ইসলামের পুনর্জাগরণে মুজাদ্দিদে আলফেসানির (র.) ভূমিকা
ফখরুল ইসলাম নোমানী
মহান রাব্বুল আলামিন দুনিয়ার আকাশকে যেমন অসংখ্য নক্ষত্রের মাধ্যমে সাজিয়েছেন তেমনি আধ্যাত্মিক আকাশকে তার প্রিয় বান্দা তথা গাউস-কুতুব, অলি-আবদাল, আওতাদ, নুক্বাবা-নুজাবা প্রমুখের মাধ্যমে সুশোভিত করেছেন। তাঁর সেই আধ্যাত্মিক আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন যুগশ্রেষ্ঠ অলিয়ে কামেল ইমামে রাব্বানি মুজাদ্দিদে আলফেসানি হজরত শায়খ আহমদ ফারুকি সিরহিন্দি রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক হাদিসে এ বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা এ উম্মতের (কল্যাণে) প্রত্যেক শতাব্দীতে এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যিনি তাদের দীনকে সংস্কার করবেন। (আবু দাউদ) তারই ধারাবাহিকতায় হজরত শায়খ আহমদ ফারুকি সিরহিন্দি রহমাতুল্লাহি আলাইহির আগমন ঘটে। তিনি ছিলেন ইমামে রাব্বানি মুজাদ্দিদে আলফেসানি।
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন ইসলামি পন্ডিত। তিনি ফিকহের হানাফি ধারা ও নকশবন্দি সুফি তরিকার অনুসারী ছিলেন। তাকে মুজাদ্দিদে আলফেসানি বলা হয় যার অর্থ ‘দ্বিতীয় সহস্রাব্দের সংস্কারক’। মুঘল সম্রাট আকবরের সময় তার গঠিত ‘দ্বীনে এলাহি’ নামক ফেতনা ও ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরোধীতার জন্য তিনি অধিক পরিচিত।
মুজাদ্দিদ অর্থ হচ্ছে সংস্কারক। আলফ মানে হাজার আর সানী অর্থ হচ্ছে দ্বিতীয়। অতএব, মুজাদ্দিদে আলফেসানি অর্থ হচ্ছে দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মুজাদ্দিদ বা সংস্কারক। শায়খ আহমদ ফারুকি সিরহিন্দি ছিলেন দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মুজাদ্দিদ।
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির জন্মের সময় জালালুদ্দীন আকবর ছিলো ভারতবর্ষের শাসক। আকবরের পিতা হুমায়ূন, আকবরের জন্মের পর থেকে প্রতিপক্ষের আক্রমনে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালিয়ে বেড়িয়েছিলো। তাই ভারতবর্ষের এই ভাবী সম্রাটের লেখা-পড়ার সুযোগ হয়নি। অশিক্ষিত এই ব্যক্তি অতিঅল্প বয়সেই পিতার সিংহাসনে বসে।
সম্রাট নিজে অশিক্ষিত থাকলেও জ্ঞানের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিলো। তাই সে তার দরবারে জ্ঞানী-গুণীদের সমাবেশ ঘটালো। ওই সময় জ্ঞানী বলতে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিরাই ছিলো; যাদেরকে সমাজ আলেম হিসেবে জানতো। সাধারণত রাজা-বাদশাদের পাশে দুনিয়াদার আলেমরাই জমা হয়। সম্রাট আকবরের কাছে বিতর্ক ছিলো একটি প্রিয় বিষয়। তাই সম্রাট দরবারী আলেমদের দিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠান করতো। অপরিণামদর্শী দুনিয়াদার ওই আলেমরা শরয়ী বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক করতো।
একজন একটি বিষয় প্রমাণ করেছে তো আরেকজন ওই বিষয়টিকে প্রতিহত করেছে। এর দ্বারা ধীরে ধীরে আকবরের মনে ইসলাম সম্পর্কে সন্দেহ সংশয় বাসা বাঁধতে থাকে। আলেমদের মধ্য থেকে একশ্রেণীর প্ররোচনায় প্রথমে সে নিজেকে মুজতাহিদ দাবী করে এবং বলে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুওয়াতের সীমা ছিলো একহাজার বছর পর্যন্ত। এখন নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এখন থেকে চলবে সম্রাটে আকবরের ‘দ্বীনে এলাহি’। এভাবে সে দ্বীন ইসলামকে রহিত করে ‘দ্বীনে এলাহি’ নামে নতুন ধর্মের প্রবর্তন করে।
ইসলামের সংকটময় মুহূর্তে মুজাদ্দিদে আলফেসানি
সম্রাট আকবরের দ্বীনে এলাহি প্রবর্তন নিছক একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত অবস্থান পরিবর্তন ছিলো না। বরং তা ছিলো ইসলামী বিশ্বের বড় এক অংশের পরিবর্তন। যার শাসক ছিলো সমকালীন প্রতাপশালী একজন ব্যক্তি। যে শাসকের দরবারে ছিলো যুগের সূর্যসন্তানেরা। দ্বীন ইসলামের এই সংকটময় মুহূর্তে প্রয়োজন ছিলো একজন মুজাদ্দিদের; যিনি আকবরের এই ফেতনার মোকাবেলায় দ্বীন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে আঁকড়ে ধরে হকের মশাল জ্বালাবেন। তাই আল্লাহ তাআলা প্রেরণ করলেন শায়খ আহমদ ফারুকি সিরহিন্দি রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে।
জন্ম ও বংশ পরিচয়
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির নাম হচ্ছে- আবুল বারাকাত বদরুদ্দীন শায়খ আহমদ নকশেবন্দী সিরহিন্দি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি ৯৭১ হিজরিতে (মোতাবেক ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবের তৎকালীন পাতিয়ালি রাজ্যের বিখ্যাত শহর সিরহিন্দে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম আবদুল আহাদ। পিতা আবদুল আহাদ শায়খ আবদুল কুদ্দুস গাঙ্গোহির মুরিদ ছিলেন। তার বংশানুক্রম হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে।
শিক্ষা জীবন
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি পিতার কাছে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি পবিত্র কোরআনুল কারিমের হেফজ সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি শিয়ালকোটের বিখ্যাত আলেম কামাল কাশ্মীরীর কাছে চলে যান। সেখানে তিনি হাদিস, ফিকহ ও তাফসীরের সঙ্গে সঙ্গে আরবি সাহিত্যও ভালোভাবে অধ্যয়ন করেন। সেখানকার শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি নিজ এলাকায় ফিরে, অধ্যয়ন ও অধ্যাপনায় মনোনিবেশ করেন। কিন্তু জ্ঞানার্জনের অদম্য আগ্রহ তাকে পুনরায় রাহতাস ও জৌনপুরে নিয়ে যায়। তিনি আগ্রায় অবস্থান করেন। তথায় তিনি আবুল ফজল ও আবুল ফায়জের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। সেখানে থাকাবস্থায় তিনি অতি কাছ থেকে সমসাময়িক চিন্তাধারা,রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড দেখার সুযোগ পান। সেখানে থাকাবস্থায়ই তাঁর পিতা তাঁকে সিরহিন্দে যেতে বলেন।
আধ্যাত্মিক শিক্ষা
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজ পিতার কাছ থেকে চিশতিয়া তরীকায় দীক্ষা গ্রহণ করেন। ওই সময় হয়তো তিনি সোহরাওয়ার্দিয়া ও কাদরিয়া তরীকার দীক্ষাও লাভ করেছিলেন। তার উস্তাদ শায়খ ইয়াকুব কাশ্মীরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মাধ্যমে তিনি আরো একটি তরীকার শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কোনটার দ্বারাই তিনি পরিপূর্ণ আত্মতৃপ্তি পাচ্ছিলেন না। ১০০৮ হিজরিতে হজযাত্রায় দিল্লি পৌঁছলে তার জনৈক বন্ধু খাজা বাকীবিল্লাহ নকশেবন্দি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কামালাত সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন। শাইখের প্রতি অন্তরে আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। তিনি তার খেদমতে হাজির হন। খাজা সাহেবের সান্নিধ্যে অল্পদিন অবস্থান করার দ্বারা মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বহুদিনের আধ্যাত্মিক অতৃপ্তির অবসান ঘটে। অপর দিকে খাজা সাহেব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি সাহেবের সততা, সরলতা, সুন্নতের অনুসরণ ও শরিয়তের পালন দেখে অভিভূত হন। এরপর মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজ শায়খের নির্দেশে নিজ এলাকা সিরহিন্দে ফিরে আসেন।
স্বভাব-চরিত্র
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্ণ অনুসারী। মানুষে মানুষে তিনি কোনো পার্থক্য করতেন না। বাদশাহ-ফকিরকে দেখতেন একই নজরে। এমনকি গরিবকে তিনি প্রাধান্য দিতেন। আমির লোকদের হাদিয়া তিনি গ্রহণ করতেন না। তবে গরিবের হাদিয়া গ্রহণ করতেন সন্তুষ্ট-চিত্তে। জীবনে শাহি-দরবারে কখনো গমন করেননি। তাঁর দরবারে যত হাদিয়া উপস্থিত হতো তিনি দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত লোকদের মধ্যে তা বিলিয়ে দিতেন। মানুষের দুঃখ সহ্য করতে পারতেন না। তা দূর করার জন্য ব্যাকুল ছিলেন। তিনি বন্ধুবৎসল, বিনয়ী, মিষ্টভাষী ও অমায়িক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। অপরের সালামের অপেক্ষা তিনি করতেন না। আগেই সালাম দিতেন, মুসাফাহার জন্য আগেই হাত বাড়িয়ে দিতেন।
‘দ্বীনে এলাহি’র বিরুদ্ধে সংগ্রাম
আগেই আলোচনা হয়েছে, মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর জন্মের সময় বাদশা আকবর ‘দ্বীনে এলাহি’ নামে এক নতুন মনগড়া ধর্ম প্রবর্তনের চেষ্টা করছিলো। শিক্ষাগ্রহণের সময়ে তিনি খুব কাছে থেকে আকবর ও তার ইসলাম বিরোধী নীতিকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কর্মজীবনে আসার পর তার কাছে আরো স্পষ্ট হয় যে, রাষ্ট্র কীভাবে দ্বীন ইসলামের বিরোধীতায় অবতীর্ণ হয়েছে। এসব বোঝার পর, তার ভেতর লুকিয়ে থাকা ঈমানী সুপ্ত আগুন জ্বলে ওঠে। পরিস্কার হয়ে ওঠে জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। অবস্থার পরিবর্তনই এখন তার মূল টার্গেটে পরিণত হয়। ফিকিরের মূল জায়গা দখল করে নেয়, হিন্দুস্তানে মুসলিম উম্মাহর ভবিষ্যতের চিন্তা। ইসলামের এহেন নাযুক পরিস্থিতিতে অন্যদের ন্যায় তিনি দর্শকের ভূমিকা পালন না করে অবতীর্ণ হলেন বিপ্লবের ময়দানে। ঠিক করলেন কর্মপন্থা।
ময়দানে তার দাওয়াতি কর্মপন্থা ও আমাদের শিক্ষা
দাওয়াত ও ইসলাহের ময়দানে মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি কঠোর কোনো কর্মসূচি দেননি। প্রথমে তিনি নিজের ভেতর থেকে সমস্ত রকমের জাগতিক স্বার্থকে বের করলেন। একমাত্র সংশোধন ও ইসলাহের নিয়তে রাজ্যের কর্মকর্তাদের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তারপর তিনি রাজ্যের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের কাছে যাতায়াত শুরু করলেন।
সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা শুরুতে তাকে অন্যদের মতোই ধান্দাবাজ মনে করলেও খুব দ্রুতই তার ব্যাপারে তাদের ধারণা পাল্টে যেতে থাকে। তারা দেখতে পেলো, তিনি শুধু রক্তে মাংসে গড়া একজন মানুষ নয়; বরং তার ভেতর রয়েছে মনুষ্যত্বের যাবতীয় গুণাবলী। তার উপর বস্তুর কোনো কর্তৃত্ব চলে না; তিনিই বস্তুর উপর কর্তৃত্ব করেন। তখন তারা শায়খের সামনে নিজেদেরকে সোপর্দ করে দিলো। তার এই তৎপরতার সময় সম্রাট আকবর জীবিত ছিলেন। এর কিছু দিন পরেই আকবর মারা যায় আর ক্ষমতায় বসে সম্রাট জাহাঙ্গীর।
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কারাজীবন
সম্রাট জাহাঙ্গীর মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে আকবরের তুলনায় বেশি সম্মান করতো। কিন্তু তার পাশের লোকেরা মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে ভালো চোখে দেখতো না। তাই ওরা সম্রাটকে কানপড়া দিতে শুরু করলো। পরামর্শ দিলো, তাকে পরীক্ষা করে দেখা দরকার। এ জন্য সম্রাট একবার তাকে দরবারে ডেকে পাঠালো। ওই সময় নিয়ম ছিলো, যারা রাজ দরবারে আসবে সম্রাটকে সম্মানের সেজদা করবে।
এ ব্যাপারে ইসলামের রীতি হচ্ছে, আগন্তুক সালাম দিবে, সেজদা নয়। তাই মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি দরবারে প্রবেশের পর সেজদা না করে, সালাম দিলেন। এতে সম্রাট ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে জেলে বন্দি করে। মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জেলে আটক করা শাপেবর হলো। তিনি সুযোগকে কাজে লাগালেন। জেলখানায় তিনি দাওয়াতি কাজ শুরু করে দিলেন। এতে কয়েকজন অমুসলিম তার হাতে মুসলমান হয়। অসংখ্য অপরাধী তওবা করে গুনাহ থেকে ফিরে আসে।
এ সময়ে শায়খ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মুরিদরা মুক্তির জন্য বিভিন্ন আন্দোলন শুরু করেন এবং সম্রাট নিজেও স্বীয় কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জেল থেকে মুক্তি দেয়। মুক্তির পর রমজান মাসে তিনি সম্রাটের কাছে কাটান। সম্রাট শায়খের পেছনে তারাবির নামাজ আদায় করেন। ওই সময় তিনি সম্রাটকে বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ দেন। এভাবে আবারো রাজ পরিবার দ্বীনের পথে আসতে থাকে। যার সর্বশেষ ফলাফল হচ্ছে, বাদশা আলমগিরের মতো ন্যায়পরায়ন, আল্লাহভীরু শাসক।
ইন্তেকাল
মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন সুন্নতে নববির একান্ত অনুসারী। তাই তাঁর জীবনঘড়ি যখন ৬৩-তে পৌঁছল, তখন তিনি বললেন, সম্ভবত আমি আর বাঁচব না। কারণ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বয়সও ছিল ৬৩ বছর। তিনি ১০৩৪ হিজরির ২৮ সফর মোতাবেক ১৬২৪ ইং রোজ সোমবার বা মঙ্গলবার ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
মৃত্যুকালে তাঁর কণ্ঠে অনুরণিত হচ্ছিল একটি ফার্সি কবিতার স্তবক, যার ভাবার্থ হলো, আজ ওই প্রিয়তমের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হবে, যাঁর জন্য আমি পুরো দুনিয়াকে উৎসর্গ করে দিতে প্রস্তুত। তিনি আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তার দেওয়া কোরআন সুন্নাহর জীবন নির্দেশকা রয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তার দেখানো পথ অনুসরণ করে দুনিয়া ও পরকালের মুক্তি অর্জন করার তাওফিক দান করুক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার ভালোবাসা লাভে কোরআন-সুন্নাহর বিধানগুলো আদায়ের পাশাপাশি উল্লেখিত আমলগুলো সুন্নত তরিকায় যথাযথ পালন করার ও মুজাদ্দিদে আলফেসানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ইসলামের অসামান্য খেদমতকে কবুল করুন। আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে উচুঁ মাকাম দান করুন। আমিন।লেখক : ইসলামি চিন্তক ও গবেষক।
এমএমএস/এমএস