সব সময় দরুদ পড়ার ফজিলত
ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন বিশ্ব মানবতার জন্য আদর্শ শিক্ষক। নবিজির আদর্শ জীবন অনুসরণ ও অনুকরণের পাশাপাশি তার প্রতি দরুদ পাঠ করা প্রত্যেক ঈমানদারের আবশ্যক কর্তব্য। সবসময় দরুদ পাঠের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত অত্যধিক। কেননা আল্লাহ তাআলা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সালাত ও সালাম (দরুদ) পড়ার শিক্ষা ও নির্দেশ এভাবে দিয়েছেন-
اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ নবির প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরাও নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং তাকে উত্তমরূপে অভিবাদন কর। (দরুদ ও সালাম পেশ কর।)’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলার সালাত পাঠানোর মর্মার্থ হলো- রহমত। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা নবিজির প্রতি অবিরত রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সালাত পাঠানোর মর্মার্থ হলো- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর রহমত বর্ষণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। এই দোয়াই হচ্ছে দরুদ। সুতরাং হে ঈমানদাররা! তোমরাও নবিজির প্রতি দরুদ পড়ো।
দরুদ পড়ার গুরুত্ব
১. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন সেই ব্যক্তিই আমার সবচেয়ে কাছাকাছি হবে যে আমার জন্য বেশি বেশি দরুদ পড়ে। (তিরমিজি)
২. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মাতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তির উপস্থিতিতে আমার নাম উচ্চারিত হবে, কিন্তু আমার প্রতি দরুদ পড়বে না, সে বড় কৃপণ। (তিরমিজি)
দরুদ পড়ার ফজিলত
যারা সবসময় দরুদ পড়বে তাদের জন্য হাদিসে পাকে সুন্দর সুসংবাদ এসেছে। তাহলো-
১. হজরত আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন। তখন তার চেহারায় আনন্দের আভা দেখা যাচ্ছিল। এসেই বললেন, হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম আমার কাছে এসেছিলেন এবং বলে গেলেন, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আপনি কি এতে সন্তুষ্ট হবেন না যে, আপনার উম্মতের কেউ আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করলে আমি তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করবো। কেউ একবার সালাম পেশ করলে তার প্রতি সালাম পেশ করবো ১০ বার। আল্লাহ আমাদেরকে বেশি বেশি দরুদ পড়ার তওফিক দিন।’ (নাসাঈ)
২. অপর বর্ণনায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পড়বে। আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত নাজিল করবেন, এবং তার দশটি গুনাহ (ছগিরা) মাফ করা হবে, ও তার দশটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেওয়া হবে।’ (নাসাঈ)
সুতরাং আসুন, আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালন করি এবং নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনাদর্শ বাস্তবায়ন করি। পাশাপাশি তাঁর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ বেশি বেশি দরুদ পড়ি। সব সময় দরুদ পড়ার মাধ্যমে তার শাফায়াত পাওয়ার চেষ্টা করি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি দরুদ পড়ার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস