কোরআনের যে একটি আমলে বাড়ে রিজিক
আল্লাহ তাআলা মানুষকে কল্যাণের অনেক আমল করার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ আমলের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আর তাহলো- রিজিক বড়িয়ে দেওয়ার আমল। কোরআনের ঘোষণায় সে আমলটি কী?
রিজিক, হায়াত, ধন-সম্পদ, কল্যাণের জন্য অনেক আমল এসেছে কোরআন-সুন্নায়। কিন্তু আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে রিজিক বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন কোরআনে। বিনিময়ে একটি আমল করতে বলেছেন তিনি। তাহলো-
قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِهٖ وَ یَقۡدِرُ لَهٗ ؕ وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَهُوَ یُخۡلِفُهٗ ۚ وَ هُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, ‘নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর; তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ (সুরা সাবা : আয়াত ৩৯)
কত সুন্দর ও সুস্পষ্ট ঘোষণা এটি। আমলটি হলো- আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে তাঁরই পথে ব্যয় করা। যারা আল্লাহর দেওয়া সম্পদ থেকে ব্যয় করবে; আল্লাহ তাআলা তাদের বিনিময় দেবেন। আর সেই বিনিময় হলো উত্তম রিজিক।
যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার আদেশ অনুযায়ী ব্যয় করবে, তিনি নিজ দায়িত্বে তাকে বিনিময় দেওয়ার দায়িত্বে গ্রহণ করেছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রতিদিন ভোরে দুইজন ফেরেশতা নাজিল হয়। তাদের একজন এ দোয়া করতে থাকে যে- ‘হে আল্লাহ! আপনি ব্যয়কারীকে প্রতিফল দিন।’ আরেকজন দোয়া করতে থাকে যে- ‘হে আল্লাহ! যে ব্যয় করে না তার সম্পদ ধ্বংস করে দিন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিস থেকেও প্রমাণিত যে, আল্লাহর পথে ব্যয় করার গুরুত্ব কতবেশি। আর দান না করার ক্ষতিও কত মারাত্মক!
মনে রাখতে হবে
ধন-সম্পদ কম-বেশি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির কারণ নয়। কারণ আল্লাহ তাআলা মুমিন-মুশরিক সবাইকে ধন-সম্পদ ও রিজিক দেন। অনেক সময় কাফের-মুশরিকদের অনেক বেশি সম্পদ দেন। কিন্তু কেন? তাদেরকে ঢিল বা অবকাশ দেওয়ার জন্য।
পক্ষান্তরে কখনো মুমিনকে অভাব-অনটন দেন। কিন্তু কেন? মুমিনের নেকি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এর মাঝেও যারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করবে, আল্লাহ তাআলা তাদের রিজিক দেবেন।
কাউকে দান করা কিংবা কারো জন্য খরচ করা মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ। আর এ অনুগ্রহের কারণেই দানের আমলে মহান আল্লাহ বান্দাকে রিজিক বাড়িয়ে দেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে-
‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি খরচ করো; আমি তোমার জন্য খরচ করব। (অর্থাৎ তোমার খরচের বিনিময় দেব)।’ (বুখারি)
আবার বান্দাকে অভাবমুক্ত থাকার জন্য আল্লাহ তাআলা একটি দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। অভাব মোচনে যে দোয়াটি আমরা বেশি বেশি পড়বে; তাহলো-
اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَآئِدَةً مِّنَ السَّمَاء تَكُونُ لَنَا عِيداً لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা আনযিল আলাইনা মায়িদাতাম মিনাস সামায়ি তাকুনু লানা ঈদাল্লি আওওয়ালিনা ওয়া আখিরিনা ওয়া আয়াতাম মিনকা ওয়ারযুকনা ওয়া আনতা খায়রুর রাযিকিন।’ (সুরা মায়েদা: আয়াত ১১৪)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সাধ্যানুযায়ী আল্লাহর পথে তারই দেওয়ার সম্পদ বা রিজিক থেকে দান করার তাওফিক দান করুন। কোরআনের আমল বাস্তবায়ন করে নিজেদের রিজিক বাড়িয়ে নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম