নবিজীর (সা.) যে উপদেশ পরিবারের জন্য অনুপ্রেরণা
যেসব নারী ঘরের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করে, ইসলামের দৃষ্টিতে তারাই উত্তম। ঘরের কাজে এসব নারীর চেহারা ও কপালে পরিশ্রমে চিহ্ন ফুটে ওঠে। যদি কারো কোনো কাজ না থাকে, তারপরও যেন তাদের চেহারায় অন্তত রান্না ঘরের ধোঁয়া-কালির মলিনতা প্রকাশ পায়। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে এসব নারীর জন্য রয়েছে বিশেষ সুসংবাদ। হাদিসের বর্ণনায় সেসব সুসংবাদগুলো কী?
নারীদের পরিশ্রমের উপকারিতা অনেক বেশি। তা শুধু নিজেদের উপকারই নয় বরং পরিবারের (সন্তান-সন্তুতির) জন্যও রয়েছে অনেক উপকারিতা। পরিবারের ছোট সদস্যরা ঘরের নারীদের (মা-বোনদের) পরিশ্রম দেখে নিজেরাও পরিশ্রমের অভ্যাস ও অনুপ্রেরণা পায়।
পরিশ্রমী নারীদের জন্য নবিজীর বিশেষ ঘোষণা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'কেয়ামতের দিন আমি আর মলিন চেহারার (পরিশ্রমী) নারীরা এভাবে অবস্থান করবো।' এ কথা বলার সময় তিনি নিজের শাহাদাত ও মধ্যমা আঙুল 'ভি চিহ্ন-এর মতো' মিলিয়ে দেখিয়েছেন।
তাছাড়া নারীর সুস্থতার জন্য পরিশ্রমের বিকল্প নেই। ধৈর্যের সঙ্গে পরিশ্রমী ও কষ্ট সহিষ্ণু জীবনযাপন নারীদের যেমন সুস্থ রাখে তেমনি তাদের এ অভ্যাস পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও গড়ে ওঠে।
সুতরাং নিজ সন্তান-সন্তুতিকে প্রথম থেকে ধৈর্যশীল, সহনশীল ও পরিশ্রমী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নারী তথা মা-বোনদের প্রচেষ্টা অনেক বেশি কার্যকরী। ঘরে কাজের লোক থাকলেও নিজ সন্তান-সন্তুতি তথা ছোট সদস্যদের হালকা কাজগুলো অন্যের সাহায্য ছাড়া সম্পন্ন করাই উত্তম।
এমনকি যে কাজগুলো একটু চেষ্টা করলে নিজেরা করতে সক্ষম, সে কাজগুলো নিজেদের করাই উত্তম। এতে তারা যেমন একটু পরিশ্রমে সুস্থ থাকবে তেমনি তাদের মাঝে কাজে অভ্যাস গড়ে উঠবে। এ কাজের জন্য নারীদের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।
নারী সাহাবিদের কাজ
ইসলামের প্রথম যুগের নারীদের কর্মকাণ্ডের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নারী সাহাবিগণ নিজেদের কাজ নিজে হাতেই সম্পাদন করতেন। নারী সাহাবিরা যেসব কাজ নিজ হাতে করতেন তাহলো-
১. রান্নার কাজ নিজেরাই করতেন।
২. চাক্কিতে গম, যব পিষতেন।
৩. পানি ভরে আনতেন।
৪. নিজেদের কাপড় সেলাই করতেন এবং তা পরিষ্কার করতেন।
৫. সাংসারিক পরিশ্রম ও কষ্টের কাজ করে জীবন-যাপন করতেন।
৬. প্রয়োজনে, যুদ্ধের ময়দানে আহত সৈনিকদের সেবা করতেন।
৭. যোদ্ধাদের পানি পান করানোর দায়িত্ব পালন করতেন।
উল্লেখিত কাজগুলো সারা দুনিয়ার নারীদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। এতে নারীদের জন্য সুস্থ থাকার উপায়। আবার নিজেদের সন্তানদের উপরও এর প্রতিক্রিয়া বাস্তবায়িত হয়। নিজেদের সন্তান-সন্তুতিরা মা-বোনদের কাছ থেকে কাজের অভ্যাস গঠনের অনুপ্রেরণা লাভ করে। আর এতে তাদের সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য অক্ষুন্ন থাকে।
সুতরাং হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক নারীর জন্য পরিশ্রম ও কষ্ট সহিষ্ণু কাজের মাধ্যমে যেমন সুস্থ থাকা জরুরি। আবার তাদের কাজের এ অভ্যাস পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাঝে বাস্তবায়নও জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে হাদিসের নির্দেশনা মেনে ঘরের কাজে যথাযথভাবে সম্পাদন করার তাওফিক দান করুন। নিজ সন্তান-সন্তুতিকেও কাজের অভ্যাস গঠনে তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সব নারীকে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস