ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

সবর ও শোকরেই জান্নাতের অঙ্গীকার!

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:২৬ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

খুবই কুৎসিত এবং ছোট আকৃতির লোক ছিলেন তাবেঈ ইমরান বিন হাত্বান। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ছিল খুবই সুন্দরী। একদিন ইমরান বিন হাত্বান বাড়ি এসে দেখলেন তাঁর স্ত্রী নতুন পোশাকে অপরূপা হয়ে আছে। দেখতেও চমৎকার সুন্দর লাগছিল তাকে। স্ত্রীর দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকাতেই তার স্ত্রী বলে উঠলো- ‘ইন শা আল্লাহ; আমরা উভয়ে জান্নাতি হবো’; কিন্তু কেন? এমন কি ঘটলো যে তিনি এমনটি বললেন?

সঙ্গে সঙ্গেই ইমরান স্ত্রীর কথা শুনে বললেন, ‘তা কি করে?

এবার স্ত্রী বললো- একজন সুন্দরী স্ত্রী পেয়ে তুমি অত্যন্ত শোকর-গুজার আছ। আর আমি তোমার মতো কুৎসিত স্বামীকে নিয়ে ধৈর্য ধরেছি। আর আল্লাহ তাআলা তো শোকর-গুজার ও সবরকারীদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন।

হ্যাঁ, তাইতো; তাবেঈ ইমরান বিন হাত্বান-এর স্ত্রী দুইটি গুরুত্বপূর্ণ আমলের বিনিময়ের কথাই বলেছেন। যে আমল দুইটির বিনিময় শুধুই জান্নাত। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা ঘোষণা করেছেন। তাহলো-

সবরকারীর জন্য জান্নাত

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলবেন, হে বনি আদম! যদি তুমি ধৈর্যধারণ কোরো ও প্রথম দুঃখের সময় অধৈর্য না হয়ে তাতে সাওয়াবের আশা করো; তাহলে আমি তোমার জন্য জান্নাত ছাড়া কোনো প্রতিদানে সন্তুষ্ট হবো না।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

শোকরকারীর জন্য জান্নাত

আল্লাহ তাআলা বান্দাকে শোকর-গুজার করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শোকর-গুজার করলে পুরস্কার বাড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। আবার অকৃতজ্ঞ হতে নিষেধ করেছেন। যারা অকৃতজ্ঞ হবে তাদের জন্য রয়েছে শান্তি। আল্লাহ তাআলা বলেছেন-

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

‘যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর, তবে তোমাদেরকে আরও (পুরস্কার) বাড়িয়ে দেব আর যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৭)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, তাবেঈ হজরত ইমরান বিন হাত্বান-এর স্ত্রীর মতো শোকর-গুজার ও সবরকারী হওয়া। তিনি তো কোরআন-সুন্নাহর ঘোষণায় পেয়েছেন জান্নাতের অঙ্গীকার। তাই শুকরিয়া জ্ঞাপনে হজরত সোলাইমান আলাইহিস সালামের মতো এভাবে দোয়া করা-

رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ

উচ্চারণ : রাব্বি আউযিনি আন আশকুরা নিমাতিকাল্লাতি আনআমতা আলাইয়্যা ওয়া আলা ওয়ালিদাইয়্যা ওয়া আন আমালা সালিহাং তারদাহু ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ইবাদিকাস সালিহিন।’ (সুরা নামল : আয়াত ১৯)

অর্থ : হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে তোমার দেওয়া সেসব নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সামর্থ দাও। যেসব নেয়ামত তুমি আমাকে ও আমার বাবা-মাকে দান করেছ। আর আমি যাতে তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর।’

মনে রাখা জরুরি

দুনিয়ার জীবনের  প্রতিটি মুহূর্ত যত কঠিনই হোক না কেন, তাতে ধৈর্যধারণ করা যেমন জরুরি। আবার প্রতিটি বিষয়ে শোকর-গুজার করা আরও বেশি জরুরি। কেননা কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা আরও ঘোষণা করেন-

‘কসম যুগের (সময়ের); নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং ধৈর্যধারণের উপদেশ দেয়।’ (সুরা আসর : আয়াত ১-৩)

কোরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট ঘোষণাতেই বিখ্যাত তাবেঈ হজরত ইমরান বিন হাত্বান-এর স্ত্রী নিজেদের জন্য জান্নাতের আশা প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার সব সবরকারী ও শোকরকারীকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

আরও পড়ুন