আল্লাহ মানুষকে যেসব আমলে জান্নাত দেবেন
আল্লাহ তাআলার ওয়াদা ও ঘোষণা সত্য। যে বা যারা আল্লাহ পথে চলার, আল্লাহর রঙে নিজেদের রাঙানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করবে; আল্লাহ তাআলা তাদের সঠিক পথে পরিচালত করবেন। সঠিক পথ দেখাবেন। দান করবেন চিরস্থায়ী শান্তির স্থান জান্নাত। এটা মহান আল্লাহ তাআলার ওয়াদা। এ জান্নাত পেতে দুইটি আমলের কথা বলেছেন আল্লাহ। কী সেই দুইটি আমল?
যারা কষ্ট, পরীক্ষা এবং সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পরও সঠিক পথ পেতে (আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে) দ্বীনের উপর আমল করতে একনিষ্ঠ থাকে; মহান আল্লাহ তাদের শুধু সঠিক পথই দেখাবেন না; দুনিয়া ও পরকালে অনেক নেয়ামত দান করেন। পরকালে তাদের জন্য জান্নাত সুনিশ্চিত। কোরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ঘোষণাও এসেছে এভাবে-
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَهۡدِیۡهِمۡ رَبُّهُمۡ بِاِیۡمَانِهِمۡ ۚ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهِمُ الۡاَنۡهٰرُ فِیۡ جَنّٰتِ النَّعِیۡمِ
নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে, তাদের রব তাদেরকে লক্ষ্য স্থলে (জান্নাতে) পৌঁছে দিবেন তাদের ঈমানের কারণে, শান্তির উদ্যানসমূহে, তাদের (বাসস্থানের) তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ বইতে থাকবে।’ (সুরা ইউনুছ : আয়াত ৯)
এ আয়াতে মহান আল্লাহ বান্দাকে দুইটি আমলের উপদেশ দিয়েছেন। যার একটি হলো- মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপন করা। আর দ্বিতীয়টি হলো- জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেক আমল করা। অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে বড় নেক আমল।
মনে রাখতে হবে
মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়াবান। তিনি নিজ অনুগ্রহে তার বান্দাকে সঠিক পথ দেখান; যারা সঠিক পথ পাওয়ার চেষ্টা করে। নেক আমল করে। এ সব ব্যক্তিদের প্রচেষ্টার কারণে আল্লাহ তাআলা তাদের বিশেষ পুরস্কারও দেবেন। কোরআনুল কারিমের এক বর্ণনায় এসেছে-
وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য রাস্তা তালাশ করে; তারা যদি রাস্তা খুঁজে নাও পায়, আমি আল্লাহ স্বয়ং তাকে রাস্তা দেখিয়ে দেব। নিশ্চয়ই আল্লাহ (সঠিক পথের অনুসন্ধানকারী) সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
وَ یَزِیۡدُ اللّٰهُ الَّذِیۡنَ اهۡتَدَوۡا هُدًی ؕ وَ الۡبٰقِیٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَیۡرٌ عِنۡدَ رَبِّکَ ثَوَابًا وَّ خَیۡرٌ مَّرَدًّا
‘আর যারা সৎ পথে চলে আল্লাহ তাদেরকে অধিক হেদায়াত দান করেন এবং স্থায়ী সৎ কাজ তোমার রবের পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য সাওয়াবের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসাবেও অতি উত্তম।’ (সুরা মারইয়াম : আয়াত ৭৬)
কোরআনুল কারিমের এ আয়াতটি মুমিন মুসলমানের মুক্তি, শান্তি ও কল্যানের জন্য যথেষ্ট এবং সুসংবাদ-
وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য রাস্তা তালাশ করে; তারা যদি রাস্তা খুঁজে নাও পায়, আমি আল্লাহ স্বয়ং তাকে রাস্তা দেখিয়ে দেব। নিশ্চয়ই আল্লাহ (সঠিক পথের অনুসন্ধানকারী) সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৯)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে দ্বীনের পথে চলতে, নেক আমল করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথা বলেছেন। তারপরও যদি কেউ সঠিক পথের সন্ধান পেতে অক্ষম হয় তবে মহান আল্লাহ তাআলা তাদের প্রচেষ্টার কারণে দয়া করে সঠিক দেখাবেন। কেননা আল্লাহ তাআলার ঘোষণা তিনি নেক আমলকারীদের সঙ্গে আছেন।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা। ফলে সঠিক পথ পেতে কষ্ট হলেও আল্লাহ মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালে তার সন্তুষ্টি লাভে কোরআনের আয়াতের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। নেক আমলে পুরো জীবন অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস