এতিম ও নারীর অধিকারের সঙ্গে তারাবিতে পড়া হবে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
সুন্দর নিরাপদ ও অধিকার সংরক্ষণের অনন্য জীবন ব্যবস্থার নাম ইসলাম। রমজান এলেই মুমিন মুসলমান হাফেজে কোরআনদের তেলাওয়াতের মাধ্যমে এসব বিধান শুনে। তারাবি নামাজের তেলাওয়াতে ধারাবাহিকভাবে উঠে আসে ইসলামের সব সুন্দর সুন্দর বিধান ও থাকে জীবন ও ঈমান সংশ্লিষ্ট সমস্যার সমাধানে আল্লাহর কাছে আবেদন জানানোর দোয়া। রমজানের আজকের তৃতীয় তারাবিতে থাকবে পারিবারিক, দাম্পত্য জীবন, সম্পদের বণ্টনের বিধানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং বেশ কিছু কার্যকরী দোয়া।
আজ (৪ এপ্রিল) সোমবার। দ্বিতীয় রমজান অতিবাহিত হলো। সন্ধ্যায় পড়া হবে রমজানের তৃতীয় তারাবি। ইতিমধ্যে ৩ পারা তেলাওয়াত শেষ হয়েছে। ৪র্থ পারা তথা সুরা আল-ইমরানের ৯২ আয়াত থেকে সুরা নিসার ৮৭ আয়াত পর্যন্ত তেলাওয়াত করা হবে। প্রথম আয়াতটি রমজানের গুরুত্বপূর্ণ এটি আমল দান-সাদকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। হাফেজে কোরআনরা প্রথম আয়াতে ঘোষণা করবেন-
لَن تَنَالُواْ الْبِرَّ حَتَّى تُنفِقُواْ مِمَّا تُحِبُّونَ وَمَا تُنفِقُواْ مِن شَيْءٍ فَإِنَّ اللّهَ بِهِ عَلِيمٌ
‘কখনও কল্যাণ পাবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে ব্যয় না করবে। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৯২)
রহমতের মাস রমজানে প্রত্যেকের জন্য বরকতময় আমল হলো নিজেদের সবচেয়ে বেশি প্রিয় বস্তু আল্লাহর রাস্তায় দান করা। এ আয়াত নাজিলের পর সাহাবায়ে কেরাম তাদের সবচেয়ে প্রিয় বস্তুর খোঁজে মনোনিবেশ করেছিলেন এবং তাঁরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু আল্লাহর পথে দানও করেছিলেন।
মদিনার আনসারি সাহাবিদের মধ্যে হজরত আবু তালহা আনসারি ছিলেন অনেক ধনী। মদিনায় সবচেয়ে বেশি খেজুরের বাগান ছিল তাঁর। শুধু তা-ই নয়, মসজিদে নববির পাশে সবচেয়ে প্রিয় ও দামি ‘বায়রুহা’ নামক খেজুর বাগানও ছিল এ সাহাবির। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝে মাঝে এ বাগানে প্রবেশ করতেন এবং বাগানের মিষ্টি মধুর পানি পান করতেন। যখন কোরআনুল কারিমের এ আয়াতটি নাজিল হয়-
لَن تَنَالُواْ الْبِرَّ حَتَّى تُنفِقُواْ مِمَّا تُحِبُّونَ وَمَا تُنفِقُواْ مِن شَيْءٍ فَإِنَّ اللّهَ بِهِ عَلِيمٌ
কখনও কল্যাণ পাবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে ব্যয় না করবে। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৯২)
তখন হজরত আবু তালহা আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা বলেন- তোমরা নিজের প্রিয় বস্তু দান না করা পর্যন্ত কল্যাণ পাবে না। আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় বস্তু হালো- আমার ‘বায়রুহা’ বাগান। তাই আমি এটা আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিলাম। আমি এর কল্যাণ আল্লাহর কাছে সঞ্চিত রাখতে চাই। সতুরাং আপনার ইচ্ছামতো একে ব্যয় করুন।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তা লাভজনক সম্পদ; তা লাভজনক সম্পদ। আমি তোমার কথা শুনেছি। আমি মনে করি তোমার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বাগানটি দান করে দিলে ভালো হতো।
হজরত আবু তালহা আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘তা আমি করে নেব ইয়া রাসুলুল্লাহ! এরপর তিনি বাগানটি তার আত্মীয় ও চাচার সন্তানদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে, তিনি বাগানটি হজরত হাস্সান বিন সাবেত ও উবাই ইবনে কাবের মধ্যে বণ্টন করে দেন।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, মুসনাদে আহামদ, নাসাঈ)
আজকের তারাবিতে হাফেজে কোরআনগণ নারীর অধিকার, এতিমের অধিকার, বিয়ে-শাদি ও সম্পদ বণ্টনের বিধানসহ গুরুত্বপূর্ণ দোয়া পড়বেন। সুরা নিসার ৮৭ আয়াত পর্যন্ত সুন্দর ঘটনা, বিধান ও দোয়াগুলো শুনে হৃদয় জুড়াবেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
শুরুতেই ধারাবাহিকভাবে আজকের নির্ধারিত অংশের দোয়াগুলো তুলে ধরা হলো-
১. গুনাহ মুক্তির দোয়া
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِىٓ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِينَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আকদামানা ওয়াংছুরনা আলাল কাওমিল কাফিরিন।'
অর্থ: ‘হে আমাদের রব! আমাদের অপরাধগুলো এবং আমাদের কাজকর্মে বাড়াবাড়িগুলো তুমি ক্ষমা করে দাও, আমাদের দৃঢ়পদ রেখ এবং কাফিদের ওপর আমাদের সাহায্য কর।’ (সুরা আল ইমরান: আয়াত ১৪৭)
২. সুখ-দুঃখে আল্লাহর ওপর ভরসা করা
حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ
উচ্চারণ: 'হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল'
অর্থ: ‘আমাদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক!’ (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৭৩)
৩. জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া
رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بٰطِلًا سُبْحٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ - رَبَّنَآ إِنَّكَ مَن تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُۥ ۖ وَمَا لِلظّٰلِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা মা খালাকতা হাজা বাত্বিলান সুবহানাকা ফা-কিনা আজাবন নার। রাব্বানা ইন্নাকা মাং তুদখিলিন নারা ফা-কাদ আখযাইতাহু ওয়া মা লিজ-জ্বালিমিনা মিন আংছার।’
অর্থ: ‘হে আমাদের রব! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করোনি। সব পবিত্রতা তোমারই; আমাদের তুমি দোজখের শাস্তি থেকে বাঁচাও। হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই তুমি যাকে দোজখে নিক্ষেপ করলে তাকে সবসময় অপমানিত করলে; আর জালেমদের জন্যে তো সাহায্যকারী নেই।' (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৯১-১৯২)
৪. ঈমানদারের গুনাহ থেকে মুক্তি কৌশল
رَّبَّنَآ إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِى لِلْإِيمٰنِ أَنْ ءَامِنُوا بِرَبِّكُمْ فَـَٔامَنَّا ۚ رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّـَٔاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা ইন্নানা সামিনা মুনাদিআই-ইয়ুনাদি লিল-ইমানি আন আমিনু বিরাব্বিকুম ফা-আমান্না; রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সাইয়্যেআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।'
অর্থ : 'হে আমাদের রব! আমরা নিশ্চিতরূপে একজন আহ্বানকারীকে ঈমানের প্রতি আহ্বান করতে শুনেছি যে, তোমাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আন; তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! এরপর আমাদের সব গুনাহ মাফ কর এবং আমাদের সব দোষ-ত্রুটি দূর করে দাও, আর আমাদের মৃত্যু দাও নেক লোকদের সঙ্গে।' (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৯৩)
৫. অপমান থেকে বাঁচার দোয়া-
رَبَّنَا وَءَاتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلٰى رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ۗ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানা ওয়া আতিনা মা ওয়া আততানা আলা রুসুলিক ওয়া লা তুখযিনা ইয়াওমাল ক্বিয়ামাতি ইন্নাকা লা তুখলিফুল মিআদ।'
অর্থ : 'হে আমাদের প্রভু! আমাদের (তা) দাও, যা তুমি ওয়াদা করেছ তোমার রসুলদের মাধ্যমে এবং কেয়ামতের দিন আমাদের তুমি অপমানিত করো না। নিশ্চয়ই তুমি ওয়াদা ভঙ্গ করো না।' (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৯৪)
৬. জুলুম-অত্যাচার থেকে মুক্ত থাকার দোয়া
رَبَّنَآ أَخْرِجْنَا مِنْ هٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا
উচ্চারণ : রাব্বানা আখরিঝনা মিন হাজিহিল কারইয়াতিজ জালিমি আহলুহা ওয়াঝআল্লানা মিল্লাদুনকা ওয়ালিয়্যাও ওয়াঝআল্লানা মিল্লাদুনকা নাছিরা।'
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এ যালিম অধ্যুষিত জনপথ থেকে মুক্তি দাও, তোমার পক্ষ থেকে কাউকে আমাদের বন্ধু বানিয়ে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে কাউকে আমাদের সাহায্যকারী করে দাও।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৭৫)
অসংখ্য নেয়ামতের ঘোষণাও রয়েছে আজকের তারাবিতে। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে মানুষকে উদ্দেশ্য করে ঘোষণা করেন, হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০২)
মানুষকে রমজান দান করা হয়েছে, ভয় অর্জন করার জন্য। আবার যে মহামানবের ওপর কোরআন নাজিল হয়েছে, তাঁকেও মুমিন মুসলমানের জন্য নেয়ামত হিসেবে পাঠিয়েছেন। যিনি মুসলিম জাতিকে দেখিয়েছেন সঠিক পথ। আবার এ পথের বাঁকে বাঁকে কীভাবে চলতে হবে দেখিয়েছেন সে পথও। আল্লাহ বলেন-
'আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবি পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট।' (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬৪)
এ রকম অসংখ্য নেয়ামতের কথায় ভরপুর আজকের তারাবিহ, যা মুমিন মুসলমানের হৃদয়ে যেমন দ্বীন ও ইসলামি জীবন-যাপনে উৎসাহের ঝড় তুলবে তেমনি নিজেদের গুনাহ থেকে মুক্তি লাভে ক্ষমা-প্রার্থনায় রোনাজারিতে অশ্রু বিসর্জন দেবে। হাফেজে কোরআনরা আজ দেড় পারা তেলাওয়াত করবেন। সুরা আল-ইমরানের ৯২নং আয়াত থেকে সুরাটির শেষ পর্যন্ত এবং সুরা নিসার ১-৮৭ নং আয়াত পর্যন্ত তেলাওয়াত করা হবে।
সুরা আল ইমরান
মদিনায় অবতীর্ণ ২০ রুকু ও ২০০ আয়াতবিশিষ্ট সুরা এটি। এ সুরার আয়াতগুলো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের পর বিভিন্ন সময়ে নাজিল হয়। আজ তৃতীয় তারাবিতে ৯২ থেকে ২০০নং আয়াত তেলাওয়াত করা হবে। এ অংশে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। সুরাটির বাকি অংশে মানুষের হেদায়েতের জন্য যেসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, তার সংক্ষিপ্ত সূচি হলো-
আয়াত ৯২-২০০
>> দান-সাদকার ছাওয়াব প্রাপ্তি;
>> হালাল ও হারামের ব্যাপারে তাওরাতের নীতির পাশাপাশি কোরআনের নীতির উল্লেখ;
>> মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা এবং পবিত্র কাবা শরীফের ইতিহাস ও মর্যাদা সম্পর্কিত বিষয়।
>> মুসলমানের শরীরিক ও আর্থিক ইবাদত হজ ফরজ হওয়ার প্রসঙ্গ;
>> নেতা নির্বাচন ও নেতৃত্বের গুণাবলির আলোচনা;
>> তাকওয়ার হক সম্পর্কিত বিষয় ও ইসলামের ঐক্যের গুরুত্ব;
>> ইসলামের প্রথম সামরিক বিজয় বদর যুদ্ধের পটভূমি;
>> ওহুদ যুদ্ধ ও ওহুদ যুদ্ধের পটভূমি এবং মুনাফিকদের বিশ্বাসঘাতকতা বিষয়টিও ওঠে এসেছে সুরার এ অংশে।
>> অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সুদের চারিত্রিক ও অর্থনৈতিক ভয়াবহ অনিষ্টতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও ওঠে আসবে আজকের তারাবিতে।
>> গাযওয়ায়ে হামরাউল আসাদের ঘটনা, ওহুদ যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে গাযওয়ায়ে বদরে সোগরা এবং ইসলামের জন্য যুদ্ধে নিহতদের শহীদ এবং জীবিত হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে। সর্বোপরি আসমান ও জমিন সৃষ্টির উদ্দেশ্য এবং ধৈর্য অবলম্বনের বিষয়টিও ওঠে এসেছে এ সুরায়।
সুরা নিসা
কোরআনুল কারিমের ৪র্থ সুরা। সুরাটি তৃতীয় হিজরির শেষ দিকে শুরু হয়ে পঞ্চম হিজরির প্রথম সময় পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মদিনায় নাজিল হয়েছে। ২৪ রুকুর এ সুরাটিতে রয়েছে ১৭৬ আয়াত। আজ সুরাটির ৮৭ আয়াত পর্যন্ত তেলাওয়াত হবে।
পারিবারিক জীবনের শক্তবন্ধন, দাম্পত্য জীবন এবং বিবাহ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়গুলো ওঠে এসেছে এ সুরায়। বিয়ে-শাদী সংক্রান্ত বিধানগুলো পড়া হবে আজ। সুরাটির ৮৭ আয়াত পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সূচি তুলে ধরা হলো
> আয়াত ০১-১৪
- ইয়াতিমদের বিবাহ করার হুকুম;
- পুরুষের একাধিক বিবাহ প্রসঙ্গ এবং
- এক মহিলার একাধিক স্বামী গ্রহণ করার বিধান।
- দাসিদের বিয়ে;
- ইয়াতিম মেয়েদের অধিকার সংরক্ষণ;
- নারীর অধিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও বিধান;
- ইসলামের উত্তরাধিকার বণ্টনের বিধান ও মূলনীতি।
> আয়াত ১৫-২৩
- সুখী দাম্পত্য জীবন গঠনে ব্যভিচার দমনের বিধান;
- সমকামিতার শাস্তির সুস্পষ্ট বর্ণনা;
- নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা;
- স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মূলভিত্তি;
- ইসলামে যাদের বিয়ে করা হারাম এবং
- আইন প্রণয়নের অধিকার।
> আয়াত ২৪-৩৫
- যুদ্ধবন্দি নারীদের প্রসঙ্গ;
- পারিবারিক সমাজ ব্যবস্থার প্রথম বুনিয়াদ বিয়ের কিছু মূলনীতির পাশাপাশি জাহেলি সমাজের বিয়ে প্রসঙ্গ;
- ক্রীতদাসীদের বিয়ে;
- ইসলামে নারী-পুরুষের অবস্থান;
- ইসলামে নেককার স্ত্রীর গুণাবলি;
- ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় বিধান;
- মুসলিম সমাজের অর্থনৈতিক লেনদেন, বড় গুনাহ পরিহারে ছোট গুনাহ মাফের আশ্বাসও রয়েছে আজকের তারবিহতে পঠিত কোরআনের এ অংশে।
> আয়াত ৩৬-৪৩
মাদক গ্রহণের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রথমিক ও মাদক দ্রব্য হারাম হওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণার পাশাপাশি সমাজে অনাচার ও অনিয়ম নির্মূলে কোরআনের নীতির বিষয়টি ওঠে এসেছে।
> আয়াত ৪৪-৫৭
আহলে কিতাবের অনুসারীদের অজ্ঞতা ও জঘন্য চরিত্রের আলোচনার পাশাপাশি জিবত ও তাগুত প্রসঙ্গ এবং সত্য মিথ্যার সংঘাতের সুস্পষ্ট বিষয়াবলি পঠিত হবে আজ।
> আয়াত ৫৮-৭০
ইসলামে ইজতিহাদ ও কিয়াসের প্রমাণ; ন্যায়বিচারের মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামি বিধান বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ক্ষমতার আবশ্যকতার গুরুত্বও ওঠে এসেছে আজকের তারাবিহতে।
> আয়াত ৭১-৮৭
সর্বোপরি মানুষের শ্রেণিবিন্যাস, সমরবিদ্যা, ইসলামে জিহাদের গুরুত্ব, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, মানবীয় বোধশক্তির সীমাবদ্ধতাসহ পারস্পরিক সালাম বিনিময়ের গুরুত্ব এবং আল্লাহ-রাসুলের আনুগত্যশীলরা নবি-সিদ্দিকের সঙ্গী হওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণাও পড়া হবে আজ।
আল্লাহর প্রেমে আত্মহারা মুমিন মুসলমান ঘরে ঘরে তারাবি আদায় করবে। তারাবি নামাজের আগে এ অংশের তাফসির, অধ্যয়ন কিংবা তেলাওয়াত করায় থাকবে অনেক বেশি ফজিলত। আর গুরুত্বপূর্ণ এ দোয়াগুলো তাতে শেখা হয়ে যাবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তারাবি আদায় করার তাওফিক দান করুন। কোরআনের নূরে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম