পরীক্ষা ভালো হওয়ার আমল
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য বা পরীক্ষা ভালো হওয়ার জন্য যথাযথ পড়াশোনা ও সুন্দর প্রস্তুতির বিকল্প নেই। যার প্রস্তুতি যত ভালো হবে; তার পরীক্ষা ও ফলাফল তত ভালো হবে। এ জন্য শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকে ভালোভাবে পড়াশোনা ও প্রস্তুতি নেওয়া। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে বিশেষ কিছু প্রস্তুতি খুবই জরুরি। কঠিন ও দুঃশ্চিন্তামুক্ত পরীক্ষার জন্য করণীয় ও আমল কী?
গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনায় জেগে না থেকে সন্ধ্যার স্বাভাবিক সময়ে ঘুমিয়ে পড়া। পরীক্ষার আগ মুহূর্তে ভোর রাতে এবং সকালে পড়াগুলোতে একটু নজর দেওয়া। তাতে পরীক্ষার প্রস্তুতি সুন্দর হয়। কারণ ভোর রাত কিংবা সকালে পড়াশোনা এবং প্রস্তুতি সবচেয়ে বেশি বরকতময় ও কার্যকরী। এ সময়টিতে মানুষের স্মৃতিশক্তি সতেজ থাকে।
পরীক্ষা ভালো করার আমল
পরীক্ষার কঠিন মুহূর্ত ও পেরেশানি থেকে মুক্ত থাকতে আল্লাহর কাছে দুইটি আবেদন করা যেতে পারে। যে আমলে মানুষের পরীক্ষার পেরেশানি ও দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে পারবে। তাহলো-
১. আল্লাহর ওপর ভরসা করা
পরীক্ষা ভালো হওয়ার জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করা। যথাযথ তাওয়াক্কুল বা ভরসা থাকলে আল্লাহ তাআলা পরীক্ষার পেরেশানি ও দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন। পরীক্ষার্থী সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিতে সামর্থ্য হবে। কারণ মহান আল্লাহ নিজেই বলেছেন-
وَ مَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰهِ فَهُوَ حَسۡبُهٗ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بَالِغُ اَمۡرِهٖ
‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই।’ (সুরা ত্বালাক : আয়াত ৩০)
সুতরাং প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর উচিত, সুন্দর ও উত্তম পরীক্ষার জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করা। কোরআনের নির্দেশনার উপর আমল করা।
২. পরীক্ষা সহজে দোয়া
আল্লাহর কাছে হিসাব দেওয়ার মহাপরীক্ষা থেকে আশ্রয়ের জন্য নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে যে দোয়ায় সাহায্য প্রার্থনা করেছেন; প্রত্যেক পরীক্ষার্থী সে দোয়াটি পড়ে পরীক্ষার কঠিন মুহূর্ত ও দুঃশ্চিন্তা থেকে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা-
اللَّهُمَّ حَاسِبْنِي حِسَابًا يَسِيرًا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবাইঁ ইয়াসিরা।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমার হিসাব (পরীক্ষা) সহজ করে দেন।’
যদিও এটি দুনিয়ার পরীক্ষায় সহজে পার হওয়ার জন্য সরাসরি কোনো দোয়া নয়। তবে পরীক্ষা সহজের নিয়তে এ দোয়ার আমল করা যেতে পারে। যাতে আল্লাহ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা সহজ করে দেন।
পরীক্ষার্থীর করণীয়
> পরীক্ষার আগে অতিরিক্ত চিন্তা না করা।
> নির্ঘুম রাত কাটানো থেকে বিরত থাকা।
> অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়া।
> আরামদায়ক পোশাক পরা।
> পরীক্ষার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ পরীক্ষার সরঞ্জামগুলো গুছিয়ে নেওয়া।
> পরীক্ষার কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে প্রবেশ করা এবং ফ্রেশ (পরিচ্ছন্ন) হওয়া।
> ওজু করে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করা।
৩. পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশের পর (সম্ভব হলে)-
> দরূদে ইবরাহিম পড়া।
> স্মরণ শক্তির দোয়া পড়া-
رَبِّىْ زِدْنِىْ عِلْمَا
উচ্চারণ : রাব্বি ঝিদনি ইলমা (৩ বার)
৪. প্রশ্নপত্র ও খাতা হাতে পেয়ে-
‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাঝিম ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে খুব খেয়াল করে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, প্রশ্নপত্রের সেট কোডসহ যাবতীয় তথ্য সুন্দর করে (বৃত্ত ভরাট) পূরণ করা। এরপর পরীক্ষা শুরু করা।
উল্লেখ্য, পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পরীক্ষার্থীরা মনোযোগের সঙ্গে পড়াশোনা জরুরি। বছরজুড়েই চলতে থাকে পরীক্ষা। সুতরাং যারাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে; তাদের জন্য পড়াশোনার মাধ্যমে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা ছাড়া ভালো ফলাফল করা সম্ভব নয়। আবার অনেকেই পরীক্ষা ভালোভাবে দেওয়ার জন্য এবং ভালো ফলাফলের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি দোয়া ও আমল করার চিন্তা/চেষ্টা করেন। তাদের জন্য এ আমল ও করণীয়গুলো খুবই কার্যকরী।
আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সুন্দর প্রস্তুতি নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে ঠাণ্ডা মাথায় দুঃশ্চিন্তামুক্তভাবে পরীক্ষা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম