উপদেশ দিয়ে নিজে না করার পরিণতি কী?
অন্যকে ভালো কাজের আদেশ-উপদেশ দেওয়া কল্যাণের কাজ। কিন্তু ভালো কাজ না করে অন্যকে দেওয়ার বিধান কী? এ সম্পর্কে কোরআন সুন্নায় কি সুস্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশ এসেছে? দিকনির্দেশনা থাকলে তা কেমন?
কোরআনুল কারিমেও মহান আল্লাহ তার মুমিন বান্দাকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন রাখেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَ تَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ
‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যা কর না, তা বল কেন?’ (সুরা সফ : আয়াত ২)
হ্যাঁ, কাউকে ভালো কাজের আদেশ দিলে বা উপদেশ দিলে আগে নিজে যথাযথভাবে পালন করতে হয়। এটিই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ও সুন্নাত। তাই আগে নিজেকে এ দিকনির্দেশনা মানতে হবে। তা জরুরিও বটে। নতুবা এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। হাদিসে পাকের একটি বর্ণনা থেকে প্রমাণিত-
হজরত উসামা ইবনে জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন এক ব্যক্তকে আনা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন আগুনে পুড়ে তার নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে আসবে। এ সময়টিতে সে (এ শরীর নিয়েই) ঘুরতে থাকবে; যেমন গাঁধা তার চাকা নিয়ে তার চারপাশে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামিরা তার কাছে একত্রিত হয়ে তাকে বলবে- হে অমুক ব্যক্তি! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমিতো আমাদের ভালো কাজের আদেশ করতে আর অন্যায় কাজে নিষেধ করতে?
(এবার) সে বলবে, আমি তোমাদেরকে ভালো কাজের আদেশ করতাম বটে; কিন্তু আমি তা কখনো করতাম না। আর আমি তোমাদের অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করতাম অথচ আমিই তা করতাম।’ (বুখিারি, মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানসহ সব মানুষের উচিত, ভালো কাজের আদেশ কিংবা উপদেশ দেওয়ার আগে নিজেকে সেই কাজটি বাস্তব জীবনে আমল করা। কল্যাণের পথে চলা। তারপর অন্যকে ভালো এবং কল্যাণের পথে চলার জন্য আদেশ কিংবা উপদেশ দেওয়া আবশ্যক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন-সুন্নাহর দিকর্দেশনার উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। নিজেকে ভালো কাজে পরিচারিত করার পর অন্যকে ভালো কাজের উপদেশ দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস