তুরস্কে জলপাই দিয়ে ইফতার
মুসলিম বিশ্বের মহিমান্বিত মাস রমজান। এ মাস ঘিরে নানা অনুষ্ঠান আর রীতি-রেওয়াজ আছে। রোজা রাখা, ইফতারের পর তারাবির নামাজ পড়া ইত্যাদি ছাড়াও আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমেও সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় খুশির আমেজ। ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠানের চেয়েও এসব রীতি সাংস্কৃতিক উদযাপন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। মুসলিম দেশ হিসেবে অন্যতম তুরস্ক। সেখানে রমজান কীভাবে পালিত হয়, তা নিয়ে লিখেছেন মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ—
ঢোল-দামামা বাজিয়ে সেহরির জন্য জাগা
মিশরের মতোই একদল মানুষ সেহরির সময় জাগিয়ে তোলেন তুরস্কের মানুষকে। কিন্তু শুধু গান গেয়ে বা উঁচু গলায় ডেকে নয়, তারা রাস্তায় নামেন ঢোল-দামামা বাজিয়ে। ঢোলের শব্দে জেগে ওঠে পুরো ইস্তাম্বুল।
সওয়াব ও সৌভাগ্যের রীতি
প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা এ রীতির পেছনের বিশ্বাস হলো, সেহরিতে মুসলমানদের জাগিয়ে দেওয়া অন্য মুসলমানের জন্য সওয়াব ও সৌভাগ্য বয়ে আনে। ঠিক এ বিশ্বাস থেকেই যুগ যুগ ধরে একদল মানুষ কেবল রমজান মাসের তাৎপর্যকে সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে বাজিয়ে চলেছেন ঢোল-দামামা।
ড্রামের শব্দে সেহরির আয়োজন
সেহরির সময় হলেই দেশটির অলিগলিতে বেজে ওঠে ড্রামের শব্দ। মানুষকে সময়মতো জাগিয়ে দেওয়ার জন্য একদল তুর্কি ড্রাম বাজিয়ে গান গেয়ে ডাকাডাকি করেন। নারীরাই প্রথমে ঘুম থেকে জাগেন। তারা সেহরির খাবার তৈরি করেন। পুরুষদের জাগিয়ে দেন।
কামানের আওয়াজে সেহরি ও ইফতার
সেহরি ও ইফতারের সময় তুরস্কেও কামানের গোলার আওয়াজ শোনা যায়। দিনের বেলায় রেস্তোরাঁ এবং খাবারের দোকান বন্ধ থাকলেও দুপুরের পর থেকেই চলতে থাকে ইফতারের আয়োজন। সেহরির সময়ও রেস্তোরাঁগুলো খোলা রাখা হয়।
সেহরি ও ইফতারে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণ
দেশটিতে সেহরি ও ইফতারের সময় অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদেরও মুসলমানদের সঙ্গে সৌহার্দ্য বজায় রেখে যোগ দিতে দেখা যায়।
কর্মঘণ্টায় বদল নেই
রমজান মাসে সরকারি অফিস-আদালতের কর্মঘণ্টা বা সময় পরিবর্তনের কোনো আয়োজন নেই তুরস্কে। অফিস-আদালত ঠিক রেখেই তারা ইফতারের আগে ঘরে ফেরার চেষ্টা করেন।
বইমেলা ও কোরআন প্রতিযোগিতা
রমজান এলেই তুরস্কের আমেজ হয় অন্যরকম। মসজিদের পাশে বইমেলা এবং কোরআন প্রতিযোগিতা তুরস্কের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
জলপাই দিয়ে ইফতার
খেজুরের পরিবর্তে জলপাই দিয়ে তুর্কিরা ইফতারের সময় রোজা ভাঙেন।
মুনশি/এসইউ/জেআইএম