হাজিরা যে কারণে ‘হাজরে আসওয়াদ’ চুম্বন করবে
হাজরে আসওয়াদ। একটি কালো পাথরের নাম। যা পবিত্র কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় স্থাপিত। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিজ হাতে এ পাথরটি কাবা শরিফের এ স্থানে স্থাপন করেন। পাথরটি স্থাপনের পর নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাতে চুম্বন করেন। কিন্তু এ পাথরটি চুম্বনের উপকারিতা কী?
আল্লাহ তাআলার অনন্য নির্দশন হাজরে আসওয়াদ। হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, স্পর্শ কিংবা এরদিকে ইশারা করে এ স্থান থেকে হজ-ওমরা পালনকারীদের কাবা শরিফ তাওয়াফ শুরু করতে হয়। আল্লাহ তাআলা এ পাথরের কোন থেকে তাওয়াফ করাকে বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন।
পাথরটি চুম্বনের উপকারিতা
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ পাথরটিতে চুম্বন করেছেন; তাই মুসলিম উম্মাহর জন্য এ পাথরটি চুম্বন করা সুন্নাত। আর কাবা শরিফ তাওয়াফকালে এ পাথরটি চুম্বন বা স্পর্শ সম্ভব না হলে এর দিকে ইশারা করে তাওয়াফ শুরু করাও সুন্নাত। হাজরে আসওয়াদ চুম্বনের একটি চমৎকার ফজিলতের কথা এসেছে হাদিসের বর্ণনায়-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে বলেছেন- ‘আল্লাহর কসম! নিশ্চিত আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন এটাকে এমনভাবে ওঠাবেন যে, তখন-
১. এটার (হাজরে আসওয়াদের) দুইটি চোখ হবে; যা দিয়ে দেখবে।
২. এর (হাজরে আসওয়াদের) একটি জিহ্বা হবে; যা দিয়ে কথা বলবে।
আর যে ব্যক্তি বিশ্বাসের (নবিজীর ভালোবাসায় একনিষ্ঠতার) সঙ্গে এটাকে চুম্বন করেছে, তার পক্ষে এটা (হাজরে আসওয়াদ মুক্তির) সাক্ষ্য দেবে। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, দারেমি)
এ কারণেই হজ ও ওমরা পালনকারীদের কাছে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা এক মহা আকর্ষণের নাম। আল্লাহ তাআলা যাকে তাওফিক দেন তিনিই এ পাথর চুম্বনে সমর্থ হন।
কথিত আছে, ‘এ পাথরে চুম্বনের বরকতে মহান আল্লাহ তাআলা মানুষের গুনাহ মাফ করে দেন। এমনটিও শোনা যায়, এ পাথর মানুষের গুনাহকে শরীর থেকে শুষে নেয়। তবে হজ ও ওমরা পালনকারীদের উচিত অন্যকে কষ্ট না দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা। অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হলে বা অন্যকে কষ্ট দেওয়া হবে মনে করলে চুম্বন বা স্পর্শ থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ ও ওমরাপালনকারীকে গুনাহ মাফ ও হাদিসে বর্ণিত উপকারিতা পাওয়ার নিয়তে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুকরণে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন এবং স্পর্শ করার তাওফিক দান করুন। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা অনন্য নির্দশন হাজরে আসওয়াদের পক্ষ থেকে মুক্তির সাক্ষ্য পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম