ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

যে আমলে পাবেন পরকালে পছন্দের পুরস্কার

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:৩৫ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২২

রাগ মানুষের জন্য খুব বেশি ক্ষতিকর। শান্তি, স্বস্তি ও নিরপত্তার জন্য রাগমুক্ত থাকার বিকল্প নেই। যে ব্যক্তি রাগ সংবরণ করতে পারবেন, দুনিয়াতে যেমন তার জন্য রয়েছে শান্তি, স্বস্তি ও নিরাপত্তা তেমনি পরকালে রয়েছে পুরস্কার বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা। কী সেই পুরস্কার?

১. হজরত সাহল ইবনু মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার রাগ প্রয়োগে (প্রতিশোধ নেওয়ার) ক্ষমতা থাকার সত্ত্বেও সংযত থাকে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে সব সৃষ্টিকূলের মধ্যে থেকে ডেকে নেবেন এবং তাকে হুরদের মধ্য থেকে তার পছন্দমত যে কোনো একজনকে বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেবেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)

২. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক সাহাবির ছেলে থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এরপর পরকালে আল্লাহ তাকে ডাকবেন এর স্থানে বলেন, আল্লাহ তাকে শান্তি ও ঈমানের দ্বারা পরিপূর্ণ করবেন। তারপর বলেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সৌন্দর্যবর্ধক পোশাক পরা থেকে বিরত থাকে এবং বর্ণনাকারী বিশর বলেন, আমার ধারণা তিনি নম্রতা পরিত্যাগের কথা বলেছেন, আল্লাহ তাকে সম্মানের পোশাক পরাবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিবাহ করবে আল্লাহ তাকে রাজমুকুট পরাবেন।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)

৩. হজরত আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তিকে তোমরা বড় বীর মনে করো? সাহাবিগণ বললেন, যাকে কেউ যুদ্ধে হারাতে পারে না। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘না’, বরং প্রকৃত বীর হলো সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে।’ (আবু দাউদ, মুসলিম)

রাগ নিয়ন্ত্রণে কী করবেন?

হজরত মুয়াজ ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, দুই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে পরস্পরকে গালি দিতে লাগলো। তাদের একজন এতটা রাগান্বিত হলো যে, মনে হচ্ছিল, রাগের প্রচন্ডতায় তার নাক ফেটে যাবে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি এমন একটি বাক্য জানি যা বললে রাগের প্রতিক্রিয়া চলে যাবে। তখন মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! তা কী? তিনি বললেন, সে বলবে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাশ শায়ত্বানির রাঝিম।’

অর্থ : ’হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় চাইছি।’

আব্দুর রাহমান বলেন, তখন মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে (রাগান্বিত ব্যক্তিকে) তা পড়ার তাকিদ দিতে থাকলেন। কিন্তু সে তা পড়তে সম্মত হলো না এবং ঝগড়া করতে থাকলো এবং তার রাগ আরও বৃদ্ধি পেলো।’ (আবু দাউদ, মিরমিজি, মুসনাদে আহমাদ)

হজরত সুলাইমান ইবনু সুরাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে দুই ব্যক্তি পরস্পরকে গালি দিতে লাগলো। তখন তাদের একজনের চোখ লাল হতে থাকে ও ঘাড়ের রগ মোটা হতে থাকে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি অবশ্যই এমন একটি বাক্য জানি এ ব্যক্তি তা বললে নিশ্চয়ই তার রাগ চলে যাবে। তাহলো-

أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

উচ্চারণ : ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাঝিম।’

অর্থ : ‘অভিশপ্ত শয়তান থেকে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইছি।’ লোকটি বললো, আপনি কি আমার পাগল ভাব দেখছেন!’ (আবু দাউদ, বুখারি ও মুসলিম)

মোটকথা হলো- রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রাগ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। তবেই দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ ও পুরস্কার পাবেন মুমিন মুসলমান।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় রাগমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। কোনো কারণে রাগ চলে আসলে হাদিসের আমল করার মাধ্যমে রাগমুক্ত থেকে পরকালের পছন্দমতো পুরস্কার পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

আরও পড়ুন