনে ধবংসের ঘরে জাহান্নামে, যার মধ্যে তারা দগ্ধ হবে, আর কত নিকৃষ্ট এ আবাসস্থল!’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ২৮–২৯)

অন্য এক হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনি মুশরিকদের উপর বদ-দোয়া করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‏ إِنِّي لَمْ أُبْعَثْ لَعَّانًا وَإِنَّمَا بُعِثْتُ رَحْمَةً ‏

আমাকে অভিশাপকারী করে পাঠানো হয় নি, আমাকে রহমত হিসেবে পাঠানো হয়েছে।’ (মুসলিম ২৫৯৯)

অনুরূপ রাগান্বিত অবস্থায় কোনো মুসলিমকে তাঁর অভিশাপ বা গালিমন্দ করাকে কিয়ামতের দিন তার জন্য রহমতের কারণ হওয়ার দোয়া করাও তাঁর দয়ারই একটি অংশ। (মুসনাদে আহমাদ ২/৪৩৭, আবু দাউদ ৪৬৫৯)

এই কারণেই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি হাদিসে বলেছেন, ‘আমি রহমতের মূর্তপ্রতীক হয়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বজগতের জন্য একটি উপহার।’ (জামে ২৩৪৫)

সুতরাং যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালতের উপর ঈমান আনবে সে আসলে উক্ত করুণা ও রহমতকে গ্রহণ করবে। পরিণামে দুনিয়া ও আখিরাতে সে সুখ ও শান্তি লাভ করবে। আর যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালাত বিশ্বজগতের জন্য, সেহেতু তিনি বিশ্বজগতের জন্য রহমত রূপে; অর্থাৎ নিজের শিক্ষা দ্বারা বিশ্ববাসীকে ইহ-পরকালের সুখের সন্ধান দিতে প্রেরিত হয়েছিলেন।

অনেক ওলামায়ে কেরাম নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এই অর্থেও বিশ্বজগতের জন্য করুণা বলেছেন যে, তাঁর কারণেই এই উম্মত (তাঁর দাওয়াত গ্রহণ অথবা বর্জনকারী মুসলিম অথবা কাফের সকলেই) নির্মূলকারী ব্যাপক ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পেয়েছে। যেভাবে আগের বহু জাতিকে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে, উম্মাতে মুহাম্মাদিয়াকে সে রকম আজাব দিয়ে ধ্বংস করে নির্মূল করা হয়নি।

প্রিয় মুসল্লিগণ, রাহমাতুল্লিল আলামিন রাসুলুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মোৎসবের মাস তথা ঈদে মিলাদুন্নবি। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ফিরে যাওয়ার মাস। প্রতি বছর এ মাসে মুসলিম উম্মাহ ক্ষণিকের জন্য হলেও ফিরে যায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোয়। কারণ মাসটি যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস। বিশ্বনবির শুভাগমন উপলক্ষ্যে বিশ্বমানবতার আনন্দ-উৎসবের মাস।

১৪৪৪ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল হচ্ছে ০৯ অক্টোবর (রোববার)। দিনটি যথাযথযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী উদযাপন করা হবে। কেউ কেউ মাসব্যাপী প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম, বেড়ে ওঠা, নবুয়ত, হিজরত, রাষ্ট্রগঠন, ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, আন্তর্জাতিক জীবন, সমাজ সংস্কারসহ জন্ম থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিষয় নিয়ে সীরাতুন্নবি ও উসওয়াতুন্নবী শিরোনামে অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন। এছাড়া কেউ কেউ মাজিউন্নবী আবার কেউ কেউ ৩/৪ মাসব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী শীর্ষক আলোচনা সভাও অব্যাহ রাখে। যা রবিউল আউয়াল মাসেই উদযাপন শুরু হয়।

দেড় হাজার বছর আগে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র নগরী মক্কার বিখ্যাত বনু হাশিম বংশে রবিউল আউয়াল মাসের দ্বিতীয় সোমবার (ফীলের বছর) দিনের রাতের মহাসন্ধিক্ষণ ‘সুবহে সাদেক’-এ শুভ জন্মগ্রহণ করেন। আবার একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করলেও মুসলিম উম্মাহর কাছে এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পরিচিত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভ জন্মের দিন ও বছর নিয়ে হাদিসে পাকে আছে সুস্পষ্ট বক্তব্য। তিনি ইংরেজি পঞ্জিকার হিসেব মতে, ৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ২০ অথবা ২২ এপ্রিল জন্ম গ্রহণ করেন।

প্রিয় মুসল্লিগণ! নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বার ও জন্ম বৎসর নিয়ে হাদিসে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকলেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুনির্দিষ্ট জন্ম তারিখ সম্পর্কে হাদিসে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ কারণে পরবর্তী যুগের আলেম এবং ঐতিহাসিকগণ এ সম্পর্কে মতভেদ করেছেন।

প্রিয় নবির জন্ম সম্পর্কে মা আমিনার কথা

হজরত ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যখন তাঁর জন্ম হয়েছিল তখন আমার শরীর থেকে এক জ্যোতি বের হয়েছিল; যাতে শামদেশের অট্টালিকাসমূহ আলোকিত হয়েছিল। ইমাম আহমাদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ইরবায বিন সারিয়া কর্তৃক অনুরূপ একটি বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। (মুখতাসারুস সিরাহ)

জগৎ আলো করে প্রিয় নবির শুভাগমনে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ঘটেছিল। যা ছিল নবুওয়তের পূর্বাভাস। তা ছিল-

> তাঁর শুভ জন্মের মুহূর্তে কিসরার প্রাসাদের চৌদ্দটি সৌধচূড়া ভেঙ্গে পড়ে;

> প্রাচীন পারসিক ধর্ম যাজকমন্ডলীর উপাসনাগারগুলোতে যুগ যুগ ধরে প্রজ্জ্বলিত হয়ে আসা অগ্নিকুণ্ডগুলো নিভে যায়;

>  বাহিরা পাদ্রীদের সরগম গীর্জাগুলো নিস্তেজ ও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ইমাম বায়হাকি, তাবারি ও অন্যান্যরা তা উল্লেখ করেন।

আলেম-ওলামা এবং ঐতিহাসিকদের মতে ঈদে মিলাদুন্নবী

বিশ্ববিখ্যাত সীরাত গ্রন্থসমূহের মধ্যে ‘আত-তানবির ফি মাওলিদিল বাশির আন নাযির’; ইবনে সাদ : আত-তাবাকাতুল কুবরা; ইবনে কাসির : আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া; ইবনে ইসহাক : সীরাতে ইবনে হিশাম; কাস্তালানিসহ ঐতিহাসিক সীরাত গ্রন্থের তথ্য ও বিবৃতি থেকে যা জানা যায়; তাহলো-

১. দ্বিতীয় হিজরির ঐতিহাসিক মুহাদ্দিস আবু মাশার নাজিহ এর মতে, তিনি রবিউল আউয়াল মাসের ২ তারিখ (প্রথম সোমবার) পৃথিবীতে শুভাগমন করেন।

২. হজরত ইবনে আব্বাস এবং যুবাইর ইবনে মুতইম রাদিয়াল্লাহু আনহুমা সাহাবাদ্বয় বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসের ৮ তারিখ জন্মগ্রহণ করেন। মুহাম্মদ ইবনে যুবাইর ইবনে মুতইম, আল্লামা কাস্তালানি ও যারকানির বর্ণনার এ মতটি অধিকাংশ মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকগণ এ মত গ্রহণ করেছেন। মিলাদের ওপর প্রথম গ্রন্থ রচনাকারী আল্লামা আবুল খাত্তাব ইবনে দেহিয়া (৬৩৩হি.) তার রচিত ‘আত-তানবির ফি মাওলিদিল বাশির আন নাজির’ গ্রন্থেও এ মতটিকে গ্রহণ করেছেন।

৩. তারিখে খুযরি ও রাহমাতুল্লিল আলামীন গ্রন্থদ্বয়ে ৯ রবিউল আউয়াল (ফিলের বছর) সোমবার দিন-রাতের মহাসন্ধিক্ষণে সুবহে সাদেকের সময় জন্মগ্রহণ করেন।

৪. হজরত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর পৌত্র মুহাম্মদ ইবনে আলি আল বাকের (১১৪হি.) ও মুহাদ্দিস আমির ইবনে শারাহিল আশ-শাবি (১০৪হি.) বর্ণনায় তিনি ১০ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন।

৫. হিজরি দ্বিতীয় শতাব্দির প্রখ্যাত ঐতিহাসিক মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক-এর (১৫১হি.) বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ শুভাগমন করেন।

উল্লেখ্য, ইবনে ইসহাক রচিত সীরাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের সব বিষয়গুলো সাধারণত সনদসহ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ তথ্যটির কোনো সনদ তিনি উল্লেখ করেননি।

৬. হিজরি ৩য় শতকের ঐতিহাসিক যুবাইর ইবনে বাক্কার (২৫৬হি.)-এর মতে, তিনি রমজান মাসে জন্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, যেহেতু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪০ বৎসর বয়সে রমজান মাসে নবুয়্যতপ্রাপ্ত হন, সেহেতু তিনি অবশ্যই রমজান মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।

৭. কারো কারো মতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মহররম, সফর, রবিউস সানি, রজব মাসে জন্ম গ্রহণ করেছেন মর্মে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন।

প্রিয় মুসল্লিগণ, উপমহাদেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান রবিউল আউয়াল মাস এবং ১২ তারিখকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মমাস ও দিন হিসেবে জানে এবং সর্বাধিক সনদে রচিত রাসুলের জীবনীগ্রন্থ প্রণেতা ইবনে ইসহাক রবিউল আউয়াল মাস এবং ১২ তারিখকে ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন, সে হিসেবে এ উপমহাদেশের অধিকাংশ মুমিন মুসলমান ১২ রবিউল আউয়ালকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ হিসেবে বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, র‌্যালী ও দোয়া-মাহফিল উদযাপন করে থাকেন।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ও মাস নিয়ে মতভেদ থাকলেও তিনি সোমবার সুবহে সাদেকে জন্ম গ্রহণ করেছেন এটি চিরন্তন সত্য। এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও বিশ্লেষকদের মতে তিনি রবিউল আউয়াল মাসে জন্ম গ্রহণ করেছেন মর্মে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

সুতরাং রবিউল আউয়াল মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহান মাস। এ মাসের একটি দিন প্রিয় নবির জন্ম উৎসবে আনন্দ নয় বরং মাস ও বছরজুড়ে প্রিয় নবির আদর্শে নিজেদের রঙিন করে সুন্নাতের আলোকে জীবন পরিচালনার উৎস হোক পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী।

ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস, তারিখ নিয়ে যতই মতভেদ থাকুক না কেন; প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত পুরো জীবন হোক মুসলিম উম্মাহর জন্য আদর্শ।

আল্লাহ তাআলা বিশ্ব মানবতার সব ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার জন্য প্রিয় নবির আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর পুরোপুরি অনুসরণ, অনুকরণ এবং তা নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধ বজায় রাখার তাওফিক দান করুন। প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে রহমত দিয়ে ঢেকে দিন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস

আরও পড়ুন