আল্লাহ যখন বান্দাকে ক্ষমা করেন
কোনো বান্দা একটি পাপ করলো ও বললো, ‘হে রব! তুমি আমার পাপ ক্ষমা করো।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, এরপর সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন আবার পাপের কারণে পাকড়াও করেন।’ কোন সে প্রভু তিনি? তিনি বান্দাকে কখন ক্ষমা করেন?
তিনি কত মহান। ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যিনি বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। ক্ষমা করে দেওয়ার জন্যই যিনি প্রস্তুত থাকেন। তাঁর ক্ষমার বর্ণনা তুলে ধরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চমৎকার একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাহলো-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, আর তিনি তাঁর রব থেকে বর্ণনা করেন, ‘কোনো বান্দা একটি পাপ করলো ও বললো, ‘হে আমার রব! তুমি আমার পাপ ক্ষমা করো।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, এরপর সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন ও পাপের কারণে পাকড়াও করেন।’ এরপর সে আবার পাপ করলো এবং বললো, ‘হে আমার রব! তুমি আমার পাপ ক্ষমা করো।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, এরপর সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন ও পাপের কারণে পাকড়াও করেন। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। সুতরাং সে যা ইচ্ছা করুক।’ (বুখারি ও মুসলিম)
বান্দা যখন কোনো পাপ করে ফেলে তারপর বলে, ‘হে আমার রব! তুমি আমার পাপ ক্ষমা করো।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, এরপর সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন। ফলে আল্লাহ তার এই পাপ গোপন করেন ও তাকে ক্ষমা করেন অথবা এর জন্য শাস্তি দেন। এরপর সে আবার পাপ করলো এবং বললো, ‘হে আমার রব! তুমি আমার পাপ ক্ষমা করো।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দা একটি পাপ করেছে, তারপর সে জেনেছে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন ফলে আল্লাহ তার এই পাপ গোপন করেন ও তাকে ক্ষমা করেন অথবা এর জন্য শাস্তি দেন। (আল্লাহ বলেন) আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। অতএব, সে যা ইচ্ছা পাপ করুক ও তার পশ্চাতে সঠিকভাবে তাওবা করুক। যতক্ষণ পর্যন্ত এভাবে পাপ করে তাওবা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো। কেননা তাওবা আগের পাপরাশিকে মিটিয়ে দেয়।
হাদিসের শিক্ষা ও উপকারিতা
১. নিজের বান্দাদের ওপর আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ যতক্ষণ তারা এ বিশ্বাস করে যে, তাদের রবের হাতেই তাদের নিয়ন্ত্রণ। যদি তিনি চান ক্ষমা করবেন আর যদি চান শাস্তি দেবেন।
২. বিশুদ্ধ তাওবা দ্বারা মানুষের গুনাহগুলো দূরীভুত হয়।
৩. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী মুমিনদের অন্তর তাওবা দ্বারা পরিষ্কার হয় এবং তার রবের ক্ষমার ব্যাপারে আশাবাদী হয়। তাই সে সংশোধন ও ভালো কর্মের প্রতি প্রতিযোগী হয়। যদি তার থেকে কোনো গুণাহ পাওয়া যায় সে তাওবা দ্বারা তার প্রতিকার করে। গুনাহের ওপর সে অবিচল থাকে না।
৪. যদি কোনো বান্দা থেকে গুনাহ একশবার বা তার চেয়ে অধিকবার প্রকাশ পায় এবং প্রতিবার সে তাওবা করে তার তাওবা কবুল করা হবে এবং তার গুনাহ দূর হয়ে যাবে। আর যদি সব গুনাহ থেকে একেবারে শেষে তাওবা করে তাহলেও তার তাওবা কবুল হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। তাওবার মাধ্যমে সঠিক ও বিশুদ্ধ জীবনে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম